Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

দুর্ঘটনার ভয় নিয়েই রোজ চলছে স্কুল

যেখানে স্কুলের পরিচ্ছন্নতা বাড়াতে ও উন্নত পরিকাঠামোর উপরে বাড়তি নজর দিচ্ছে রাজ্য সরকার, সেখানে এই স্কুলের এমন অবস্থার জন্য আইনি জটের দোহাই দিচ্ছেন স্কুলশিক্ষা দফতরের এক কর্তা। টালির ছাউনির ছ’টি ঘর থাকলেও বর্তমানে তিনটি ঘর অকেজো হয়ে পড়ে রয়েছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ০১ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০১:৫৮
Share: Save:

টালির ছাউনির এক দিক ভেঙে যাওয়ায় বৃষ্টি হলেই জল ঢোকে ঘরে। দেওয়ালের পলেস্তারা খসে আলগা হয়ে গিয়েছে ইট। গোটা চত্বরে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে আবর্জনা। ধুলোর আস্তরণ জমেছে পাখা আর টিউবলাইটের উপরেও। এটা কোনও পরিত্যক্ত বাড়ি নয়, ভবিষ্যৎ গড়ার কারখানা। সেখানে বসেই ক্লাস করছে কয়েক জন পড়ুয়া। মেটিয়াবুরুজের রাজাবাগান থানা এলাকায় প্রাথমিক স্তরের শ্রমিক হিন্দি তেলুগু বিদ্যালয়ের এমন বেহাল দশা দেখলে চমকে উঠতে হয়।

যেখানে স্কুলের পরিচ্ছন্নতা বাড়াতে ও উন্নত পরিকাঠামোর উপরে বাড়তি নজর দিচ্ছে রাজ্য সরকার, সেখানে এই স্কুলের এমন অবস্থার জন্য আইনি জটের দোহাই দিচ্ছেন স্কুলশিক্ষা দফতরের এক কর্তা। টালির ছাউনির ছ’টি ঘর থাকলেও বর্তমানে তিনটি ঘর অকেজো হয়ে পড়ে রয়েছে। বাকি তিনটি ঘরকে কাঠের পাটাতন দিয়ে ভাগ করে আলাদা শ্রেণিকক্ষ করা হয়েছে। টালির নীচে ছড়িয়ে গিয়েছে লতানো গাছ। নড়বড়ে হয়ে গিয়েছে কড়ি-বরগা। শিক্ষকদের নির্দিষ্ট ঘর নেই। অপরিচ্ছন্ন হয়ে থাকা স্কুল চত্বরেই মিড-ডে মিলের রান্না হয়। যেটা অস্বাস্থ্যকর বলে মানছেন আশপাশের লোকজনও।

স্কুলশিক্ষা দফতর সূত্রের খবর, পঠনপাঠনের পাশাপাশি রাজ্যের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে পরিবেশ পরিচ্ছন্ন রাখতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। স্কুলবাড়ি রং করতে টাকাও ধার্য করেছিল দফতর। তা সত্ত্বেও প্রাথমিক এই স্কুল এমন বেহাল অবস্থায় পড়ে রয়েছে। স্থানীয় সূত্রের খবর, এক সময়ে এই স্কুলে আড়াইশো পড়ুয়া ছিল। কিন্তু ভেঙে পড়া এমন একটি স্কুলে ছেলেমেয়েকে পড়াতে নারাজ বাসিন্দারা। তাই পড়ুয়ার সংখ্যা এখন হাতে গোনা। যে কোনও মুহূর্তে স্কুলে দুর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কা নিয়েই চলছে ক্লাস।

রাজ্য সর্বশিক্ষা মিশনের শেষ রিপোর্টে রাজ্যের বহু স্কুলের খারাপ অবস্থার কথা সামনে এসেছিল। কিন্তু খাস কলকাতায় যে এমন স্কুল থাকতে পারে তা ভেবে অবাক অনেকেই। জেলা স্কুলশিক্ষা দফতরের এক কর্তার দাবি, বাড়িটি আইনি জটে আটকে রয়েছে। আপাতত ওই স্কুলের পড়ুয়াদের অন্য স্কুলে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে। জট কাটলে ফের ওই স্কুল ভবন সংস্কার করা হতে পারে।

যদিও স্কুলের এক শিক্ষক জানান, এলাকায় স্কুলটি জনপ্রিয় ছিল। স্থানীয় মানুষ ওই স্কুল ছাড়তে চাইছেন না। সব শুনে ওই কর্তা বলেন, ‘‘তা হলে আমাদের কিছু করার নেই। স্কুলবাড়িটি ভাড়ায় রয়েছে। তা নিয়েই আইনি সমস্যা। জট না কাটলে কিছু করা যাবে না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

School Education Infrastructure
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE