রাহুল গাঁধী
ঝুঁকে পড়েছেন বয়সের ভারে। সোজা হয়ে দাঁড়াতেও পারেন না। তার পরেও রক্ত দিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লিখেছেন প্রবীণ বদ্রী যাদব। জবাব অবশ্য মেলেনি।
নরেন্দ্র মোদীর ‘এলাকার’ সেই লোক এখন বিচার চাইতে এসেছেন রাহুল গাঁধীর কাছে!
প্রধানমন্ত্রীর নির্বাচনী কেন্দ্র বারাণসীতে বদ্রী যাদবের মতো প্রায় ১২০০ কৃষক নিজেদের জমি ফেরত চাইছেন। প্রধানমন্ত্রী, মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের কাছে বারবার দরবার করেও কোনও ফল মেলেনি। রক্ত দিয়ে মোদীকে চিঠিও লিখেছেন চাষিরা। বারাণসীতে মোদীর তৈরি করা ‘মিনি পিএমও’-তেও গিয়েছেন। কিন্তু জুটেছে লাঠির বাড়ি, ধাক্কা। অগত্যা এখন রাহুল গাঁধীর শরণাপন্ন হয়েছেন। দিল্লিতে এসে দেখাও করেন রাহুলের সঙ্গে। রাহুল জানিয়েছেন, তাঁদের পাশে থেকে এ লড়াইয়ে যোগ দেবেন তিনি।
ঘটনার শুরু অনেক বছর আগে। রাজনাথ সিংহ তখন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী। বারাণসী শহরের বাইরে ‘পরিবহণ নগর প্রকল্প’ হাতে নেয় রাজ্য সরকার। তাতে কোপ পড়ে চার গ্রামের ২১৪ একর জমির প্রায় ১২০০ কৃষকের উপর। চাষিদের অভিযোগ, তাঁদের সম্মতি ছাড়াই জমি কেড়ে নেওয়া হয়েছে। ক্ষতিপূরণও দেওয়া হয়নি। অথচ প্রায় দু’দশক হতে চলল, সেখানে কোনও প্রকল্পও হয়নি। আর সে জমিতে এখন চাষ করতে গেলে চাষিরা কোনও সরকারি সুবিধা পান না। তাই সে জমি ফেরত চান তাঁরা। ক্ষতিপূরণও চান ২০১৩ সালে পাশ হওয়া জমি অধিগ্রহণ আইনের আওতায়।
কংগ্রেসের এক নেতার মতে, প্রধানমন্ত্রী কথায় কথায় অমেঠী-রায়বরেলীর উন্নয়ন নিয়ে কটাক্ষ করেন। কিন্তু তিনি তো নিজের নির্বাচনী কেন্দ্রের কৃষকদের কথাই শোনেন না। এমনকি উত্তরপ্রদেশে তাঁর দলের সরকারও চাষিদের কথা শোনে না। কিন্তু রাহুল তাঁদের হয়ে লড়বেন। রামলীলা ময়দানে ক’দিন আগেই রাহুল বলেছেন, কংগ্রেস না থাকলে কৃষকদের সব জমি এত দিনে কেড়ে নিত মোদী সরকার। কংগ্রেসের ওই নেতার কথায়, ‘‘রাহুল নিজে বারাণসী যাবেন। আর এই বিষয়টি নিয়ে কৃষকদের আন্দোলনের নেতৃত্বও দেবেন।’’ দিল্লিতে বিজেপি অবশ্য এ নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানায়নি। তবে দলের এক সূত্র জানিয়েছে, চাষিদের বিষয়টি নিয়ে সরকারি স্তরে ভাবনাচিন্তা ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে। খাতায়-কলমে এই জমি সরকার আগে নিলেও কৃষকদের আন্দোলনের বাধায় বাস্তবে জমি অধিগ্রহণ পর্ব শেষ হয়নি। তা ছাড়া প্রকল্প শুরুর সময় যেখানে ক্ষতিপূরণের অঙ্ক ছিল একশো কোটি টাকার মতো, চাষিদের বর্তমান দাবি মানলে সেটাই এখন প্রায় ৯০০ কোটি টাকা। এই অবস্থায় সরকারকেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে, এই জমি নিয়ে তারা কোন পথে এগোতে চায়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy