প্রতীকী ছবি।
চারতলা আবাসন থেকে পড়ে অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে এক ছাত্রীর। ঘটনাটি ঘটেছে শনিবার রাত এগারোটা দশ মিনিট নাগাদ নিউ টাউন এলাকায়।
পুলিশ জানিয়েছে, মৃত ওই কিশোরী নিউ টাউনেরই একটি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলের দশম শ্রেণির ছাত্রী। তাঁর বাড়ি নিউ টাউন থানা এলাকার একটি আবাসনে। পুলিশ এবং স্থানীয় সূত্রের খবর, শনিবার তখন রাত এগারোটা বেজে দশ মিনিট। ওই আবাসনেরই কয়েক জন বাসিন্দা আচমকা জোরে কিছু পড়ে যাওয়ার আওয়াজ শুনতে পান। সঙ্গে সঙ্গে তাঁরা বাইরে বেরিয়ে দেখেন, রক্তাক্ত অবস্থায় মুখ থুবড়ে পড়ে রয়েছে ছাত্রীটি। দ্রুত তাঁকে উদ্ধার করে বিধাননগর মিউনিসিপ্যাল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, এখনও পর্যন্ত ঘর থেকে কোনও সুইসাইড নোট মেলেনি।
পরিবার সূত্রের খবর, ওই কিশোরী রাত আটটা নাগাদ বাড়ি থেকে বেরিয়ে যায়। তার পর আর সে বাড়িতে ফিরে যায়নি। এর পরেই তাঁর রক্তাক্ত দেহ মেলে আবাসনের নীচে। রাত আটটা থেকে এগারোটা, এই তিন ঘণ্টা ওই কিশোরী কোথায় ছিল, তা খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারী অফিসারেরা।
পুলিশ তদন্তে জানতে পেরেছে, ওই কিশোরীর এক দিদি রয়েছে। তাদের মা-বাবা আলাদা থাকেন। পারিবারিক অশান্তির কারণে বেশ কিছু দিন ধরেই কিশোরী মানসিক অবসাদে ভুগছিল। ই এম বাইপাসের ধারের একটি বেসরকারি হাসপাতালে তার অবসাদের চিকিৎসাও চলছিল। ঘটনার দিন সম্ভবত কোনও পারিবারিক অশান্তির কারণেই ওই ছাত্রী বাড়ি থেকে বেরিয়ে যায়। তদন্তকারীদের অনুমান, অবসাদের কারণে ওই আবাসনের ছাদ থেকে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করে থাকতে পারে কিশোরী। তদন্তে সে সব দিকও খতিয়ে দেখা হবে।
ঘটনার কথা শুনে মনোবিদ নীলাঞ্জনা সান্যাল জানান, এই বয়সের বেশির ভাগ ছেলেমেয়ের মধ্যে নিজস্ব পরিচিতিই তৈরি হয় না। তাদের আবেগকে বোঝার জন্য একটা শক্ত খুঁটির দরকার হয়। পরিবারের কেউ সেই খুঁটি হবেন, তেমনটাই স্বাভাবিক। সে ক্ষেত্রে ঠিক আর ভুল বুঝতে পারা তাদের পক্ষে সহজ হয়। কিন্তু পারিবারিক অশান্তির কারণে অনেক সময়ই সেই সাহায্য মেলে না। এমন পরিস্থিতিতে নিজেকে দুর্বল মনে করে মানসিক অবসাদেও ভুগতে শুরু করে কমবয়সিরা। তাঁর কথায়, ‘‘মা-বাবা একসঙ্গে না থাকলে তার খারাপ প্রভাবও বয়ঃসন্ধির ছেলেমেয়ের মধ্যে পড়ে। যা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। এই কিশোরীর ক্ষেত্রেও হয়তো তেমনই কিছু হয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy