পড়ুয়াদের সঙ্গে বীরেন্দ্রনাথ দাস। মঙ্গলবার। নিজস্ব চিত্র
দু’টুকরো করা একটি আলু, তামা ও দস্তার পাত আর কিছুটা তার। তাই দিয়েই চলল ঘড়ি, ব্যাটারি ছাড়াই। কী ভাবে এমনটা সম্ভব হল, তা ব্যাখ্যা করে দিতে চমৎকৃত খুদেদের দলটা।
রেল কর্মচারীদের সংগঠন, বান্ধব শিয়ালদহের উদ্যোগে টাকি হাউস স্কুলে চলছে বিজ্ঞান চেতনার আসর। সেখানে খুদে পড়ুয়াদের হাতেকলমে বিজ্ঞানের পাঠে দিতে এসেছেন বিবেকানন্দ কলেজের পদার্থবিজ্ঞানের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক বীরেন্দ্রনাথ দাস। তিনি অবসর নিয়েছেন প্রায় কুড়ি বছর আগে। কিন্তু এই আশি ছুঁইছুঁই বয়সেও পড়ুয়াদের থেকে কোনও ভাবেই দূরে থাকতে পারেন না তিনি। তবে কলেজ পড়ুয়া নয়, তিনি এখন স্কুল পড়ুয়াদের শিক্ষক। দেশের বিভিন্ন প্রান্তে স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের হাতেকলমে বিজ্ঞানের প্রশিক্ষণ দিয়ে বেড়ান তিনি।
মঙ্গলবার ওই শিবিরে অংশগ্রহণ করেছে হেয়ার স্কুল ও সংস্কৃত কলেজিয়েট স্কুলের নবম ও দশম শ্রেণির ছাত্ররা। বিজ্ঞানের যা পাঠ্যক্রম আছে, তার বেশ কিছুটা অংশ বৈজ্ঞানিক পরীক্ষার মাধ্যমে বুঝিয়ে দিচ্ছিলেন বীরেন্দ্রবাবু। তিনি বলেন, ‘‘ছোট ছোট পড়ুয়াদের বিজ্ঞান নিয়ে সচেতন করতে খুব ভাল লাগে। বিজ্ঞান নিয়ে এই বয়সে যদি ওদের উৎসাহিত করা যায়, তা হলে ওরা বড় হয়ে গবেষণায় উৎসাহিত হবে। দেশে বিজ্ঞানচর্চা বাড়বে।’’ তিনি জানান, এই সব পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার জন্য যে সব জিনিস তিনি ব্যবহার করছেন, তা সবই সহজলভ্য।
তিনি যেন ‘থ্রি ইডিয়টস’ সিনেমার আমির খান অভিনীত চরিত্র র্যাঞ্চো। যিনি বিজ্ঞানের পাঠ্যবইয়ের কঠিন বিষয়কে সহজ ভাবে বুঝিয়ে দেন, দেখিয়ে দেন। বুঝিয়ে দেন, বিজ্ঞান শুধু পড়ার বইয়ে নয়, ছড়িয়ে আছে সর্বত্র।
ধূমপানের ক্ষতিকর দিকের মতো বিষয়ও বুঝিয়ে দিচ্ছিলেন বীরেন্দ্রবাবু। একটি সিগারেট খেলে ফুসফুসে কতটা নিকোটিন কতটা জমা হতে পারে, তা খুদে পড়ুয়ারা পরীক্ষা করে দেখে রীতিমতো অবাক। তারা জানাল, বিজ্ঞাপনে তারা সিগারেটের অপকারিতা সম্পর্কে জেনেছে। কিন্তু এই প্রথম সরাসরি দেখতে পেল, কী ভাবে ফুসফুসে নিকোটিন জমা হয়। জানাল, আত্মীয়স্বজন, পাড়া-প্রতিবেশীদেরও এই পরীক্ষা করে ওরা বুঝিয়ে দেবে সিগারেটের ক্ষতিকর দিক।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy