ধর্মঘট: বন্ধ অটো চলাচল। —ফাইল চিত্র
কেষ্টপুরে যাওয়ার জন্য উল্টোডাঙা স্টেশন থেকে কিছুটা হেঁটে বাগুইআটি রুটের একটি অটোয় উঠেছিলেন বরাহনগরের বাসিন্দা শর্মিষ্ঠা পাল। কিন্তু কয়েক জন যুবক এসে হাতজোড় করে বললেন, ‘‘দিদি, অটো বন্ধ আছে। নেমে যান।’’ অটোচালক যেতে রাজি থাকলেও ওই যুবকদের সামনে চুপ করে যান। এর পরে বাধ্য হয়ে ভিড় বাসেই ওঠেন শর্মিষ্ঠা।
শুধু ওই মহিলাই নন, বুধবার সকাল থেকে বাগুইআটি-উল্টোডাঙা রুটে অটো বন্ধ থাকায় বহু মানুষই দুর্ভোগে পড়েন। একই ছবি ধরা পড়েছে বাগুইআটি এবং কেষ্টপুরের দিকেও। এই ঘটনায় রীতিমতো ক্ষুব্ধ যাত্রীরা। তাঁদের প্রশ্ন, প্রশাসন বলে কি কিছু নেই? যাঁদের যখন ইচ্ছে হবে, পরিষেবা বন্ধ রাখবেন, এটা হয় নাকি?
ধর্মঘটী অটোচালকদের একাংশের বক্তব্য, বাধ্য হয়েই এমন সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে। তাঁদের অভিযোগ, ওই রুটে প্রচুর বাইরের অটো ঢুকে পড়ছে। প্রশাসনকে বারবার অভিযোগ জানিয়েও লাভ হয়নি। ওই সমস্ত অটোর কোনও রুট পারমিটও নেই। এর ফলে যাঁরা নিয়ম মেনে অটো চালাচ্ছেন, তাঁদের রুজি-রোজগারে টান পড়ছে। পাশাপাশি, নিয়মিত পুলিশকে বিভিন্ন জরিমানা দিতে গিয়ে সমস্যার মুখে পড়ছেন তাঁরা।
চালকদের একাংশের দাবি, ওই রুটে ৪২২টি বৈধ অটো চলে। এ ছাড়া, ওই রুটে অবৈধ এবং বাইরে থেকে আসা আরও ৩৫০টি অটো চলে। আগে অটো চালিয়ে এক-এক জনের দিনে ১৪০০ টাকার মতো রোজগার হত। এখন তা কমে দাঁড়িয়েছে ৭০০-৮০০ টাকায়। চালকেরা জানাচ্ছেন, মালিকের পাওনা, গ্যাসের দাম মিটিয়ে হাতে থাকছে সামান্যই। এই অবস্থায় অটো চালানোর কোনও মানেই হয় না।
যদিও ওই রুটে এমন ঘটনা নতুন নয়। এর আগেও অটো বন্ধ রেখে প্রতিবাদ জানিয়েছেন চালকেরা। নিত্যযাত্রীদের বক্তব্য, চালকদের দাবির যেমন যুক্তি রয়েছে, তেমনই এ ভাবে অটো বন্ধ করাও অন্যায়।
বাগুইআটি-উল্টোডাঙা রুটের অটো ইউনিয়নের নেতা সোমনাথ দত্তের অভিযোগ, বহু বার প্রশাসনকে জানানো সত্ত্বেও লাভ হচ্ছে না। পুলিশকর্তারাও পদক্ষেপ করার আশ্বাস দিয়েছেন। তবে ভরসা রাখা যাচ্ছে না। অটোচালকদের বক্তব্য, বেআইনি অটো বন্ধ না হলে ধর্মঘটও উঠবে না। কিন্তু অটো বন্ধের জেরে যাত্রীদের যে ভোগান্তি হচ্ছে? ওই নেতার বক্তব্য, ‘‘আমরা যাত্রীদের কাছে হাতজোড় করে ক্ষমা চাইছি। নিতান্ত বাধ্য হয়েই আমাদের এই সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে।’’
যদিও সকাল থেকে এমন অবস্থা চলার খবর পেয়ে ইউনিয়নের নেতৃত্বের সঙ্গে কথা বলে পুলিশ। বিধাননগরের পুলিশ জানায়, ইউনিয়ন তাদের দাবিদাওয়া জেলা প্রশাসন ও আঞ্চলিক পরিবহণ দফতরে জানাবে। পুলিশ পরিস্থিতির উপরে নজর রাখছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy