Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪
Calcutta News

স্নাতকেও প্রশ্ন-বিভ্রাট, কোপে তিন কর্তা

নিরাপত্তার স্বার্থে বিশ্ববিদ্যালয়ের হাজরা ক্যাম্পাসের নিজস্ব ছাপাখানার বদলের সরস্বতী প্রেসে প্রশ্নপত্র ছাপার সিদ্ধান্ত হয়েছিল। সিসি ক্যামেরা লাগিয়ে প্রশ্নপত্র প্রস্তুত হয়েছে কড়া নিরাপত্তায়। শিক্ষকদের একাংশ তাতে অসন্তোষ প্রকাশ করেছিলেন। কিন্তু শেষরক্ষা হল না।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১৬ জুন ২০১৮ ০৫:৫১
Share: Save:

শিরোনামের জায়গায় লেখা দ্বিতীয় পত্র। মূল বিষয়ে ঢুকে পরীক্ষার্থীরা দেখলেন, প্রশ্ন আসলে তৃতীয় পত্রের!

শুক্রবার এই কাণ্ড ঘটেছে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক দ্বিতীয় বর্ষের (জেনারেল) সাংবাদিকতা এবং গণমাধ্যমের পরীক্ষায়। এতে অন্তর্ঘাত দেখছেন খোদ শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। বাতিল হয়ে গিয়েছে পরীক্ষা। ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে পরীক্ষা নিয়ামক-সহ তিন জনের বিরুদ্ধে। বাতিল পরীক্ষা হবে ২০ জুন। তৃতীয় পত্রের পরীক্ষা ২৭ জুন।

নিরাপত্তার স্বার্থে বিশ্ববিদ্যালয়ের হাজরা ক্যাম্পাসের নিজস্ব ছাপাখানার বদলের সরস্বতী প্রেসে প্রশ্নপত্র ছাপার সিদ্ধান্ত হয়েছিল। সিসি ক্যামেরা লাগিয়ে প্রশ্নপত্র প্রস্তুত হয়েছে কড়া নিরাপত্তায়। শিক্ষকদের একাংশ তাতে অসন্তোষ প্রকাশ করেছিলেন। কিন্তু শেষরক্ষা হল না।

এক পরীক্ষার্থী জানান, সকাল ১০টায় পরীক্ষা শুরু হয়। প্রশ্নপত্র বিলির পরেই বিভ্রাট ধরা পড়ে। পত্রপাঠ প্রশ্নপত্র ফের়ত নেওয়া শুরু হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করে পরীক্ষা বাতিল করা হয় বলে জানান এক কর্তা। কিন্তু বিভ্রাট কেন?

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রের খবর, এটা অন্তর্ঘাত বলেই কর্তৃপক্ষের সন্দেহ। ‘‘কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছি। অন্তর্ঘাত বলেই মনে হচ্ছে। শুনছি, ছাপার আগে হাতের লেখাতেই ভুল হয়েছিল,’’ বলেন শিক্ষামন্ত্রী।

উপাচার্য সোনালি চক্রবর্তী বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, পরীক্ষা নিয়ামক জয়ন্ত সিংহ, উপ-পরীক্ষা নিয়ামক বিশ্বরূপ সরকার-সহ তিন জনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। শো-কজ করা হয়েছে জয়ন্তবাবু ও বিশ্বরূপবাবুকে। জবাব দিতে হবে ১৫ দিনের মধ্যে। শো-কজ ও সাসপেন্ড করা হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের কনফিডেন্সিয়াল বিভাগের সিনিয়র অ্যাসিস্ট্যান্ট শিবাজী দাসকে। হাতে লেখার ভুলটা তাঁর দিক থেকেই হয়েছিল বলে খবর। সহ-উপাচার্য (শিক্ষা) দীপক কর বলেন, ‘‘নতুন সেটের প্রশ্নপত্রে তৃতীয় পত্রের পরীক্ষা পূর্ব নির্ধারিত দিনেই হবে।’’

প্রশ্নপত্রের শিরোনামে এক তথ্য আর প্রশ্ন অন্য বিষয়ের, এমন কাণ্ড সাম্প্রতিক অতীতে ঘটেছে বলে মনে করতে পারছেন না অধ্যক্ষেরা। দীপকবাবু জানান, প্রশ্নপত্রের শিরোনাম হাতে লিখে ছাপাখানায় যায়। তখনই হাতে লেখায় ভুল হয়েছিল। ‘‘এই ধরনের ভুল অমার্জনীয়। এর মানে গোটা ব্যবস্থায় গলদ রয়েছে। এর পরে প্রশ্নপত্রের শিরোনামে ইতিহাস লেখা থাকলেও প্রশ্নপত্র আদতে পদার্থবিদ্যার হতে পারে,’’ কটাক্ষ এক প্রবীণ অধ্যক্ষের।

ক্ষুব্ধ অধ্যক্ষদের বক্তব্য, এটা পরীক্ষা নিয়ামকের দফতরের ব্যর্থতার প্রমাণ। এক অধ্যক্ষের প্রশ্ন, কলেজ-পড়ুয়াদের কাছ থেকে পরীক্ষা ফি বাবদ বিশ্ববিদ্যালয় প্রতি বছর কয়েক কোটি টাকা পায়। তবু পড়ুয়াদের এমন হেনস্থা কেন? তাঁর দাবি, স্নাতক পরীক্ষা পরিচালনার জন্য পৃথক স্বশাসিত পর্ষদ গড়া হোক।

প্রশ্ন উঠছে, ছাপার বন্দোবস্ত-সহ গোটা ব্যবস্থা পরিবর্তনের কোনও প্রয়োজন ছিল কি? এখনও সেখানে যন্ত্র-সরঞ্জাম পড়ে রয়েছে। এ দিন তা পরিদর্শনে যান ইঞ্জিনিয়ারেরা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE