Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

দুই বাসের রেষারেষির জেরে প্রাণ গেল বৃদ্ধের

পুলিশ জানায়, এ দিন সন্ধ্যা পৌনে সাতটা নাগাদ দত্তবাগান মোড়ে ৭৯বি এবং ৯৩ রুটের দু’টি বেসরকারি বাস রেষারেষি করছিল। সেই সময়ে দু’টি বাসের মধ্যে পড়ে যান সাইকেল আরোহী বাপনবাবু। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বেপরোয়া গতিতে আসা ৭৯বি রুটের বাসটির ধাক্কায় ওই বৃদ্ধ সাইকেল নিয়ে ছিটকে পড়েন। তাঁর কোমরের উপর দিয়েই চলে যায় বাস।

মর্মান্তিক: ছিটকে পড়েছেন বাপনবাবু। সোমবার। ছবি: স্বাতী চক্রবর্তী

মর্মান্তিক: ছিটকে পড়েছেন বাপনবাবু। সোমবার। ছবি: স্বাতী চক্রবর্তী

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৫ মার্চ ২০১৯ ০২:৪৮
Share: Save:

ফের শহরে বাসের রেষারেষির জেরে মারা গেলেন এক জন। সোমবার সন্ধ্যার ওই ঘটনায় দু’টি রুটের বাসের মাঝে পড়ে গিয়ে সাইকেল আরোহী এক বৃদ্ধের মৃত্যু হয়। পুলিশ জানিয়েছে, বৃদ্ধের নাম বাপন দাস (৬৮)। তাঁর বাড়ি পাইকপাড়ার অনাথ দেব লেনে। পাতিপুকুরের কাছে দত্তবাগান মোড়ে বেলগাছিয়া রোডের উপর ওই ঘটনা ঘটে। উল্লেখ্য, চার দিন আগে গত বৃহস্পতিবারই শ্যামবাজারের কাছে ভূপেন বসু অ্যাভিনিউতে বাসের রেষারেষির শিকার হন এক যুবক।

পুলিশ জানায়, এ দিন সন্ধ্যা পৌনে সাতটা নাগাদ দত্তবাগান মোড়ে ৭৯বি এবং ৯৩ রুটের দু’টি বেসরকারি বাস রেষারেষি করছিল। সেই সময়ে দু’টি বাসের মধ্যে পড়ে যান সাইকেল আরোহী বাপনবাবু। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বেপরোয়া গতিতে আসা ৭৯বি রুটের বাসটির ধাক্কায় ওই বৃদ্ধ সাইকেল নিয়ে ছিটকে পড়েন। তাঁর কোমরের উপর দিয়েই চলে যায় বাস। সাইকেলটি দুমড়ে-মুচড়ে যায়। লোকজনের চিৎকারে ৭৯বি রুটের বাসের চালক পালিয়ে যায়। ট্র্যাফিক পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ওই বৃদ্ধকে উদ্ধার করে আর জি কর হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত বলে জানান।

পুলিশ জানায়, প্রথমে বৃদ্ধের পরিচয় জানা যায়নি। বৃদ্ধের সঙ্গে একটি ব্যাগ ছিল। তাতে কিছু বৈদ্যুতিক জিনিসপত্র ছিল। কিন্তু কোনও পরিচয়পত্র মেলেনি। ফলে প্রাথমিক ভাবে বাপনবাবুকে অজ্ঞাত পরিচয় হিসেবেই হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে ঘটনার খবর পেয়ে বৃদ্ধের এক আত্মীয় হাসপাতালে পৌঁছে বাপনবাবুকে শনাক্ত করেন। বাপনবাবুদের বৈদ্যুতিক জিনিপত্রের ব্যবসা। দুর্ঘটনার পরে ঘটনাস্থলে দাঁড়িয়ে বিক্ষোভ দেখান স্থানীয় মানুষ।

উল্লেখ্য গত সপ্তাহের মঙ্গলবার বাসের রেষারেষির জেরে রাজাবাজারে এক বৃদ্ধা গুরুতর আহত হন। গত বৃহস্পতিবার ভূপেন বসু অ্যাভিনিউয়ে দু’টি মিনিবাসের রেষারেষির বলি হন উলুবেড়িয়ার বাসিন্দা, বছর চৌত্রিশের দেবাশিস দাস। তার আগে বাসের রেষারেষিতে হাত বাদ যায় বাঘা যতীনের বাসিন্দা এক অধ্যাপকের। তারাতলাতেও রেষারেষি করতে থাকা একটি সরকারি বাস থেকে নামার সময়ে চাকার তলায় পড়ে এক বৃদ্ধার দু’টি পা কাটা যায়। পরে তাঁর

মৃত্যুও হয়।

গত এক সপ্তাহ ধরে শহরের বিভিন্ন প্রান্তে বাসের রেষারেষিতে পরপর মৃত্যুর ঘটনা ঘটলেও বাস চালকেরা সতর্ক হচ্ছেন না বলেই অভিযোগ। সম্প্রতি কলকাতার পুলিশ কমিশনার অনুজ শর্মাও ট্র্যাফিক আধিকারিকদের কাছে বাসের রেষারেষি ঠেকানোর পরামর্শ চেয়েছেন। বেপরোয়া গতিতে বাস চালালে লাইসেন্স সাময়িক ভাবে বাতিলের উপরেও জোর দিয়েছে পুলিশ। কিন্তু তাতে যে কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না এ দিনের ঘটনা তা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE