—প্রতীকী চিত্র।
অপরাধী জগতে গোয়েন্দাদের ‘টিকটিকি’ হওয়ার দুর্নাম আছে। এ বার সেই ‘টিকটিকি’ কাজে লাগিয়েই মোটরবাইক চুরি থামাল পুলিশ। তবে এ জ্যান্ত নয়, যন্ত্র!
পুলিশ সূত্রের খবর, সম্প্রতি নেতাজিনগরের বিভিন্ন এলাকা থেকে একের পর এক মোটরবাইক চুরি হচ্ছিল। কয়েকটি মোটরবাইকের যন্ত্রাংশ খোলা অবস্থায় উদ্ধার হচ্ছিল। কিন্তু রহস্যের কিনারা হচ্ছিল না! শেষমেশ প্রযুক্তির ব্যবহারে অপরাধের কিনারা করেছে পুলিশ। চুরির অভিযোগে কাউকে গ্রেফতার করা না হলেও এক সন্দেহভাজনকে চিহ্নিত করা হয়েছে। পুলিশ জানায়, মাদকাসক্ত ওই তরুণকে পরিবারের সম্মতি নিয়ে নেশামুক্তি কেন্দ্রে পাঠানো হয়েছে। ঘটনাচক্রে তার পর থেকেই মোটরবাইক চুরি বন্ধ।
কী প্রযুক্তি কাজে লাগিয়েছিলেন তদন্তকারীরা?
পুলিশ সূত্রের খবর, এই প্রযুক্তির নাম গ্লোবাল পজিশনিং সিস্টেম বা জিপিএস। যে সব এলাকা থেকে মোটরবাইক চুরি হচ্ছিল, সেখানে পুলিশেরই একটি মোটরবাইকে জিপিএস যন্ত্র লুকিয়ে সেঁটে দেওয়া হয়েছিল। জিপিএস প্রযুক্তিতে কোনও বস্তুর নির্দিষ্ট অবস্থান জানা যায়। গুগল ম্যাপে ফেললে মানচিত্রের মধ্যেই ফুটে ওঠে সংশ্লিষ্ট বস্তুর অবস্থান। ঠিক যেমন ভাবে ওলা বা উব্র ক্যাব বুক করলে যাত্রী ফোনে গাড়ির অবস্থান দেখতে পান। পুলিশের রেখে দেওয়া ‘অরক্ষিত’ মোটরবাইকটি চোর নিয়ে পালাতেই, যন্ত্র সঙ্কেত পাঠায় পুলিশকে। শুধু তাই নয়, ক্রমাগত তার অবস্থানও জানতে পারছিলেন তদন্তকারীরা। সেই সূত্র ধরেই মোটরবাইকটি উদ্ধার করা হয়। তবে হাতেনাতে চোরকে ধরা যায়নি। কিন্তু কে সেই কাজটি করেছেন, তাঁকে চিহ্নিত করে ফেলেন তদন্তকারীরা। খোঁজ নিতে গিয়ে তাঁরা দেখেন, ওই যুবক একটি সচ্ছল পরিবারের সন্তান। মাদকের টাকা জোগাতেই এ কাজ করেছেন। তার পরেই তাঁকে নেশামুক্তি কেন্দ্রে পাঠানো হয়েছে।
কলকাতা পুলিশের এক পদস্থ কর্তা বলেন, ‘‘সদ্য সাবালক ওই তরুণের বিরুদ্ধে জোরালো প্রমাণ নেই। অপরাধের রেকর্ডও নেই। তাও গ্রেফতার করার সুযোগ ছিল। তাতে আরও এক অপরাধী জন্ম নিতে পারত। তাই নেশামুক্তি কেন্দ্রে পাঠিয়ে সংশোধনের সুযোগ দেওয়া হয়েছে। আইনেও এমন বিধান রয়েছে।’’
বস্তুত সর্বশেষ ক্রাইম বৈঠকে মাদকাসক্তদের শোধরাতে ‘শুদ্ধি’ নামে নতুন অ্যাপ চালু করার কথা জানিয়েছেন পুলিশ কমিশনার রাজীব কুমারও। মাদকের নেশার বশে যুব সমাজের কতটা ক্ষতি হচ্ছে তা সম্প্রতি যাদবপুরের প্রিন্স গোলাম মহম্মদ শাহ রোডে দেখা গিয়েছে। মাদক ব্যবসার বিরুদ্ধে রাস্তায় নেমে হাঙ্গামা করেছেন বাসিন্দাদের একাংশও।
কিন্তু এ সবের বাইরে নেতাজিনগর থানার তদন্তকারীদের প্রযুক্তির মাধ্যমে ফাঁদ পাতার এই কৌশলের তারিফ করছেন অনেকেই। পুলিশের একাংশ বলছে, জিপিএস যন্ত্রটি মোটরবাইকে সহজেই লুকিয়ে রাখা যায়। চুরির সময়ে দুষ্কৃতীরা তা খুঁজে দেখে না। ফলে মোটরবাইক বা গাড়ি নিয়ে পালালে টের পাবে পুলিশ। শহরের গাড়িচোর ধরতে এমন ফাঁদ পাতার পরিকল্পনার কথা জানাচ্ছে পুলিশ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy