Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

বরাদ্দ কম, অনিশ্চিত কেরোসিন

যদিও ওই অভিযোগ উড়িয়ে রাজ্যের খাদ্য মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের দাবি, এর দায় কেন্দ্রেরই। তারাই রাজ্যের মোট কেরোসিন বরাদ্দ কমিয়ে দেওয়ায় রাজ্যও গ্রাহকদের বরাদ্দ কমাতে বাধ্য হয়েছে। ফলে বরাদ্দ কমেছে ডিলারদেরও।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ২১ জুলাই ২০১৭ ০১:৫৬
Share: Save:

অগস্ট থেকে কলকাতায় রেশন কার্ডের ভিত্তিতে কেরোসিন তেল পাওয়া নিয়ে সংশয়ের সৃষ্টি হয়েছে। কেরোসিন-এর ডিলারদের অভিযোগ, রাজ্যের সাম্প্রতিক একটি নির্দেশের জেরে অগস্ট থেকে তাঁদের বরাদ্দ কেরোসিনের পরিমাণ অনেকটাই কমছে। ফলে বিপুল আয় কমায় তাঁদের ব্যবসা সঙ্কটের মুখে। তারই প্রতিবাদে কেরোসিন কেনা এবং বিক্রি বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তাঁরা।

যদিও ওই অভিযোগ উড়িয়ে রাজ্যের খাদ্য মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের দাবি, এর দায় কেন্দ্রেরই। তারাই রাজ্যের মোট কেরোসিন বরাদ্দ কমিয়ে দেওয়ায় রাজ্যও গ্রাহকদের বরাদ্দ কমাতে বাধ্য হয়েছে। ফলে বরাদ্দ কমেছে ডিলারদেরও।

রেশন কার্ডের ভিত্তিতে গণবণ্টন ব্যবস্থায় এখন ভর্তুকির কেরোসিন তেল মেলে। ক্যালকাটা কেরোসিন অয়েল ডিলার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক বিমল কুমার দে বৃহস্পতিবার জানান, গত ১১ জুলাই রাজ্যের খাদ্য দফতরের নয়া নির্দেশের ফলে ডিলারদের বরাদ্দ প্রচুর কমবে। যেমন এখন যাঁদের বরাদ্দ মাসে ২ হাজার-৪ হাজার লিটার, অগস্ট থেকে তা কমে হবে ৩০০-৪০০ লিটার। আবার কিছু ডিলার এখন মাসে ১২ হাজার-১৫ হাজার লিটার তেল পান। তাঁরা তখন পাবেন ৪ হাজার-৫ হাজার লিটার। সকলেই এখন ১০০০ লিটার তেল বিক্রি করে কমিশন মিলিয়ে পান ১০৪৮.৩০ টাকা। তা বাড়ছে না। ফলে পরিমাণ কমায় তাঁদের আয় কমবে অনেকটাই। একই সঙ্গে তিনি জানান, গ্রাহকদের ক্ষেত্রে ডিজিটাল রেশন কার্ড পিছু ৬০০ এমএল ও কাগজের রেশন কার্ড পিছু মাত্র ১৫০ এমএল কেরোসিন বরাদ্দ হবে আগামী মাসে।

তাঁর অভিযোগ, ট্রেড বা ফায়ার লাইসেন্স সহ যে সব প্রশাসনিক অনুমোদনের খরচ রয়েছে, এ বছরে তার পুরোটাই তাঁরা ইতিমধ্যেই মিটিয়ে দিয়েছেন। এ ছাড়া কর্মী সহ কেরোসিন তেলের দোকান চালানোর খরচও নির্দিষ্ট। ফলে সব মিলিয়ে খরচ একই থাকলেও আয় কমে যাওয়ায় ব্যবসাই সঙ্কটের মুখে। এ নিয়ে রাজ্যের কাছে আর্জি জানালেও এখনও কোনও সুরাহা হয়নি। তিনি বলেন, ‘‘তাই অগস্ট মাস থেকে আমরা বরাদ্দ কেরোসিন নেব না। বিক্রিও করব না। এ নিয়ে আদালতেরও দ্বারস্থ হব আমরা।’’

জ্যোতিপ্রিয়বাবু অবশ্য তাঁদের বিরুদ্ধে ডিলারদের ওই অভিযোগ মানতে নারাজ। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে এ নিয়ে চিঠি দেওয়ার কথা জানিয়ে তিনি এ দিন বলেন, ‘‘তেলের ক্ষেত্রে রাজ্যের কোনও নিয়ন্ত্রণ নেই। তেলের বরাদ্দ ঠিক করে কেন্দ্র। ওরা অগণতান্ত্রিক ভাবে বরাদ্দ কমাচ্ছে। আগে কেন্দ্র গোটা রাজ্যের জন্য ৮০৩৬২০০০ লিটার বরাদ্দ করলেও পরে তা কমিয়ে ৫৮০০০০০০ লিটার করে। এ নিয়ে পরে মামলায় স্থগিতাদেশের জন্য বরাদ্দ আর কমাতে পারেনি।
এ নিয়ে আমার দফতরের পূর্বতন সচিব অনিল বর্মাও দিল্লিতে গিয়ে আপত্তি জানিয়েছিলেন। আমরা যা পাই, রাজ্যের বিভিন্ন এলাকায় প্রয়োজনের ভিত্তিতে তা বণ্টন করি। আমরা ডিলারদের প্রতি সহানুভূতিশীল। ব্যবসা বন্ধ না করে ওরা আলোচনায় বসুন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE