Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

অভিযুক্তকে ধরতে গিয়ে ঘেরাও পুলিশই

তদন্তকারীরা জেনেছিলেন, হবিবপুর বাজার এলাকার বাসিন্দা, তাঁত বস্ত্রের এক মহাজনের সূত্রেই মৃত্যুঞ্জয়ের সঙ্গে পরিচয় হয়েছিল অভিযোগকারীদের।

পুলিশের দাবি, তদন্ত চলছে জোর কদমে। অভিযুক্তকে দ্রুত গ্রেফতার করা হবে। প্রতীকী ছবি।

পুলিশের দাবি, তদন্ত চলছে জোর কদমে। অভিযুক্তকে দ্রুত গ্রেফতার করা হবে। প্রতীকী ছবি।

নীলোৎপল বিশ্বাস
শেষ আপডেট: ১২ ডিসেম্বর ২০১৮ ০১:৩৪
Share: Save:

গান অ্যান্ড শেল ফ্যাক্টরিতে চাকরি দেওয়ার নাম করে প্রতারণায় অভিযুক্ত ব্যক্তিকে সাত দিন পরেও গ্রেফতার করতে পারল না পুলিশ। উপরন্তু তদন্তের কাজে নদিয়ার হবিবপুরে গিয়ে গভীর রাতে ঘেরাও হলেন কাশীপুর থানার তদন্তকারীরা। পরে রানাঘাট থানার পুলিশ গিয়ে তাঁদের উদ্ধার করে বলে জানাচ্ছেন প্রতারণার অভিযোগকারীদের এক জনের বাবা। পুলিশের অবশ্য দাবি, তদন্ত চলছে জোর কদমে। অভিযুক্তকে দ্রুত গ্রেফতার করা হবে।

সম্প্রতি মৃত্যুঞ্জয় প্রসাদ নামে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে কাশীপুর থানায় প্রতারিত হওয়ার অভিযোগ দায়ের করেন, অশোক সাহা, অজিতকুমার সাহা এবং জয়ন্ত দাস নামে তিন ব্যক্তি। অভিযোগকারীদের দাবি, তাঁদের সন্তানদের কাশীপুরের গান অ্যান্ড শেল ফ্যাক্টরিতে চাকরি দেওয়ার নাম করে মৃত্যুঞ্জয় মোট ৩০ লক্ষ টাকা নিয়ে ফেরার হয়ে গিয়েছেন।

তদন্তকারীরা জানান, মৃত্যুঞ্জয়ের বাড়ি চিহ্নিত করা গিয়েছে। কাঁচরাপাড়া রেল আবাসনের বাসিন্দা ওই অভিযুক্তকে স্থানীয়েরা ‘টাকলা চাচা’ নামে চেনেন। শনিবার রাতে সেই টাকলা চাচার খোঁজে কাঁচরাপাড়ায় হানা দেয় কাশীপুর থানার পুলিশ। তবে তাঁকে পাক়ড়াও করা যায়নি। কারণ আবাসনে মৃত্যুঞ্জয়ের ফ্ল্যাটে তালা ঝুলছিল। নীচেই রাখা ছিল তাঁর ‘ডিফেন্স’-এর স্টিকার লাগানো গা়ড়িটি। পুলিশের দাবি, মৃত্যুঞ্জয় কী কাজ করেন তা স্থানীয়েরা কেউ বলতে পারেননি।

অভিযোগকারীদের দাবি, মৃত্যুঞ্জয়ের সঙ্গে গান অ্যান্ড শেল ফ্যাক্টরির আধিকারিকেরাও কেউ কেউ যুক্ত রয়েছেন। কারণ, শারীরিক পরীক্ষা এবং নথি (যা আদতে ভুয়ো) তৈরির নামে অভিযোগকারীদের সন্তানদের নিয়ে বিনা বাধায় কয়েক বার মৃত্যুঞ্জয়কে ফ্যাক্টরির ভিতরে ঢুকতে দেখা গিয়েছে। তদন্তকারীদের মতে, ফ্যাক্টরির উঁচু তলায় যোগাযোগ না থাকলে এ কাজ করা সম্ভব নয়। এ দিনও অবশ্য গান অ্যান্ড শেল ফ্যাক্টরির কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

তদন্তকারীরা জেনেছিলেন, হবিবপুর বাজার এলাকার বাসিন্দা, তাঁত বস্ত্রের এক মহাজনের সূত্রেই মৃত্যুঞ্জয়ের সঙ্গে পরিচয় হয়েছিল অভিযোগকারীদের। তিনিই এক ছাত্রের বাবার থেকে মৃত্যুঞ্জয়ের হয়ে টাকা নিয়ে গিয়েছিলেন বলেও অভিযোগ। তাই তদন্তের স্বার্থে গভীর রাতে ওই মহাজনের বাড়িতে যায় কাশীপুর থানার পুলিশ। এক অভিযোগকারীর কথায়, ‘‘রাত আড়াইটে নাগাদ পুলিশের গাড়িতে হবিবপুরে পৌঁছোই আমরা। কিন্তু, পুলিশ ওঁদের জিজ্ঞাসাবাদই করতে পারেনি। সকালে আসুন বলে আমাদের তাড়িয়ে দিচ্ছিলেন ওই মহাজনের পরিজনেরা। পুলিশ

রাতেই কথা বলতে চাইলে বাঁশ নিয়ে হামলার ভয় দেখানো হয়। ঘেরাও করে রাখা হয় আমাদের। ঘরেও অনেকে বাঁশ নিয়ে বসেছিলেন। কোনও মতে রানাঘাট থানার পুলিশ গিয়ে আমাদের বার করে নিয়ে আসে।’’ ফলে খালি হাতেই হবিবপুর থেকে ফিরতে হয়েছে তদন্তকারীদের।

যদিও কাশীপুর থানার এক তদন্তকারী আধিকারিক বলেন, ‘‘গুন্ডাদমনে গিয়ে পুলিশকে এ রকম অভিজ্ঞতার মুখে প্রায়ই পড়তে হয়। এটা বড় ব্যাপার নয়। কড়া নজরদারি চলানো হচ্ছে, দোষীরা দ্রুত গ্রেফতার হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Crime Cossipore
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE