Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

ইংরেজি, বিজ্ঞানের বাড়তি দায়িত্ব কমিটিকে

প্রাথমিক স্তর থেকেই পড়ুয়াদের মধ্যে ইংরেজিতে পড়া ও লেখার অভ্যাস তৈরি-সহ আরও বাড়তি দায়িত্ব দেওয়া হল স্কুলশিক্ষা দফতরের বিশেষজ্ঞ কমিটিকে। সূত্রের খবর, গত অগস্টে ওই কমিটির মেয়াদ শেষ হয়ে যায়। ওই মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে আগামী ডিসেম্বর পর্যন্ত।

প্রতীকী ছবি

প্রতীকী ছবি

সুপ্রিয় তরফদার
শেষ আপডেট: ০৩ অক্টোবর ২০১৮ ০২:৫৩
Share: Save:

দৈনন্দিন জীবনে প্রয়োজন বাড়ছে ইংরেজি ভাষার। পাল্লা দিয়ে কাজের ক্ষেত্রেও ইংরেজি ভাষায় সড়গড় প্রার্থীদের চাহিদা বাড়ছে। উচ্চশিক্ষাতেও ইংরেজি অপরিহার্য। অথচ শিক্ষামহলের একাংশ জানাচ্ছেন, ইংরেজি নিয়ে অনেক সময়েই বাংলা মাধ্যমের পড়ুয়াদের মধ্যে ভীতি কাজ করে। ফলে বাংলা মাধ্যম স্কুলের পড়ুয়ারা বেসরকারি স্কুলের পড়ুয়াদের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা শিক্ষামহলের।

এই পরিস্থিতিতে প্রাথমিক স্তর থেকেই পড়ুয়াদের মধ্যে ইংরেজিতে পড়া ও লেখার অভ্যাস তৈরি-সহ আরও বাড়তি দায়িত্ব দেওয়া হল স্কুলশিক্ষা দফতরের বিশেষজ্ঞ কমিটিকে। সূত্রের খবর, গত অগস্টে ওই কমিটির মেয়াদ শেষ হয়ে যায়। ওই মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে আগামী ডিসেম্বর পর্যন্ত।

বিশেষজ্ঞ কমিটির চেয়ারম্যান অভীক মজুমদার বলেন, ‘‘রাজ্য সরকার স্কুলশিক্ষার সার্বিক মানোন্নয়নের জন্য এই কমিটি গঠন করেছিল। ইতিমধ্যে আরও বেশ কিছু নতুন দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। সেগুলি নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সম্পূর্ণ করতে আমরা বদ্ধপরিকর।’’

কমিটিকে নতুন যে সব দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে, তার মধ্যে মূলত ইংরেজি ও বিজ্ঞান শিক্ষার উন্নতির পাশাপাশি নিরবিচ্ছিন্ন মূল্যায়নের উপরে বাড়তি জোর দেওয়া হয়েছে। প্রধান যে পাঁচটি কাজকে পাখির চোখ করা হয়েছে, সেগুলি হল পড়ুয়াদের ইংরেজিতে লেখা ও পড়ার অভ্যাস তৈরি করা, পিছিয়ে পড়া পড়ুয়াদের মূল স্রোতে নিয়ে আসা, ষষ্ঠ শ্রেণি থেকে হাতে-কলমে বিজ্ঞান শিক্ষা, নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণিতে পড়ানোর পদ্ধতির আরও উন্নয়ন এবং নিরবিচ্ছিন্ন মূল্যায়নে বাড়তি নজরদারি।

অভীকবাবু জানান, ইংরেজিতে সার্বিক উন্নয়নের জন্য একটি ‘ওয়ার্ক বুক’ তৈরি করতে চলেছে কমিটি। তৃতীয় শ্রেণি থেকে অষ্টম শ্রেণিতে ব্যবহার করা হবে ওই বই। ইংরেজির দক্ষতা যাচাই ও অনুশীলনের অভ্যাস তৈরির দিকে লক্ষ্য রেখে তৈরি হবে বইটি। পড়ুয়াদের মধ্যে ইংরেজি ভাষার ব্যবহার বাড়ানোর জন্যই এই পদক্ষেপ। ছাত্রছাত্রীদের সার্বিক উন্নতির জন্য প্রথম কাজ হিসেবে ইংরেজি শিক্ষার উন্নয়নকে বেছে নেওয়া হয়েছে বলে জানাচ্ছেন অভীকবাবু।

এ ছাড়াও, যে সব পড়ুয়ারা পিছিয়ে পড়ছে তাদের জন্য পৃথক ক্লাসের ব্যবস্থা করা হবে। এতে স্কুলছুটের হার কমবে বলে আশা কমিটির সদস্যদের। ওই বিশেষ ক্লাসে কী ভাবে পড়াতে হবে এবং পড়ুয়াদের মনোযোগ আকর্ষণ করতে হবে তার রূপরেখা তৈরি হচ্ছে শিক্ষকদের জন্য। বিজ্ঞানের প্রতি পড়ুয়াদের আগ্রহ কমে যাচ্ছে বলে জানাচ্ছেন অভীকবাবু। বর্তমানে একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণিতে বিজ্ঞান বিষয়গুলির সঙ্গে পরীক্ষাগার ব্যবহার অপরিহার্য। ষষ্ঠ শ্রেণী থেকেই পরীক্ষাগারের ব্যবহার শুরু করা যায় কি না, তা নিয়ে ভাবনাচিন্তা চলছে। হাতে-কলমে শিখতে পারলে পড়ুয়াদের বিষয়গুলির প্রতি আগ্রহ বাড়তে পারে বলে মত কমিটির। এ ছাড়াও ওই কমিটি প্রতিটি জেলার স্কুল ইনস্পেক্টরদের নিরবিচ্ছিন্ন মূল্যায়ন চালিয়ে নিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে প্রশিক্ষণ দেবে।স্কুল শিক্ষা দফতরের এক কর্তা জানান, উৎকর্ষের কোনও শেষ নেই। তাই কিছু মাস অন্তর শেখার নতুন প্রক্রিয়া চালু করতে হবে। সম্প্রতি এক রিপোর্টে দেখা যায়, অনেক শিক্ষক ক্লাসে শুধু বই দেখে পড়ে যান। পড়ুয়ারা কতটা শিখল, তা নিয়ে ভাবিত নন শিক্ষকদের একাংশ। সেই সমস্যার সমাধানে নতুন ভাবে কাজ শুরু করছে বিশেষজ্ঞ কমিটি। তবে এই প্রকল্পগুলি চালু হওয়ার পরে বাস্তবে কতটা ইতিবাচক প্রয়োগ করা যাবে তা নিয়ে সন্দিহান শিক্ষামহলের একাংশ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

School Committee English Science
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE