প্রতীকী ছবি।
হঠাৎই এসএমএস পেলেন এক যুবক। একটি কলসেন্টার থেকে পাঠানো মেসেজ বলছে, এক বন্ধু তাঁর অ্যাকাউন্টে এক হাজার টাকা জমা করেছেন। টাকা পাওয়ার জন্য একটি ‘লিঙ্ক’ও দেওয়া হয়েছে। শুধু ওই যুবক নন, এমন মেসেজ পেয়েছেন আরও অনেকেই। পুলিশ সূত্রের দাবি, এ সাইবার প্রতারণার এক নয়া ছক! ওই লিঙ্কে ‘ক্লিক’ করলেই সেই ব্যক্তির যাবতীয় তথ্য হাতিয়ে নিতে পারবে জালিয়াতেরা। এ নিয়ে লালবাজারের সাইবার থানায় কয়েকটি অভিযোগ দায়ের হয়েছে। শুরু হয়েছে তদন্তও।
পুলিশ সূত্রের দাবি, লটারির টোপের বদলে এ এক নতুন ছক বেরিয়েছে। এর পিছনেও রয়েছে ভিনদেশি জালিয়াতেরা। তবে অনেকে এ-ও বলছেন, ইন্টারনেটে সুরক্ষা-বিধি না মানলেই এই ফাঁদে পড়তে পারেন নাগরিকেরা।
আজ, মঙ্গলবার ‘ওয়ার্ল্ড সেফার ইন্টারনেট ডে’। এ বছরের স্লোগান, ‘টুগেদার ফর আ বেটার ইন্টারনেট’। সেই উপলক্ষেই ফের জোরালো হয়ে উঠেছে ইন্টারনেট ব্যবহারের সুরক্ষা-বিধি। তাই এই ধরনের অপরাধ নিয়ে সচেতনতাও প্রয়োজন বলে মনে করছেন অনেকে।
এই উপলক্ষে সুরক্ষা-বিধি নিয়ে প্রচারে নেমেছে তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থা ‘গুগল’ও। বহু ক্ষেত্রেই দেখা যায়, কমবয়সিরাই ইন্টারনেটে বেশি বিপদে পড়ছে। গুগল-ইন্ডিয়ার ডিরেক্টর (ট্রাস্ট অ্যান্ড সেফটি) সুনীতা মোহান্তি বলছেন, ‘‘কমবয়সি সদস্যদের ইন্টারনেট বা স্মার্টফোন ব্যবহার করতে দেওয়ার আগে সুরক্ষা-বিধি সম্পর্কে শিক্ষা দেওয়া প্রয়োজন।’’ বহু ক্ষেত্রেই দেখা যায়, বিভিন্ন অজানা ওয়েবসাইট বা লিঙ্কে ‘ক্লিক’ করেন মানুষজন। সেখানেই লুকিয়ে থাকে বিপদ। তার ফলে ওই লিঙ্ক থেকে কোনও ভাইরাস বা ‘ম্যালওয়্যার’ ফোনে বা কম্পিউটারে লুকিয়ে ঘাঁটি গাড়ে এবং তথ্য চুরি করে জালিয়াতদের পাঠাতে থাকে। নতুন ধরনের যে মেসেজ ছড়াচ্ছে, তাতেও একই কায়দা ব্যবহার করা হচ্ছে বলে খবর। এক পুলিশকর্তার কথায়, ‘‘ইদানীং বিভিন্ন পর্যটন সংক্রান্ত সাইটে ওয়ালেটে টাকা দেওয়া বা পয়েন্ট জমা করার রীতি হয়েছে। এখানেও তেমন টোপ দেওয়া হচ্ছে।’’
সাইবার বিশেষজ্ঞেরা বলছেন, সোশ্যাল মিডিয়াকে কেন্দ্র করেই ইদানীং বিপদ সব থেকে বাড়ছে। তার পরেই রয়েছে বিভিন্ন মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন বা ‘অ্যাপ’। বিভিন্ন অ্যাপ ব্যবহারের সময়ে অজান্তেই অ্যাপসংস্থাকে নিজেদের ফোনের ছবি, ফোন নম্বরের তথ্য দিয়ে দেন অনেকে। সেই অ্যাপের আড়ালে জালিয়াত লুকিয়ে থাকলে সে সব তথ্য নিয়ে নিতে পারে সহজেই। রাজ্য সাইবার সংক্রান্ত মামলার বিশেষ কৌঁসুলি বিভাস চট্টোপাধ্যায় বলছেন, সুরক্ষা-বিধি না মানলে মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন এবং সোশ্যাল মিডিয়াই এখন সবচেয়ে বড় বিপদ হয়ে উঠছে। বহু ক্ষেত্রে ছোট ছেলেমেয়েরা এর শিকার হচ্ছে। গুগল ইন্ডিয়ার কর্ত্রী সুনীতারও বক্তব্য, অ্যাপ ব্যবহারের ক্ষেত্রে সচেতন হওয়া উচিত। ই-মেলের পাসওয়ার্ড দেওয়া এবং সফটওয়্যার আপডেট নিয়েও সতর্ক করেছেন সুনীতা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy