Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪
Coronavirus in Kolkata

হাতিয়ার মনোবল, ফেসবুক লাইভে বার্তা সুস্থ পুলিশের

হাওড়া সিটি পুলিশের পঞ্চাশেরও বেশি কর্মী সংক্রমিত হয়েছেন। অবশ্য তাঁদের ৮৫ শতাংশই এখন সুস্থও হয়েছেন

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

শান্তনু ঘোষ
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৪ জুন ২০২০ ০২:২০
Share: Save:

‘‘রিপোর্ট পজ়িটিভ হলেই ভেঙে পড়ার কারণ নেই। মনোবল ও জেদ নিয়ে থাকতে হবে। তা হলেই করোনার বিরুদ্ধে জয় নিশ্চিত।’’ দুই সহকর্মীকে পাশে নিয়ে এমনটাই বলছিলেন শিবপুর থানার সাব ইনস্পেক্টর, বছর পঞ্চাশের সন্দীপ দিন্দা। তিন জনই করোনাকে হারিয়ে ফের কাজে যোগ দিয়েছেন। তাঁরাই এ বার ক্যামেরার সামনে বসলেন করোনা সম্পর্কে মানুষের ভ্রান্ত ধারণা ও আতঙ্ক কাটাতে।

হাওড়া সিটি পুলিশের পঞ্চাশেরও বেশি কর্মী সংক্রমিত হয়েছেন। অবশ্য তাঁদের ৮৫ শতাংশই এখন সুস্থও হয়েছেন। করোনা-জয়ী সেই সমস্ত কর্মীকে নিয়ে নিজেদের ফেসবুক পেজে ‘সেশন উইথ হাওড়া সিটি পুলিশ কোভিড ওয়ারিয়র্স’ নামে অনুষ্ঠানের আয়োজন করছে হাওড়া পুলিশ কমিশনারেট। অনুষ্ঠানে করোনার সঙ্গে লড়াইয়ে নিজেদের অভিজ্ঞতা ভাগ করার পাশাপাশি দর্শকদের প্রশ্নের উত্তরও দিচ্ছেন ওই পুলিশকর্মীরা।

হাওড়া সিটি পুলিশের ডিসি (সদর) প্রিয়ব্রত রায় বলেন, ‘‘আমাদের কর্মীরা শুধুই নিজেদের অভিজ্ঞতাই জানাচ্ছেন। কোভিড মানেই যে মৃত্যু নয়, সবার সামনে সেটা তুলে ধরাই আমাদের লক্ষ্য।’’

গত রবিবার ছিল অনুষ্ঠানটি। এক ঘণ্টার অনুষ্ঠানে হাজির ছিলেন শিবপুর থানার তিন অফিসার—এসআই সন্দীপ দিন্দা, বিশ্বজিৎ আচার্য ও এএসআই বিশ্বজিৎ সিংহ। পুলিশ সূত্রের খবর, লাইভ চলাকালীন ৬৫টি প্রশ্ন এসেছিল। মঙ্গলবার দুপুর পর্যন্ত ওই ফেসবুক লাইভের দর্শক সংখ্যা ৭৯০০-য় পৌঁছেছে।

এপ্রিলের মাঝামাঝি করোনায় আক্রান্ত হন সন্দীপবাবু। এর পরে বিশ্বজিৎবাবুদেরও কোভিড পরীক্ষার রিপোর্ট পজ়িটিভ হয়। কী উপসর্গ নিয়ে তাঁরা ভর্তি হয়েছিলেন, হাসপাতালে থাকার অভিজ্ঞতা-সহ নানা কথা শোনান ওই পুলিশকর্মীরা। বিশ্বজিৎবাবু বলেন, ‘‘হাসপাতালে দেখেছি অন্য রোগীরা ভয় পাচ্ছেন। নিজেদের মনোবল বাড়ানোর পাশাপাশি তাঁদেরও ভরসা দিয়েছি। এখনও মানুষের মনের ভয় কাটানোর কাজই করছি।’’

এক দর্শক সচ্চিদানন্দ মিত্র প্রশ্ন করেছিলেন, করোনা পরিস্থিতিতেও সামনের সারিতে এসে কাজ করার সাহস কী ভাবে পান পুলিশকর্মীরা?

উত্তরে ওই তিন জনই জানান, তাঁদের চাকরি মানুষের স্বার্থেই। কিন্তু সাহস দেখাতে পারলেই যে করোনাকে জয় করা যায় তা তাঁরা শিখেছেন। সন্দীপবাবু জানান, হাসপাতালে থাকার সময়ে তাঁর মুখে স্বাদ ছিল না। কিন্তু প্রতিজ্ঞা করেছিলেন, যে খাবারই দেওয়া হোক পুরোটাই খাবেন। তাই ভাত মেখে জল দিয়ে গিলে খেতেন। অবস্থার অবনতি হয়ে এক হাসপাতাল থেকে অন্য হাসপাতালে স্থানান্তরিত হতে হয়েছিল বিশ্বজিৎ সিংহকে। তিনি জানান, হাসপাতালে ভর্তি থাকলেও কী ভাবে বাড়ির সঙ্গে ভিডিয়ো কলে কথা বলা সম্ভব হয়। উপসর্গহীন থাকা বিশ্বজিৎবাবু মনে করেন দৈনন্দিন রুটিনে সামাজিক দূরত্ব মানা, মাস্ক, স্যানিটাইজ়ার ব্যবহারও বাধ্যতামূলক হওয়া প্রয়োজন।

ফেসবুক লাইভে সব পুলিশকর্মীরই একটাই বক্তব্য, ‘করোনা জব্দে মূল মন্ত্র হল মনের জোর।’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus in Kolkata Facebook Howrah City Police
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE