Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

চত্বরে ফাটেনি বাজি, রবীন্দ্র সরোবরে নিশ্চিন্তে পাখিরা

একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, কালীপুজো এবং তার পরের দিন রবীন্দ্র সরোবরে পক্ষীপ্রেমীরা যে সমীক্ষা করেছেন, তাতে প্রায় ১৭ রকমের পাখির দেখা মিলেছে।

অতিথি: সরোবরে ব্লু ক্যাপ্‌ড রক থ্রাশ

অতিথি: সরোবরে ব্লু ক্যাপ্‌ড রক থ্রাশ

কৌশিক ঘোষ
কলকাতা শেষ আপডেট: ৩০ অক্টোবর ২০১৯ ০২:৫০
Share: Save:

রবীন্দ্র সরোবর এলাকায় গত বছর কালীপুজোর পরেই পাখির সংখ্যা কমতে শুরু করেছিল। ছটে শব্দবাজি ফাটানোর পরে সরোবরে পাখি প্রায় চোখেই পড়েনি। কিন্তু এ বছর কালীপুজোর পরে অনেক পরিযায়ী পাখির দেখা মিলেছে বলে দাবি করেছেন পক্ষীপ্রেমীদের একাংশ। এ বার সরোবর চত্বরে বাজি ফাটাতে দেওয়া হয়নি বলেই পাখিরা সেখানে আশ্রয় নিয়েছে বলে মনে করছেন তাঁরা। পক্ষীপ্রেমীরা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, কেএমডিএ কর্তৃপক্ষের কাছে তাঁরা আলাদা করে আবেদন করবেন যাতে ছট পুজোর সময়েও কোনও ভাবেই সরোবরের ভিতরে এবং বাইরে বাজি ফাটানো না হয়।

একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, কালীপুজো এবং তার পরের দিন রবীন্দ্র সরোবরে পক্ষীপ্রেমীরা যে সমীক্ষা করেছেন, তাতে প্রায় ১৭ রকমের পাখির দেখা মিলেছে। তার মধ্যে ‘হোয়াইট টেলড রবিন’ অন্যতম। দীর্ঘ পাঁচ বছর পরে রবীন্দ্র সরোবরে ওই প্রজাতির দেখা মিলেছে বলেও তাঁরা দাবি করেন।

পক্ষীবিদ সৌরভ দে বলেন, ‘‘রবীন্দ্র সরোবরে প্রায়ই পাখি নিয়ে সমীক্ষা করা হয়। এ বছর কালীপুজো এবং দীপাবলির সময়ে যে সমীক্ষা করা হয়েছে তাতে অন্তত ১৭টি পরিযায়ী পাখির দেখা মিলেছে। এই ঘটনায় আমরা অবাকই হয়েছি। কারণ, কালীপুজোয় শব্দবাজির দাপটের জেরে পাখিরা বরাবরই রবীন্দ্র সরোবর ছেড়ে চলে যায়।’’

পক্ষীপ্রেমী এবং ওই স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের অন্যতম সদস্য সুদীপ ঘোষ বলেন, ‘‘আশপাশে প্রচুর বাজি ফাটলেও রবীন্দ্র সরোবর চত্বরের মধ্যে কোনও শব্দবাজি ফাটেনি বলেই জানি। সেই কারণেই পরিযায়ী পাখিরা নিরাপদ আশ্রয় পেয়ে আপাতত সরোবরেই রয়ে গিয়েছে। তবে প্রশ্ন থেকেই যায়, আসন্ন ছটপুজোয় বাজি ফাটলে কী অবস্থা হবে? কেএমডিএ-র কাছে এই বিষয়ে আবেদন করব।’’ তিনি জানান, প্রতি বছরই শীতে রবীন্দ্র সরোবরে পরিযায়ী পাখি আসে। কিন্তু গত চার বছর ধরে সরোবরে কালীপুজো এবং ছটের পরে তাদের দেখা মেলে না। গত বছর কালীপুজোর পরে মাত্র ১০টি প্রজাতির পরিযায়ী পাখির দেখা মিলেছিল।

সুদীপবাবু জানান, ‘হোয়াইট টেলড রবিন’ ছাড়াও গুরুত্বপূর্ণ প্রজাতির তালিকায় রয়েছে ‘টিকেলস থ্রাশ’, ‘ব্লু-ক্যাপড রক থ্রাশ’ এবং ‘তাইগা ফ্লাইক্যাচার’। এই পাখিদের দেখা মেলে মূলত হিমালয় অঞ্চলে। শীত শুরুর আগে ঠান্ডা জায়গা ছেড়ে উষ্ণতর অঞ্চলে পাখিরা আসতে শুরু করে।

রবীন্দ্র সরোবর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, জাতীয় পরিবেশ আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী সরোবর চত্বরে বাজি ফাটানো নিষিদ্ধ। কালীপুজো এবং দীপাবলির সময়ে কাউকে সরোবরের ভিতরে বাজি নিয়ে প্রবেশ করতে দেখলেই আটকানো হয়েছে। ছটপুজোতেও সরোবরে কোনও ভাবেই বাজি ফাটাতে দেওয়া হবে না বলে কর্তৃপক্ষের দাবি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Kali Puja 2019 Fire Cracker Rabindra Sarobar
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE