Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

হাসপাতাল থেকে পালাল বন্দি, পরে গ্রেফতার

পুলিশ জানিয়েছে, ওই বন্দির নাম রাজু মণ্ডল ওরফে গোলাম হুসেন মণ্ডল।

সন্ধান: হাসপাতালের কার্নিসে টর্চের আলো ফেলে চলছে রাজুর (ইনসেটে) খোঁজ। সোমবার রাতে আর জি করের বাইরে। নিজস্ব চিত্র

সন্ধান: হাসপাতালের কার্নিসে টর্চের আলো ফেলে চলছে রাজুর (ইনসেটে) খোঁজ। সোমবার রাতে আর জি করের বাইরে। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২১ অগস্ট ২০১৯ ০১:১১
Share: Save:

রাতভর পুলিশকে নাকানিচোবানি খাইয়ে চার ঘণ্টা পরে পুলিশের হাতে ধরা পড়ল আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল থেকে পালানো এক বিচারাধীন বন্দি।

পুলিশ জানিয়েছে, ওই বন্দির নাম রাজু মণ্ডল ওরফে গোলাম হুসেন মণ্ডল। পেটে ব্যথা নিয়ে গত শুক্রবার থেকে আর জি কর হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের পুরুষ ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন ছিল সে। সোমবার রাত সাড়ে ১১টা নাগাদ শৌচাগারৈ থেকে পালিয়ে যায় রাজু। ভোর সাড়ে তিনটে নাগাদ তাকে বেলগাছিয়া সেতুর পশ্চিম দিক থেকে ধরে টালা থানার পুলিশ।

পুলিশ জানায়, অশোকনগরের পশ্চিমপাড়ার বাসিন্দা রাজুর বিরুদ্ধে ধর্ষণ-সহ একাধিক মামলা রয়েছে। গত ৩০ মে তাকে ধর্ষণের অভিযোগে গ্রেফতার করে অশোকনগর থানার পুলিশ। আদালতের নির্দেশে কয়েক মাস ধরে সে দমদম জেলে ছিল। হাসপাতালে রাজুকে পাহারার দায়িত্বে ছিলেন সংশোধনাগারের দুই রক্ষী। তদন্তকারীদের কাছে রক্ষীদের দাবি, রাত সাড়ে এগারোটা নাগাদ শৌচাগারে যায় রাজু। বেশ কিছু ক্ষণ পরে তার কোনও সাড়া না মেলায় রক্ষীরা দরজা খুলে দেখেন, সে ভিতরে নেই। শৌচাগারের একটি জানলা ভাঙা। এর পরেই জেল কর্তৃপক্ষের তরফে অভিযোগ দায়ের করা হয় টালা থানায়।

তদন্তকারীরা জানান, শৌচাগারের জানলার লোহার জালের একটি অংশ খুলে বাইরে বেরোয় রাজু। তার পরে লোহার পাইপ বেয়ে ছাদে চলে যায়। পুলিশের একটি দল টর্চ হাতে ছাদে তল্লাশি শুরু করে। আর একটি দল বিভিন্ন ওয়ার্ডে, অন্য শৌচালয়গুলিতে এবং কোনও কার্নিসের উপরে রাজু লুকিয়ে আছে কি না, তা দেখে। রাস্তায় দাঁড়িয়ে সার্চলাইট দিয়ে বি সি রায় ক্যাজুয়াল্টি ব্লকের বিভিন্ন কার্নিসে খোঁজ চালাতে থাকেন পুলিশকর্মীরা। ইতিমধ্যে হাসপাতালের বাইরে ওই বিভাগের সামনে ভিড় জমে যায়। পুলিশকর্মীরা অনুমান করেন, কোনও কার্নিসের খোপে বন্দি আত্মগোপন করে রয়েছে। কিন্তু সেখানে উঠবে কে? ডাক পড়ে দমকলের। কিন্তু অত উঁচুতে ওঠার মতো মই নেই জানিয়ে রাত আড়াইটে নাগাদ দমকল রণে ভঙ্গ দেয়। ক্যাজুয়াল্টি ব্লকের নীচ থেকে পুলিশকর্মীরাও সরে যান।

পুলিশের দাবি, ভিড় সরে যাওয়ার ঘণ্টাখানেক পরে হাসপাতালের কোনও একটি কার্নিসের খোপ থেকে পাইপ বেয়ে নীচে নামে রাজু। অন্ধকারের সুযোগ নিয়ে সে হাসপাতালের লোহার রেলিং টপকায়। তখনই কোনও ভাবে তার পরনের লুঙ্গির একটি অংশ ছিঁড়ে সেখানে আটকে যায়। সেটি দেখেন স্থানীয় বাসিন্দারা। মহম্মদ তনবি র নামে এক প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, ‘‘বন্দি পালাচ্ছে বলে আমরা চিৎকার জুড়ে দিই।’’ পুলিশের কাছে খবর গেলে ফের শুরু হয় তল্লাশি।

হাসপাতাল চত্বরের বাইরে বেরিয়ে গেলেও রাজু বেশি দূর যেতে পারেনি। এক তদন্তকারী জানান, বন্দির ছবি সব জায়গায় ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল। একই সঙ্গে রাজুর লুঙ্গির ছেঁড়া অংশ দেখে বোঝা যায়, সে কোন দিকে যেতে পারে। এর পরে বেলগাছিয়া সেতুর উপরে

ওই বন্দিকে ধরে ফেলেন পুলিশকর্মীরা। ধৃতকে মঙ্গলবার আদালতে তোলা হলে তার জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

R G Kar Hospital Prisoner Kolkata Police
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE