Advertisement
১৬ এপ্রিল ২০২৪

পুর সাফাইয়ের খরচে কোপ, নরক বরাহনগর

প্রায় পাঁচ দিন ধরে এমনই ‘জঞ্জাল-যন্ত্রণা’-য় ভুগছে বরাহনগর। স্থানীয়দের অভিযোগ, রাস্তার ধারে জঞ্জালের স্তূপ জমে থাকলেও পুরসভার তরফে সেগুলি তোলা হচ্ছে না।

দুর্বিসহ: রাস্তার পাশে আবর্জনার স্তূপ। রবিবার, বরাহনগরে। ছবি: সজল চট্টোপাধ্যায়

দুর্বিসহ: রাস্তার পাশে আবর্জনার স্তূপ। রবিবার, বরাহনগরে। ছবি: সজল চট্টোপাধ্যায়

শান্তনু ঘোষ
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৯ ডিসেম্বর ২০১৯ ০২:০৫
Share: Save:

রাস্তার উপরে ডাঁই হয়ে জমে রয়েছে জঞ্জাল-আবর্জনা। কুকুর সেই আবর্জনা টেনে নিয়ে এসে ফেলছে রাস্তার মাঝে। দুর্গন্ধে অতিষ্ট হয়ে উঠছেন স্থানীয়েরা!

প্রায় পাঁচ দিন ধরে এমনই ‘জঞ্জাল-যন্ত্রণা’-য় ভুগছে বরাহনগর। স্থানীয়দের অভিযোগ, রাস্তার ধারে জঞ্জালের স্তূপ জমে থাকলেও পুরসভার তরফে সেগুলি তোলা হচ্ছে না। কবে তোলা হবে তারও সদুত্তর মিলছে না। তবে বরাহনগরের চেয়ারপার্সন অপর্না মৌলিক বলেন, ‘‘একটা সমস্যা হয়েছিল। আলোচনা করে সমাধান করছি।’’

পুরসভা সূত্রের খবর, বরাহনগরের ৩৪টি ওয়ার্ডেই প্রতিদিন বাড়ি থেকে জঞ্জাল সংগ্রহ করে তা এলাকার বিভিন্ন প্রান্তে আবর্জনা ফেলার নির্দিষ্ট জায়গায় নিয়ে গিয়ে জমা করেন সাফাইকর্মীরা। সেখান থেকে ট্র্যাক্টরে ও ছোট মালবাহী লরিতে ওই আবর্জনা প্রমোদ নগর ভাগাড়ে নিয়ে যাওয়া হয়। পুরসভার নিজস্ব সাফাইকর্মী ছাড়া এই কাজের জন্য বেশ কয়েক বছর ধরে ছয়টি বেসরকারি সংস্থাকে নিয়োগ করেছিলেন পুরকর্তৃপক্ষ। পুরসভার নিজস্ব ট্র্যাক্টর, কম্প্যাক্টর ছাড়াও ওই সব বেসরকারি সংস্থার প্রায় ১৫টি ছোট লরি প্রতিদিন আবর্জনা তুলে প্রমোদনগরে নিয়ে যেত।

পুরসভা সূত্রের খবর, খরচ কমাতে গত ৩ ডিসেম্বর থেকে ওই ছয়টি সংস্থার সঙ্গে চুক্তি বাতিল করে দেওয়া হয়। এর পরে ছোট লরিগুলি পাশাপাশি নিজেদের সাফাইকর্মীদেরও তুলে নিয়েছে ওই সংস্থা। আর তাতেই গত পাঁচ দিন ধরে জঞ্জাল-যন্ত্রণায় ভুগছেন বাসিন্দারা। এ কে মুখার্জি রোড, গোপাললাল ঠাকুর রোড, বি টি রোড, দেশবন্ধু রোড, বিদ্যায়তন সরণি, বি কে মৈত্র রোড-সহ বরাহনগরের বিভিন্ন রাস্তার ধারে জমে রয়েছে আবর্জনার স্তূপ।

পুরকর্তাদের একাংশ জানাচ্ছেন, প্রতিদিন ভোরে বাড়ির জঞ্জাল সংগ্রহ করা থেকে প্রমোদনগর ধাপায় ফেলতে প্রায় বিকেল ৪টে বেজে যেত কর্মীদের। বেসরকারি ওই সংস্থা তাদের প্রতিটি গাড়িতে চার জন করে কর্মী দিত। চুক্তি বাতিলের পরে বেসরকারি সংস্থার ৬০ জন কর্মীও কমে গিয়েছে। ফলে সব আবর্জনা প্রতিদিন তোলা সম্ভব হচ্ছে না। পুজোর আগেই ওই ছয়টি সংস্থার সঙ্গে চুক্তি বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল পুর কর্তৃপক্ষ। কিন্তু পুজোর সময়ে এলাকায় আবর্জনা জমে থাকলে সমস্যা বাড়বে বলে আপত্তি জানান জন প্রতিনিধিরা। তখনকার মতো বন্ধ থাকলেও গত ২ ডিসেম্বর চুক্তি বাতিলের নির্দেশিকা ঘোষণা করেন বরাহনগর পুরসভার কার্যনির্বাহী আধিকারিক।

বরাহনগরের চেয়ারম্যান পারিষদ (জঞ্জাল অপসারণ) দিলীপনারায়ণ বসু বলেন, ‘‘কার্যনির্বাহী আধিকারিক সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, তা নিয়ে মন্তব্য করব না। কিন্তু কী উপায়ে জঞ্জাল সাফাই হবে তার পরিকল্পনা বা পদ্ধতি সম্পর্কে উনি কিছু বলেননি। সেটা আমরা আলোচনা করে ঠিক করব।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Baranagar Garbage
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE