Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪
Kolkata News

সন্তানে আপত্তি স্বামীর, তৃতীয়বার অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ায় কি খুন হলেন পূজা!

পূজাকে কেন খুন হতে হল, তা নিয়ে রহস্য ক্রমশ ঘনীভূত হচ্ছে। তদন্তকারী অফিসাররা জানিয়েছেন, দীপককে ধরতে পারলেই অনেক তথ্য বেরিয়ে আসবে। তবে এর মধ্যেই একটি তথ্য খুনের কারণ হিসেবে বেশ জোরালো হতে শুরু করেছে।

পূজা জৈন। —নিজস্ব চিত্র।

পূজা জৈন। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ০৪ অগস্ট ২০১৮ ১৩:২৭
Share: Save:

অন্য কারও সাহায্য নিয়ে পূজাকে প্রথমে গলা টিপে, তারপর মাথায় ভারী কিছু দিয়ে আঘাত করে খুন করা হয়েছে। প্রাথমিক তদন্তের পর এমনটাই মনে করছে পুলিশ।শনিবার ঘটনাস্থলে পৌঁছন ফরেনসিক বিভাগের অফিসাররা। ঘর থেকে নমুনা সংগ্রহ করেন তাঁরা। শুক্রবার ফুলবাগানে বাপেরবাড়ি থেকে অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধূ পূজা জৈনের দেহ উদ্ধার হয়। খাটের তলা থেকে চাদর মোড়ানো পূজার দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। খুনের অভিযোগ উঠেছে তাঁরই স্বামী দীপক জৈনের বিরুদ্ধে। ঘটনার পর থেকে নিখোঁজ তিনি।

পূজাকে কেন খুন হতে হল, তা নিয়ে রহস্য ক্রমশ ঘনীভূত হচ্ছে। তদন্তকারী অফিসাররা জানিয়েছেন, দীপককে ধরতে পারলেই অনেক তথ্য বেরিয়ে আসবে। তবে এর মধ্যেই একটি তথ্য খুনের কারণ হিসেবে বেশ জোরালো হতে শুরু করেছে। পূজার বোনের অভিযোগ, এর আগে দু’বার তাঁর দিদি অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েছিলেন। খাবারের সঙ্গে কিছু মিশিয়ে গর্ভপাত করানো হয়। তৃতীয়বার অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়াতেই ফের আপত্তি তোলেন জামাইবাবু। এ নিয়ে ঝামেলাও হত দু’জনের মধ্যে।! শুধু কি এই কারণেই পূজাকে খুন হতে হল, নাকি এর পিছনে গভীর কোনও ষড়যন্ত্র রয়েছে! ভাবাচ্ছে তদন্তকারীদের।

পূজার পরিবারের তরফে জানানো হয়, এ নিয়ে তৃতীয়বারও অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েছিলেন পূজা। আট মাসের গর্ভবতী ছিলেন তিনি। এক সপ্তাহের মধ্যেই ডেলিভারি হওয়ার কথা ছিল। সে কারণেই বাপের বাড়িতে উঠেছিলেন। অন্যান্য বারের মতো এবারও আপত্তি জানিয়েছিলেন তাঁর স্বামী দীপক জৈন। কিন্তু এবার আর স্বামীর কথা শুনতে রাজি হননি পূজা। এ নিয়ে ঝগড়া-অশান্তি কম হয়নি দু’জনের মধ্যে। স্বামীকে না জানিয়েই বাপের বাড়িতে চলে গিয়েছিলেন পূজা।

পূজার স্বামী দীপক জৈন।

আরও পড়ুন: অন্তঃসত্ত্বার রক্তাক্ত দেহ

কেন সন্তান চাইছিলেন না দীপক, বুঝে উঠতে পারছিলেন না পূজা। ক্রমে মানসিকভাবে ভেঙে পড়ছিলেন তিনি। বাপের বাড়ি আসার পরও ফোনে দীপকের মধ্যে প্রায়ই কথা কাটাকাটি হত। পূজার পরিবারের আশঙ্কা ছিল, তাঁকে শ্বশুর বাড়িতে পাঠানো হলে এবারও কোনও কারণে গর্ভপাত করানোর চেষ্টা করতে পারেন দীপক। তাই তাঁকে শ্বশুর বাড়িতে পাঠানো হয়নি। এমনকি,দীপককে ফুলবাগানেও আসতে দিচ্ছিলেন না পূজার বাবা। আপত্তি ছিল পূজার বোনেরও। তবে এর জন্য পূজাকে খুন হতে হবে, স্বপ্নেও ভাবতে পারেননি বলে জানিয়েছে পূজার পরিবার।

তাঁরা আরও জানান, এই ঘটনার কয়েকদিন আগে থেকেই পূজার সঙ্গে ভাল ব্যবহার করছিলেন দীপক। পূজাও ভেবেছিলেন হয়তো নিজের ভুল বুঝতে পেরেছে দীপক। তাই আর দেরি না করে ফুলবাগানে তাঁকে আসতে বলেন পূজা। এদিকে শারীরিক অসুস্থতার কারণে পূজার বাবাকে হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়। শুক্রবার একাই ছিলেন পূজা। অভিযোগ, সেই সুযোগে অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে খুন করেন দীপক। পূজার বোন বলেন,“দিদিকে এ ভাবে খুন করা হবে ভাবতেও পারিনি। আসলে দু’টি প্রাণ কে একসঙ্গে মেরে ফেললেন দীপক। আমরা দীপকের ফাঁসি চাইছি।”

আরও পড়ুন: এটিএম কাণ্ডে গ্রেফতার দুই রোমানীয়কে নিয়ে আসা হচ্ছে কলকাতায়

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE