Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

শিক্ষক-ঘাটতি মেটাতে বিজ্ঞাপন প্রেসিডেন্সির

উপাচার্য বদল হয়েছে প্রায় ১০ মাস আগে। এর মধ্যে প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-সঙ্কট নিরসনে কোনও বিভাগে নতুন নিয়োগ হয়নি। এত দিনে, কার্যত এক বছরেরও বেশি সময় পরে বেশ কিছু বিভাগে একসঙ্গে শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞাপন দেওয়া হল।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ২৭ মার্চ ২০১৫ ০২:৫৭
Share: Save:

উপাচার্য বদল হয়েছে প্রায় ১০ মাস আগে। এর মধ্যে প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-সঙ্কট নিরসনে কোনও বিভাগে নতুন নিয়োগ হয়নি। এত দিনে, কার্যত এক বছরেরও বেশি সময় পরে বেশ কিছু বিভাগে একসঙ্গে শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞাপন দেওয়া হল।

৩৭টি প্রফেসর এবং ১০৫টি অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর-পদে নিয়োগের জন্য গত বুধবার বিজ্ঞাপন দিয়েছেন প্রেসিডেন্সি-কর্তৃপক্ষ। যদিও আবেদন পেয়ে ইন্টারভিউ নিয়ে প্রার্থী-তালিকা চূড়ান্ত করতে আরও মাস ছয়েক লাগবে বলেই বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রের খবর। তার পরে নিয়োগ। ওই সূত্রেই জানানো হয়েছে, বিজ্ঞাপন বেরোলেও প্রেসিডেন্সির শিক্ষকের অভাব মিটতে এখনও বেশ কিছু দিন লাগবে।

আগের উপাচার্য মালবিকা সরকারের আমলে প্রেসিডেন্সিতে দেড় শতাধিক পদে শিক্ষক নিয়োগ করা হয়েছিল। কিন্তু গত বছর মে-তে তিনি চলে যাওয়ার পরে এ-পর্যন্ত আর এক জনও শিক্ষক নেওয়া হয়নি। আপাতত শ’দেড়েক শিক্ষক-পদ শূন্য। সেই সব জায়গায় মূলত অতিথি শিক্ষক নিয়োগ করে পঠনপাঠন চালানো হচ্ছে। গত জুনে দায়িত্ব নেন বর্তমান উপাচার্য অনুরাধা লোহিয়া। তার মাস ছয়েক বাদে, এ বছর জানুয়ারিতে কয়েকটি বিভাগে শিক্ষক নিয়োগের জন্য একটি বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়েছিল বলে বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গিয়েছে। তবে সেই বিজ্ঞাপনের ভিত্তিতে কাউকে নিয়োগ করা হয়নি। সে-দিক থেকে দেখলে বছরখানেকের মধ্যে বুধবারেরটিই শিক্ষক নিয়োগের প্রথম বিজ্ঞাপন। ১৪২টি পদে নিয়োগের বিজ্ঞাপন দেওয়ায় পুরোটা না-হলেও শিক্ষক-ঘাটতি অনেকটাই মিটবে।

এ বারের বিজ্ঞাপনে দেখা যাচ্ছে, বায়োলজিক্যাল সায়েন্সেস বিভাগে শূন্য পদের সংখ্যা সব থেকে বেশি, মোট ৩৮টি। এ ছাড়া রসায়ন, ভূতত্ত্ব ইত্যাদি বিষয়েরও প্রচুর পদে শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়েছে। কিন্তু শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞাপন দিতে এত সময় লাগল কেন?

উপাচার্য অনুরাধাদেবী জানান, সব দিক ভাল ভাবে দেখে এগোনো হয়েছে বলেই কিছুটা সময় লেগেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি সূত্রের খবর, আগে কয়েকটি নিয়োগের ক্ষেত্রে সংরক্ষণ ও কিছু নীতি ঠিকঠাক মানা হয়নি বলে অভিযোগ ওঠে। কয়েকটি মামলাও হয়। এই ধরনের সমস্যা এড়াতেই বিশ্ববিদ্যালয়-কর্তৃপক্ষ এ বার বাড়তি সতর্ক। দেরিটা সেই জন্যই।

প্রেসিডেন্সিতে মোট শিক্ষক-পদ ৩০৬টি, প্রফেসর-পদ ৫২টি এবং অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসরের পদ ২৫৪টি। বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রের খবর, অর্ধেকেরও বেশি পদ আপাতত ফাঁকা। চাকরি পেয়েও ছেড়ে গিয়েছেন অনেকে। কেউ কেউ যোগই দেননি। কেন যোগ দেননি? কেনই বা যোগ দিয়েও অনেকে প্রেসিডেন্সি ছেড়ে দিলেন?

বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি সূত্রের বক্তব্য, ২০১৭-র মধ্যে প্রেসিডেন্সিকে আন্তর্জাতিক স্তরে প্রথম সারির বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে গড়ে তুলতে চায় রাজ্য সরকার তথা মেন্টর গ্রুপ। কিন্তু ভাল শিক্ষক-শিক্ষিকা আনার জন্য বাড়তি বেতন এবং অন্যান্য সুযোগ-সুবিধার বন্দোবস্ত করা হয়নি। তা হলে ভাল শিক্ষকেরা আসবেন কেন? একই কারণে অর্থাৎ প্রত্যাশিত সুযোগ-সুবিধা না-পেয়ে অনেকে প্রেসিডেন্সি ছেড়ে দেশ বা বিদেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যোগ দিয়েছেন।

এই পরিস্থিতিতে রাজ্য সরকার প্রেসিডেন্সির শিক্ষক-শিক্ষিকাদের বিভিন্ন গবেষণা প্রকল্পের জন্য বিশেষ অনুদানের কথা ঘোষণা করেছে। কিন্তু তাতেও তেমন লাভ হচ্ছে না বলে বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রের খবর। যদিও প্রেসিডেন্সি-কর্তৃপক্ষ ভাল শিক্ষক-শিক্ষিকা নিয়োগ করার ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী। এক কর্তা বলেন, “প্রেসিডেন্সির নামটির প্রতি মানুষের টান আছে। এবং সেই টানেই অনেক ভাল ছেলেমেয়ে শিক্ষকতায় আসবেন বলে আমাদের বিশ্বাস।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE