হাজ্জাদ নওয়াজ নামে এক বাংলাদেশি তরুণকে গ্রেফতার করেছে নিউ মার্কেট থানা। প্রতীকী ছবি।
সে চোর বটে। কিন্তু এলেবেলে ফেলনা চোর নয়। এক্কেবারে পাসপোর্ট, ভিসা-সহ বিদেশি চোর!
পুলিশ জানিয়েছে, সোমবার হাজ্জাদ নওয়াজ নামে বাংলাদেশি ওই তরুণকে গ্রেফতার করেছে নিউ মার্কেট থানা। রীতিমতো পাসপোর্ট, ভিসা নিয়েই এ দেশে ঢুকেছিল সে। মূলত নিউ মার্কেটের একটি দোকান থেকে ১৪টি মোবাইল চুরির ঘটনায় পাকড়াও করা হয়েছে তাকে।
পুলিশের দাবি, আইনি পথেই সীমান্ত পেরিয়ে এ দেশে ঢুকত হাজ্জাদ। তার পরে এ শহরে এসে ব্যাঙ্কে বা দোকানে ঢুকে হাপিস করত জিনিসপত্র। তদন্তকারীদের দাবি, নিউ মার্কেট এলাকার একটি ব্যাঙ্ক থেকে সম্প্রতি ইউপিএস চুরি হয়েছিল। সেটিও হাজ্জাদের কীর্তি। সেই ব্যাঙ্কের সিসিটিভি-তে তার মুখও দেখা গিয়েছিল।
গত বছর নিউ মার্কেট এলাকার একটি ব্যাঙ্কের শাখায় রাতের অন্ধকারে ভল্ট ভাঙার চেষ্টা হয়েছিল। সেটিও হাজ্জাদ করেছিল বলে পুলিশের দাবি। সে সময়ে নানা সূত্র ধরে এগিয়েও ওই ঘটনার কিনারা করতে পারেননি গোয়েন্দারা।
সিঁধেল চোরের ঘটনা পুলিশের খাতায় নতুন নয়। বিদেশি অপরাধীও বিরল নয়। কিন্তু এ ভাবে পাসপোর্ট, ভিসা নিয়ে ঘন ঘন এ দেশে এসে অপরাধ করে চম্পট দেওয়ার ঘটনা পুলিশ অফিসারদেরও তাজ্জব করেছে। লালবাজারের একটি সূত্র জানাচ্ছে, বড়দিনের ক’দিন আগে এ দেশে ঢুকেছিল হাজ্জাদ। রাতের অন্ধকারে নিউ মার্কেটের একটি ব্যাঙ্কের শাখায় তালা ভেঙে ঢুকেছিল। কিন্তু তেমন কিছু সুবিধা করতে না পেরে একটি কম্পিউটারের ইউপিএস তুলে নিয়ে পালায়। ফের ২ জানুয়ারি এ দেশে আসে সে। কোন ভিসা নিয়ে এত বার এ দেশে সে যাতায়াত করেছে, সে ব্যাপারে স্পষ্ট কিছু জানাননি তদন্তকারীরা।
কী ভাবে ধরা পড়ল হাজ্জাদ? পুলিশ সূত্র জানাচ্ছে, শনিবার রাতে নিউ মার্কেটের একটি দোকানে কাচ ভেঙে ঢুকেছিল হাজ্জাদ। তার পরে মোবাইল চুরি করে চম্পট দেয়। রবিবার সেই চোরাই ফোনের একটিতে সিম কার্ড ভরেছিল সে। ফোন চালু করা মাত্রই পুলিশের কাছে ‘সঙ্কেত’ বা অ্যালার্ট পৌঁছয়। সেই সূত্র ধরেই হাজ্জাদকে পাকড়াও করেন তদন্তকারীরা। সোমবার লালবাজারের এক গোয়েন্দাকর্তা বলেন, ‘‘আপাত ভাবে মনে হচ্ছে, হাজ্জাদ একাই চুরি করতে ঢুকত। তবে ভাল করে জেরা করলে এ ব্যাপারে আরও তথ্য মিলতে পারে।’’
কলকাতা পুলিশের একটি সূত্রের দাবি, নিউ মার্কেট এলাকায় ব্যাঙ্কের ভল্ট ভাঙার চেষ্টার ঘটনায় গোড়ায় বাংলাদেশি দুষ্কৃতীদের কথা উঠে এসেছিল। কিন্তু সে ব্যাপারে কোনও নির্দিষ্ট তথ্য মেলেনি। তাঁদের দাবি, হাজ্জাদ ওই দু’টি ঘটনা ছাড়াও আরও কয়েক বার এ দেশে ঢুকেছে। ফলে এমন আরও কিছু ঘটনার সঙ্গে সে জড়িত থাকতে পারে। তাঁকে হেফাজতে নিয়ে সেই সব বিষয়ও খতিয়ে দেখা হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy