Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪
Suicide

পরিকল্পনা করেই আত্মঘাতী ম্যানেজমেন্ট পড়ুয়া, কারণ লুকিয়ে আছে কলকাতাতেই

ময়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্ট অনুযায়ী, ২৪ বছরের হর্ষের গলার নীচে যে ক্ষত পাওয়া গিয়েছে তাকে চিকিৎসকদের পরিভাষায় বলে ‘আরটেরিয়াল উন্ড’। বাঁ দিক থেকে ডানদিকে কাটা হয়েছে। হর্ষ নিজেও ডানহাতি ছিলেন।

মৃত সেই ম্যানেজমেন্ট পড়ুয়া হর্ষ ভলানি। নিজস্ব চিত্র।

মৃত সেই ম্যানেজমেন্ট পড়ুয়া হর্ষ ভলানি। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১১ নভেম্বর ২০১৮ ১৪:১৩
Share: Save:

নিজের হাতেই গলা কেটেছেন হর্ষ ভলানি। গুজরাটের এই ম্যানেজমেন্ট পড়ুয়ার রক্তাক্ত দেহ শনিবার ভোর রাতে নিউ মার্কেটের অভিজাত হোটেলের শৌচাগার থেকে উদ্ধার করে পুলিশ। গোটা শৌচাগারে রক্ত জমাট বেঁধে ছিল, পাশে পড়ে ছিল রক্তমাখা একটি ছুরি।

ময়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্ট অনুযায়ী, ২৪ বছরের হর্ষের গলার নীচে যে ক্ষত পাওয়া গিয়েছে তাকে চিকিৎসকদের পরিভাষায় বলে ‘আরটেরিয়াল উন্ড’। বাঁ দিক থেকে ডানদিকে কাটা হয়েছে। হর্ষ নিজেও ডানহাতি ছিলেন। পাশাপাশি গলায় ক্ষত তৈরি হওয়ার পর তাঁর গায়ে এবং মেঝেতে যে ভাবে রক্তর দাগ তৈরি হয়েছে সেটাও নিজে কেউ নিজের গলা কাটলে যে ভাবে হতে পারে, তার সঙ্গে মিল রয়েছে।

গতকালই হোটেল কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে সিসি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করেছে পুলিশ। সেখানেও দেখা যাচ্ছে বৃহস্পতিবার চেক-ইন করার পর থেকে একবারও সে নিজের পাঁচ তলার ঘর থেকে বেরোয়নি। কাউকে ঢুকতেও দেখা যায়নি। ওই সমস্ত পারিপার্শ্বিক তথ্য প্রমাণ থেকে তদন্তকারীরা নিশ্চিত, জামশেদপুরের নামী ম্যানেজমেন্ট কলেজের এই ছাত্র আত্মঘাতী হয়েছেন। তবে হঠাৎ তিনি কলকাতায় এলেন কেন, তা নিয়ে এখনও অন্ধকারে পুলিশ এবং তাঁর পরিবারের সদস্যরা। তবে পরিবারের লোকজন জানতেন যে হর্ষ কলকাতায় এসেছেন।

আরও পড়ুন: গলায় ক্ষত, পাশে ছুরি! কলকাতার অভিজাত হোটেলে ম্যানেজমেন্ট ছাত্রের রহস্যমৃত্যু

ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞ থেকে শুরু করে অটোপ্সি সার্জেনদের অনুমান, প্রচণ্ড হতাশা বা অবসাদ তৈরি না হলে, এ ভাবে নিজের গলা নিজে কেটে আত্মহত্যা করা কঠিন। প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশের ধারণা, হোটেলে ঢোকার আগেই ছুরি কিনেছিলেন ওই যুবক এবং চেক ইন করে দরজায় ডু নট ডিস্টার্ব বোর্ড লাগিয়ে দিয়েছিলেন। এর থেকে স্পষ্ট যে তিনি নিজেকে বাইরের জগৎ থেকে বিচ্ছিন্ন করে রাখতে চাইছিলেন এবং আত্মহত্যার পরিকল্পনা নিয়েই হোটেলে ওঠেন।

আরও পড়ুন: দীপাবলির রাতে চাল ফুঁড়ে ছুটে এল গুলি!

হর্ষের কয়েকজন বন্ধুর সঙ্গে কথা বলেছেন তদন্তকারীরা। পুলিশ সূত্রে খবর, তাঁরাও পুলিশকে জানিয়েছেন যে, গত কয়েক মাস ধরে হর্ষ সোশ্যাল মিডিয়াতে আগের মত সক্রিয় ছিলেন না। একা থাকতেই বেশি ভালবাসতেন। পুলিশের অনুমান, গত কয়েকমাস ধরেই অবসাদে ভুগছিলেন তিনি। তবে তাঁর মৃত্যুর সঙ্গে কলকাতার কোনও যোগ রয়েছে এমনটাই ধারণা তদন্তকারীদের। এক তদন্তকারী অফিসার বলেন,“পরিকল্পনা করেই হর্ষ কলকাতাকে বেছে নিয়েছিলেন আত্মহত্যা করার জন্য।” এর থেকেই স্পষ্ট যে এখানেই কোনও সূত্র লুকিয়ে আছে। সেই সূত্র খুঁজে পেতে এখন হর্ষের মোবাইল কল ডিটেলস একমাত্র ভরসা।

(কলকাতার ঘটনা এবং দুর্ঘটনা, কলকাতার ক্রাইম, কলকাতার প্রেম - শহরের সব ধরনের সেরা খবর পেতে চোখ রাখুন আমাদেরকলকাতাবিভাগে।)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE