Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪
Property Tax

সম্পত্তিকর আদায় হয়নি, পুর-কোষে টান বিধাননগরে

পুরসভা সূত্রের খবর, করোনা পরিস্থিতির জেরে শুধু সাধারণ মানুষের পকেটেই নয়, টান পড়েছে রাজকোষেও।

ছবি সংগৃহীত

ছবি সংগৃহীত

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২২ জুন ২০২০ ০৬:২৭
Share: Save:

একটি ওয়ার্ডেই বকেয়া কয়েক কোটি টাকা। সেই বকেয়া আদায়ে বাড়ি বাড়ি গিয়ে আবেদন করতে দেখা গেল খোদ কাউন্সিলরকে। রবিবার সল্টলেকের ৪১ নম্বর ওয়ার্ডের ঘটনা।

পুরসভা সূত্রের খবর, করোনা পরিস্থিতির জেরে শুধু সাধারণ মানুষের পকেটেই নয়, টান পড়েছে রাজকোষেও। গোটা বিধাননগর পুর এলাকায় শুধু সম্পত্তিকরই বিপুল পরিমাণে বকেয়া রয়েছে। সম্প্রতি বিধাননগর পুরসভার বাজেট গৃহীত হয়েছে। বাজেটে পুরসভা জানিয়েছে, লকডাউনে সম্পত্তিকর-সহ বিভিন্ন রাজস্ব আদায় বকেয়া রয়েছে। পুর কর্তাদের দাবি, রাজ্য সরকার পাশে দাঁড়ালেও পরিষেবা বজায় রাখতে গেলে নিজস্ব আয় বৃদ্ধির প্রয়োজন। তাই পুরসভা রাজস্ব আদায়ে জোর বাড়িয়েছে।

এর পরেই রবিবার সল্টলেকের ৪১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায়কে দেখা গেল বিডি ব্লকে বাড়ি বাড়ি ঘুরতে। তিনি জানান, পুরসভা বকেয়ার যে তালিকা পাঠিয়েছে সে অনুসারে তাঁর ওয়ার্ডে ১২ কোটিরও বেশি টাকা বকেয়া রয়েছে। করোনা পরিস্থিতির জেরে বকেয়া হয়েছে। তাঁর কথায়, ‘‘বাসিন্দাদের কাছে আবেদন জানাচ্ছি যাতে পরিস্থিতি বিবেচনা করে তাঁরা বকেয়া মিটিয়ে দেন। তবে পরিষেবা বজায় রাখতে সুবিধা হবে।’’

পুরসভা সূত্রের খবর, ওই ওয়ার্ডে কমবেশি শতাধিক বাড়িতে লক্ষাধিক টাকার বকেয়া রয়েছে। একটি বাড়িতে প্রায় ১০ লক্ষ টাকাও বকেয়া রয়েছে বলে সূত্রের খবর। তবে কাউন্সিলর জানান, অনেক বাড়িতে বিভিন্ন জটিলতা রয়েছে। ফলে বকেয়া আদায়ে সমস্যা হচ্ছে। তাঁর কথায়, ‘‘পুরসভা প্রয়োজনে বকেয়া আদায়ে এলাকায় শিবির চালু করতে পারে। তাতে বাসিন্দাদেরও সুবিধা হবে। অতীতে বিডি মার্কেটে শিবির করে কয়েক লক্ষ টাকা বকেয়া আদায় করা সম্ভব হয়েছে।’’

যদিও বাসিন্দাদের একাংশের দাবি, কর দিতে সকলেই চান। কিন্তু এত বকেয়া জমে গেল কী করে? সে ক্ষেত্রে শুধু করোনা পরিস্থিতির কথা বললে হবে না। পুরসভাকে আরও গতিশীল হতে হবে। বাসিন্দাদের একটি সংগঠনের এক কর্মকর্তা কুমারশঙ্কর সাধুর কথায়, ‘‘হয়তো কোনও সমস্যা রয়েছে। না হলে সাধারণত বাসিন্দারা বকেয়া রাখতে চান না।’’

পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান পারিষদ অশেষ মুখোপাধ্যায়ের অভিযোগ, পুরসভার গাফিলতি রয়েছে। সম্পত্তিকর নিয়ে ঠিক মতো পরিকল্পনা করে এগোলে এমন সমস্যা হয় না।

পুরসভা সূত্রের খবর, সল্টলেক থেকে রাজারহাট-গোপালপুর এলাকায় সম্পত্তি কর আদায়ে নানা বিধ সমস্যা রয়েছে। বর্তমানে সম্পত্তিকর বাবদ কয়েক কোটি টাকা বকেয়া রয়েছে। বকেয়া আদায়ে পুরসভার গাফিলতির অভিযোগ খারিজ করে মেয়র কৃষ্ণা চক্রবর্তী জানান, করোনা পরিস্থিতিতে লকডাউনে বিল পাঠানো থেকে বকেয়া আদায়ে সমস্যা হয়েছে। এ বার সেই বকেয়া আদায়ে জোর দেওয়া হচ্ছে। তাঁর কথায়, ‘‘মাত্র সাত মাস আগে দায়িত্ব নিয়ে পুরসভার নিজস্ব আয় বৃদ্ধির চেষ্টা করেছি। বার বার রাজ্য সরকারের উপরে নির্ভরশীল না হয়ে পুরসভার আয় বাড়ানোই লক্ষ্য। তবে বেশ কিছু জটিলতা রয়েছে। সে সব সমাধানে রাজ্য সরকারের নির্দেশ মতো কাজ হবে। সম্পত্তিকর বাবদ কয়েক কোটি টাকা বকেয়া রয়েছে। আমার বিশ্বাস বাসিন্দারা আগের মতোই সহযোগিতা করবেন।’’

তিনি জানান, কাউন্সিলরেরা বকেয়া আদায়ে দায়িত্ব নিজেদের কাঁধে তুলে নিয়েছেন। এতে কাজের গতিও বাড়বে। পুরকর্মীরা বাড়ি বাড়ি পৌঁছলে আখেরে তাঁদেরই বিল মেটাতে সুবিধা হবে বলে মনে করছেন বাসিন্দাদের একাংশ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Property Tax Economy Government
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE