Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪
e mall

ই-মলের সামনে থেকে অপহরণ, নাকা তল্লাশিতে ধরা পড়ল পুলিশ-বিএসএফের চার কর্মী!

গত বৃহস্পতিবার বিকেলে একটি বোলেরো গাড়ি নিয়ে ই-মলের কাছে পৌঁছয় অপহরণকারীরা। তার পরই অপহরণ করা হয় সৌমেনকে।

বৃহস্পতিবার ভর সন্ধ্যায় মধ্য কলকাতায় ই-মলের সামনে ঘটে অপহরণ। অলঙ্করণ: শৌভিক দেবনাথ।

বৃহস্পতিবার ভর সন্ধ্যায় মধ্য কলকাতায় ই-মলের সামনে ঘটে অপহরণ। অলঙ্করণ: শৌভিক দেবনাথ।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১১ অক্টোবর ২০১৯ ১৭:৩৪
Share: Save:

রাস্তায় বেশ ভিড়। তার মধ্যেই ই-মলের সামনে আচমকাই এক ব্যক্তিকে জোর করে গাড়িতে তুলে নিল ছ’জন। নিমেষেই গায়েব!

বৃহস্পতিবার দুপুরে মধ্য কলকাতার মতো জমজমাট এলাকায় এমন দৃশ্য দেখে হকচকিয়ে গিয়েছিলেন পথচলতি মানুষ। তাঁদেরই এক জন কলকাতা পুলিশের ১০০ ডায়ালে ফোন করে গাড়ির নম্বর-সহ গোটা বিষয়টি জানান।

এর পরেই অপহরণকারীদের খোঁজে শুরু হয় তৎপরতা। ওই এলাকার সিসি ক্যামেরার ফুটেজে গাড়ির নম্বর ধরা পড়ে। তা থেকে জানা যায় গাড়িটির মালিক বীরভূমের বাসিন্দা আলম শেখ। ওই গাড়িটি দ্বিতীয় হুগলি সেতু দিয়ে পার হতেও দেখা যায় সিসি ক্যামেরায়।

আরও পড়ুন: পুজো কার্নিভাল: এই মুহূর্তে কোন কোন রাস্তা বন্ধ দেখে নিন

এই ঘটনায় তদন্তে নামে কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ এবং বৌবাজার থানা। রাতভর কলকাতা এবং বীরভূমে নাকাতল্লাশি চালিয়ে শেষ পর্যন্ত পুলিশ গাড়িটিকে আটক করে। গ্রেফতার করা হয় ৬ অপহরণকারীকে। ধৃতদের মধ্যে তিন পুলিশকর্মী এবং এক জন বিএসএফ অফিসার রয়েছেন! তিন পুলিশকর্মীর মধ্যে দু’জন কলকাতা পুলিশের কমব্যাট ফোর্সের কনস্টেবল— শ্যামল মণ্ডল ও জাকির খান, অন্য জন মহম্মদ হানিফ, রাজ্য সশস্ত্র বাহিনীর সপ্তম ব্যাটালিয়ানের কনস্টেবল। আর এক জন বিএসএফের কনস্টেবল, নাম আমির হোসেন। বাকি দুই ধৃতের মধ্যে অভিজিৎ ঘোষ মালদহের ইংলিশ বাজারের বাসিন্দা এবং মানজারুল হক বীরভূমের লাভপুরের বাসিন্দা।

পুলিশ সূত্রে খবর, খড়দহ থানার সোদপুরের বাসিন্দা সৌমেন বসু নামের এক যুবককে প্রায় এক কোটি টাকা দিয়েছেন বলে জেরায় দাবি করেছে অভিজিৎ ও মানজারুল। সৌমেন তাঁদের পরিচিত কয়েক জনকে সরকারি চাকরি পাইয়ে দেওয়ার নাম করে ওই টাকা নেন। কিন্তু, প্রতিশ্রুতি মতো চাকরি দিতে পারেননি অভিযুক্ত সৌমেন। এক কোটি টাকা ফেরৎ চাইলে, তা দিতেও অস্বীকার করেন তিনি। শেষ পর্যন্ত অপহরণের ছক কষে অভিজিৎ ও মানজারুল। এর পরেই তারা যোগাযোগ করে লাভপুরের বাসিন্দা তাঁদের কয়েক জন বন্ধুর সঙ্গে যাঁরা পুলিশ ও বিএসএফে কর্মরত। ঠিক হয়, অপহরণ করে মুক্তিপণের ৪০ শতাংশ দেওয়া হবে তিন পুলিশকর্মী এবং বিএসএফ কনস্টেবলকে। এর পর পরিকল্পনামাফিক তারা সৌমেনের ওপর নজরদারি চালাতে থাকে। গত বৃহস্পতিবার বিকেলে একটি বোলেরো গাড়ি নিয়ে ই-মলের কাছে পৌঁছয় অপহরণকারীরা। তার পরই অপহরণ করা হয় সৌমেনকে।

আরও পড়ুন: তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে উত্তপ্ত আমডাঙা

বৃহস্পতিবার ভোর রাতে নাকাতল্লাশির সময় অবশেষে বীরভূম থেকে আটক করা হয় বোলেরো গাড়িটি। কলকাতা পুলিশ সূত্রে খবর, ধৃতদের বিরুদ্ধে অপহরণ-সহ একাধিক ধারায় মামলা রুজু হয়েছে। সৌমেনের বিরুদ্ধেও চাকরি পাইয়ে দেওয়ার নামে প্রতারণার অভিযোগ দায়ের হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE