কলকাতা বিমানবন্দর। —ফাইল চিত্র।
রানওয়ে ছোঁয়ার সময়ে বিমানের গড় গতি থাকে ঘণ্টায় ২০০ কিলোমিটারেরও বেশি। কলকাতার প্রধান রানওয়ে থেকে বেরোনোর যে ট্যাক্সিওয়ে রয়েছে, সেখানে ঢুকতে গেলে গতি শূন্য করে ৯০ ডিগ্রি ঘুরে তবে ঢুকতে হয়। ফলে খুব কম পরিসরে ব্রেক কষে বিমানকে দাঁড় করাতে হয়। এতে সময় যেমন বেশি লাগে, জ্বালানিও খরচ হয় বেশি। বিমানবন্দরের কর্তাদের মতে, জ্বালানি যত পুড়বে, ততই পাল্লা দিয়ে বাড়বে দূষণও।
দীর্ঘদিন ধরেই এই সমস্যার একটা সমাধান খোঁজা হচ্ছিল। প্রধান রানওয়েতে নামার পরে তাকে খালি করে চলে যাওয়ার জন্য এত দিন চারটি ট্যাক্সিওয়ে ছিল। আলফা, ব্রাভো, চার্লি ও ডেলটা। ব্রাভো এবং চার্লির মাঝখানে ‘রোমিয়ো’ নামে একটি নতুন ট্যাক্সিওয়ে তৈরি করে পরীক্ষা চলছিল, যাতে রানওয়ে থেকে বেরোনোর সময়ে বিমানকে একেবারে থেমে যেতে না হয়। পরীক্ষায় দেখা গিয়েছে, বিমানের গতি ঘণ্টায় ৯০ কিলোমিটার থাকলেও সে অনায়াসে ‘রোমিয়ো’ দিয়ে বেরিয়ে যেতে পারছে। এ বার নতুন সেই ট্যাক্সিওয়ে ব্যবহারের জন্য দিল্লির সবুজ সঙ্কেত চাইল কলকাতা।
কলকাতা থেকে বাড়ছে উড়ান। যাত্রীর সংখ্যাও বাড়ছে। সেই কারণে বাড়ানো হচ্ছে টার্মিনাল। আরও কী ভাবে বেশি সংখ্যক বিমানকে জায়গা দেওয়া যায়, তার পরিকল্পনাও চলছে। বিমানবন্দরের কর্তাদের কথায়, একটি বিমান যত তাড়াতাড়ি রানওয়ে খালি করে দিতে পারবে, তত আরও বেশি সংখ্যক বিমানকে রানওয়ে ব্যবহারের সুযোগ করে দেওয়া যাবে। ‘রোমিয়ো’ চালু হয়ে গেলে কলকাতায় নামার আগে কোনও বিমানকে আকাশে বেশি ক্ষণ অপেক্ষা করতে হবে না। বিমান কলকাতা থেকে তাড়াতাড়ি উড়েও যেতে পারবে।
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
পরীক্ষা করে দেখা গিয়েছে, কলকাতার প্রধান রানওয়েতে নামার পরে অন্য ট্যাক্সিওয়ে দিয়ে বেরোতে বেরোতে একটি বিমানের সময় লাগছে প্রায় ৮০ সেকেন্ড। আর ‘রোমিয়ো’ ব্যবহার করলে বিমান ৫০ সেকেন্ডের মধ্যে রানওয়ে খালি করে বেরিয়ে আসতে পারছে। এক কর্তা জানিয়েছেন, এমনিতে প্রতি ঘণ্টায় রানওয়ে থেকে ৩০টির মতো বিমান ওঠানামা করতে পারে। আর ‘রোমিয়ো’ চালু হলে সেই সংখ্যাটি বেড়ে ৩৫-এর উপরে চলে যাচ্ছে।
কলকাতা বিমানবন্দর সূত্রের খবর, কোনও বিমান যখন প্রধান রানওয়ের বিরাটির দিক থেকে নামছে, তখনই ‘রোমিয়ো’ ব্যবহারের সুবিধা পাওয়া যাচ্ছে। কারণ, উত্তর দিক থেকে নেমে দক্ষিণের দিকে আসার সময়ে ডাইনে দক্ষিণ-পশ্চিমের দিকে চলে গিয়েছে ‘রোমিয়ো’। সেটি দ্বিতীয় রানওয়ে পার হয়ে চার্লি ট্যাক্সিওয়েতে গিয়ে মিশছে। গতি কমাতে কমাতে বিমান দ্বিতীয় রানওয়ে পেরিয়ে আলফা ট্যাক্সিওয়েতে উঠে যেতে পারছে। কিন্তু হাওয়ার দিক বদলের কারণে কখনও কখনও রাজারহাটের দিক থেকেও বিমান নামিয়ে আনতে হয়। তখন রোমিয়ো ব্যবহারের সুবিধা পাওয়া যাবে না।
আবার প্রধান রানওয়ে বন্ধ রেখে দ্বিতীয় রানওয়ে দিয়ে বিমান ওঠানামা করলে তখনও ‘রোমিয়ো’র সুবিধা পাওয়া যাবে না। তবে কলকাতায় বছরের বেশির ভাগ সময়েই যেহেতু প্রধান রানওয়ের বিরাটির দিক থেকে বিমান নামে, তাই পাকাপাকি ভাবে ‘রোমিয়ো’ চালু হলে বেশি সংখ্যায় বিমান ওঠানামা করতে পারবে কলকাতা থেকে। এমনটাই মনে করছেন বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy