Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

প্রশ্ন এ বার পুরসভার জলের নমুনা সংগ্রহের পদ্ধতি নিয়ে

পুর আধিকারিকদের একাংশের মতে, আন্ত্রিকের মতো রোগের ক্ষেত্রে জলের নমুনা সংগ্রহ বিশেষজ্ঞদের কাজ। পুর স্বাস্থ্য দফতরের সঙ্গে জল দফতরের আধিকারিকেরাও যৌথ ভাবে জলের নমুনা সংগ্রহের কাজ করছেন।

 —প্রতীকী চিত্র।

—প্রতীকী চিত্র।

দেবাশিস ঘড়াই
শেষ আপডেট: ২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০২:০৬
Share: Save:

আন্ত্রিকে আক্রান্তদের মলের নমুনা যে ভাবে সংগ্রহ করা হয়েছিল, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিল নাইসেড (ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব কলেরা অ্যান্ড এন্টেরিক ডি়জিজেস)। মল সংগ্রহ ও সংরক্ষণের পদ্ধতিতেই গলদ রয়েছে বলে অভিযোগ করেছিল ওই বিশেষজ্ঞ সংস্থা। একই ভাবে এ বার জলের নমুনা সংগ্রহের পদ্ধতি নিয়েও প্রশ্ন উঠে গেল। কলকাতা পুরসভা যে পদ্ধতিতে জলের নমুনা সংগ্রহ করছে, তা কতটা ঠিক, সে প্রশ্ন উঠেছে পুর প্রশাসনের অন্দরেই।

পুর আধিকারিকদের একাংশের মতে, আন্ত্রিকের মতো রোগের ক্ষেত্রে জলের নমুনা সংগ্রহ বিশেষজ্ঞদের কাজ। পুর স্বাস্থ্য দফতরের সঙ্গে জল দফতরের আধিকারিকেরাও যৌথ ভাবে জলের নমুনা সংগ্রহের কাজ করছেন। পরিস্থিতির ‘চাপে’ পড়ে জল সরবরাহ দফতরের ইঞ্জিনিয়ারেরা নমুনা সংগ্রহের কাজ করছেন বটে, কিন্তু তা সংগ্রহ করে পরীক্ষাগারে পাঠানো পর্যন্ত সামগ্রিক প্রক্রিয়ার জন্য যে প্রশিক্ষণের দরকার, তা তাঁদের নেই। ফলে জলের নমুনা সংগ্রহে গলদ থাকলে তার পরীক্ষার ফলাফলেও ‘ভুল’ বেরোতে বাধ্য। এই দায়িত্ব বিশেষজ্ঞ কোনও সংস্থাকে দেওয়া হবে কি না, তা নিয়েও প্রাথমিক ভাবে আলোচনা শুরু হয়েছে বলে পুরসভা সূত্রের খবর। স্কুল অব ট্রপিক্যাল মেডিসিনে জলের নমুনা পরীক্ষা করতে পাঠানো হয়েছিল। এখন তাদেরই জলের নমুনা সংগ্রহ করতে বলা হবে কি না, তা নিয়ে ভাবনাচিন্তা চলছে বলে পুরসভা সূত্রের খবর।

এক পুরকর্তার কথায়, ‘‘জলের নমুনা সংগ্রহের জন্য বিশেষ প্রশিক্ষণ দরকার। যেখান থেকে জলের নমুনা নেওয়া হচ্ছে, সেই বিশেষ জায়গাটি ‘স্টেরিলাইজ’ করা প্রয়োজন। তার পরে তা পরীক্ষাগারে পাঠানো পর্যন্ত নির্দিষ্ট প্রক্রিয়া রয়েছে। সেটা মেনে না চললে পরীক্ষাগারে পাঠানোর আগেই জলের নমুনায় সংক্রমণ হতে পারে। সে ক্ষেত্রে ফলাফলেও তার প্রভাব পড়বে।’’ ওই কর্তার আরও মত, ঠিক পদ্ধতিতে জলের নমুনা সংগ্রহের পরে যদি তাতে কোনও সমস্যা ধরা পড়ে, তা হলে সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে হবে। কিন্তু নমুনা সংগ্রহের পদ্ধতি নির্ভুল হওয়া প্রয়োজন।

পুর আধিকারিকদের একাংশের ব্যাখ্যা, প্রথম দিকে আন্ত্রিক নিয়ে গা-ছাড়া মনোভাব দেখালেও এখন পরিস্থিতি ভিন্ন। একাধিক পরীক্ষায় নিজেদের সরবরাহ করা জলে সংক্রমণ পরিষ্কার হয়ে যাওয়ার পরেই তৎপর হয়ে উঠেছে পুরসভা। কিন্তু সংগৃহীত জলের নমুনা সংগ্রহের পদ্ধতিতে কোনও গলদ থাকছে কি না, তা বুঝতে পারছেন না পুর ইঞ্জিনিয়ারদের একাংশ। এক ইঞ্জিনিয়ারের কথায়, ‘‘এমনিতে আমরা জলে ক্লোরিনের মাত্রা পরীক্ষা করে থাকি। কিন্তু জলের নমুনা সংগ্রহ আমাদের কাজ নয়। এখন এই বিশেষ পরিস্থিতিতে আমাদের তা করতে হচ্ছে। কিন্তু এ ব্যাপারে বিশেষ প্রশিক্ষণের দরকার।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

water sample test KMC Cholera Diarrhea
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE