Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

রাস্তা সারানোর দাবিতে অবরোধে বাসিন্দারা

এক দিকে বেহাল রাস্তা। অন্য দিকে দিন-রাত সব সময়েই ঘন কুয়াশার মতো ধুলো। এই অবস্থার প্রতিবাদে রাস্তা কেটে অবরোধে নামলেন বেড়াচাঁপার বাসিন্দারা।

বেহাল: এমনই খানাখন্দে ভরে গিয়েছে টাকি-বারাসত রোড। শনিবার। ছবি: সজলকুমার চট্টোপাধ্যায়

বেহাল: এমনই খানাখন্দে ভরে গিয়েছে টাকি-বারাসত রোড। শনিবার। ছবি: সজলকুমার চট্টোপাধ্যায়

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ০৪ নভেম্বর ২০১৮ ০১:৩৭
Share: Save:

এক দিকে বেহাল রাস্তা। অন্য দিকে দিন-রাত সব সময়েই ঘন কুয়াশার মতো ধুলো। এই অবস্থার প্রতিবাদে রাস্তা কেটে অবরোধে নামলেন বেড়াচাঁপার বাসিন্দারা। শনিবার সকাল থেকে বারাসত-টাকি রোড ঘণ্টা দু’য়েক অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখায় জনতা। পুলিশকে দাঁড়িয়ে থেকে রাস্তায় জল দেওয়ার ব্যবস্থা করতে বাধ্য করেন তাঁরা। এর পরে বিক্ষোভ তুলে নেন স্থানীয়েরা।

কলকাতা থেকে বারাসত হয়ে বসিরহাট সীমান্তে যাওয়ার একমাত্র পথ বারাসত-টাকি রোড। এই রাস্তার সম্প্রসারণ ও সারাইয়ের কাজ চলছে দু’বছরেরও বেশি সময় ধরে। কাজ শেষ হওয়া তো দূরের কথা, অনেক জায়গায় রাস্তা খোঁড়া অবস্থায় পড়ে রয়েছে। এমনকি, এখন পুরো কাজ বন্ধ রয়েছে। উত্তর ২৪ পরগনা জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ৪২ কিলোমিটার দীর্ঘ রাস্তাটি দু’টি পর্যায়ে সারানোর কাজ চলছে। প্রথম পর্যায়ে বারাসত থেকে বেড়াচাঁপা পর্যন্ত ২১ কিলোমিটার রাস্তার কাজ শুরু হলেও তা মাঝপথে থমকে রয়েছে। আর বেড়াচাঁপা থেকে টাকি পর্যন্ত বাকি ২১ কিলোমিটারের কাজ এখনও শুরু হয়নি। ফলে কার্যত বেহাল অবস্থা পুরো রাস্তারই।

এ দিন গোলমাল বাধে দ্বিতীয় পর্যায়ের অংশেই। জেলা পূর্ত দফতরের তরফে দুর্গাপুজোর আগে খানাখন্দ ভরাটের কাজ কিছুটা হয়েছিল বলে জানিয়েছেন এলাকার মানুষ। কিন্তু কিছু জায়গায় ইট দিয়ে খন্দ ভরাটের পরে সেই কাজও বন্ধ হয়ে যায়। তার ফলে বেড়াচাঁপা থেকে বসিরহাটগামী রাস্তা বড় বড় গর্তে ভরে গিয়েছে। ভোগান্তি পোহাচ্ছেন বাসযাত্রী থেকে পথচলতি মানুষ। ইট ও পাথরের গুঁড়োয় ঢেকেছে রাস্তা ও আশপাশের এলাকা।

সপ্তাহখানেক আগেও ওই এলাকার মানুষ রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখান। মহম্মদ রশিদুল তরফদার নামে এক বিক্ষোভকারী এ দিন জানান, তখন পুলিশ কথা দিয়েছিল, যত দিন রাস্তা মেরামতি সম্পূর্ণ না হচ্ছে, তত দিন ধুলো কমাতে জল দেওয়া হবে। কিন্তু তা দেওয়া হয়নি। তাঁর দাবি, ‘‘রাস্তার উপরে পড়ে থাকা পাথরের টুকরো গাড়ির চাকায় লেগে ছিটকে এসে পথচারীদের জখম করছে। রাস্তার পাশে থাকা বাড়ি-ঘর ধুলোয় ভরে গিয়েছে।’’ জলিল মোল্লা নামে এক স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, ‘‘রাস্তার ধুলোয় নানা চর্মরোগ দেখা দিচ্ছে।’’

এ দিন অবরোধের জেরে বিপত্তিতে পড়েন নিত্যযাত্রীরা। তবে পুলিশ অবরোধ তুলতে গেলে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে যোগ দেন আটকে থাকা বাসযাত্রীদের অনেকেই। তাঁদেরই এক জন মহিউদ্দিন দফাদার বলেন, ‘‘বাসের জানলার কাচ বন্ধ রেখেও রেহাই মেলে না। সারা শরীর ধুলোয় ভরে যায়।’’ বাপি মণ্ডল নামে এক বাসচালক বলেন, ‘‘খানাখন্দ কাটিয়ে যাত্রীদের সময়মতো পৌঁছে দিতে পারি না। গাড়ির যন্ত্রাংশেরও ক্ষতি হচ্ছে।’’ এর পরে পুলিশ দাঁড়িয়ে থেকে রাস্তায় জল দেওয়ার ব্যবস্থা করলে অবরোধ তুলে নেন স্থানীয়েরা।

জেলা পূর্ত দফতরের এগজিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার রাজা চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘বেড়াচাঁপা থেকে বসিরহাট পর্যন্ত রাস্তার দরপত্র হয়ে গিয়েছে। কালীপুজোর পরেই কাজ শুরু হবে। এ দিন অবরোধকারীদের সঙ্গে কথা হয়েছে। তত দিন ধুলো যাতে না জমে, তার জন্য নিয়মিত জল দেওয়া হবে।’’ বারাসত থেকে বেড়াচাঁপা পর্যন্ত রাস্তার প্রথম পর্যায়ের কাজ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘বেশ কিছু জায়গায় রাস্তা সম্প্রসারণের কাজ চলছে। কিছু জায়গায় বিদ্যুৎস্তম্ভ সরানো নিয়ে সমস্যা ছিল। সেই সমস্যা মিটেছে। পুরো রাস্তার কাজ শীঘ্রই শুরু হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Protest Road Blockade Repair
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE