Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

অপহরণে গ্রেফতার চার পুলিশকর্মী-সহ ছ’জন

লাভপুরের ফুল্লরাতলা সংলগ্ন এলাকায় তল্লাশি চালিয়ে গ্রেফতার করা হয় ছ’জন অপহরণকারীকে।

আটক করা হয়েছে ‘এক্স আর্মি’ লেখা এই গাড়িটি। নিজস্ব চিত্র

আটক করা হয়েছে ‘এক্স আর্মি’ লেখা এই গাড়িটি। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১২ অক্টোবর ২০১৯ ০১:০৭
Share: Save:

অপহরণ ও ডাকাতিতে জড়িত থাকার অভিযোগে জুলাই মাসে কলকাতা পুলিশের দুই কর্মীকে গ্রেফতার করেছিল মুচিপাড়া থানা। তার পরে কেটেছে ঠিক তিন মাস। ফের অপহরণের অভিযোগ উঠল কলকাতা পুলিশের দুই কনস্টেবলের বিরুদ্ধে। তারা ছাড়া রাজ্য সশস্ত্র পুলিশ ও সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) দুই কর্মীও অপহরণে অভিযুক্ত। এই ঘটনায় লাভপুর থেকে শুক্রবার ছ’জনকে গ্রেফতার করেছে কলকাতা পুলিশ। উদ্ধার করা হয়েছে অপহৃত ব্যক্তিকেও। ধৃত বিএসএফ জওয়ানের কাছ থেকে মিলেছে একটি সেভেন এমএম আগ্নেয়াস্ত্র।

লালবাজারের খবর, বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে তিনটে নাগাদ ১০০ ডায়ালে ফোন করে এক ব্যক্তি জানান, চাঁদনি চক মেট্রো স্টেশন লাগোয়া একটি শপিং মলের সামনে থেকে এক যুবককে জোর করে গাড়িতে তুলে নিয়ে চম্পট দিয়েছে কয়েক জন। লালবাজার থেকে ফোন যায় বৌবাজার থানায়। সেখানকার পুলিশ শপিং মলের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে জানতে পারে, গাড়িটির সামনে লেখা রয়েছে ‘এক্স আর্মি’। অপহরণের পরে সেটিকে বিদ্যাসাগর সেতুর দিকে যেতে দেখা গিয়েছে।

লালবাজারের এক কর্তা শুক্রবার জানান, শপিং মলের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ থেকে ওই গাড়ির নম্বরও জানা যায়। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গাড়িটি বীরভূমের লাভপুরের। সেই খবর জানানো হয় বীরভূম পুলিশকে। জেলার পুলিশ সুপার শ্যাম সিংহ জানান, কলকাতা পুলিশের থেকে খবর পাওয়ার পরেই বৃহস্পতিবার রাতে শুরু হয় নাকা তল্লাশি। তখনই লাভপুরে গাড়িটিকে আটক করা হয়।

এর পরেই এ দিন লাভপুর থানায় পৌঁছয় বৌবাজার থানা এবং কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের একটি দল। লাভপুরের ফুল্লরাতলা সংলগ্ন এলাকায় তল্লাশি চালিয়ে গ্রেফতার করা হয় ছ’জন অপহরণকারীকে। উদ্ধার হন অপহৃত ব্যক্তিও।

পুলিশ জানায়, ধৃতদের নাম অভিজিৎ ঘোষ, শ্যামল মণ্ডল, জাকির খান, মহম্মদ হানিফ, মনজারুল হক ও আমির হোসেন। এদের মধ্যে শ্যামল ও জাকির কলকাতা পুলিশের কমব্যাট ফোর্সের কনস্টেবল। হানিফ রয়েছে রাজ্য সশস্ত্র পুলিশে। আমির সীমান্তরক্ষী বাহিনীর জওয়ান। অভিজিৎ ও শ্যামলের বাড়ি ইংলিশবাজারে। জাকির বীরভূমের আহমেদপুরের

বাসিন্দা। বাকিদের বাড়ি লাভপুরে। উদ্ধার হওয়া ব্যক্তির নাম সৌমেন বসু। তাঁর বাড়ি সোদপুরে।

কেন অপহরণ? পুলিশের দাবি, জেরায় ধৃতেরা অভিযোগ করেছে, সৌমেন বিভিন্ন সরকারি পদে চাকরি পাইয়ে দেওয়ার নাম করে অভিজিৎ ও আরও কয়েক জনের থেকে এক বছরেরও বেশি সময় ধরে কম-বেশি এক কোটি টাকা নিয়েছিলেন। কিন্তু, কারও চাকরি হয়নি। কেউ টাকাও ফেরত পাননি। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, এর পরেই সৌমেনকে অপহরণের ছক

কষে ধৃতেরা।

অভিজিতের সঙ্গে শ্যামলের যোগাযোগ ছিল। অভিজিৎ বিষয়টি তাকে জানায়। শ্যামল বাকিদের সঙ্গে যোগাযোগ করে। ছ’জনের মধ্যে চুক্তি হয়, সৌমেনের কাছ থেকে যত টাকা জোগাড় করা যাবে, তার একটি ভাগ শ্যামলেরা নিয়ে নেবে। বাকি টাকা নেবে অভিজিৎ। পাশাপাশি পরিকল্পনা করা হয়, আরও কিছু টাকা দিলে যদি চাকরি হয়, সেই টোপ দিয়ে সৌমেনকে ডেকে পাঠানো হবে চাঁদনি চক মেট্রো স্টেশন লাগোয়া শপিং মলের সামনে।

পুলিশ জানিয়েছে, ধৃত পুলিশকর্মীদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। আজ, শনিবার তাদের ব্যাঙ্কশাল আদালতে হাজির

করানো হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Crime Kidnap Police Arrest
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE