সল্টলেকের সেই বাড়ি। নিজস্ব চিত্র।
সল্টলেকের বুকে কয়েক মাস ধরে রমরমিয়ে চলছিল দেহ ব্যবসা। তিন তলা বাড়ির গোটাটাই জুড়ে চলছিল এই মধুচক্র। অথচ পাশে থেকেও টের পাননি বাড়ির মালিক। সিএল ব্লকের লোকজন জানতেন ৬০ নম্বর ওই বাড়িতে গেস্ট হাউস আছে। সেই সূত্রেই দিনে রাতে বাইরের লোক জনের যাতায়াত।
তাঁদের ভুল ভাঙে শুক্রবার ভোর রাতে যখন সিআইডি এবং বিধাননগর পূর্ব থানার যৌথ বাহিনী গোটা বাড়ি ঘিরে ফেলে তল্লাশি চালানো শুরু করেন।
সিআইডির গোয়েন্দাদের দাবি, সিএল ব্লকের ৬০ নম্বর বাড়িতে বেশ কয়েকমাস ধরে এই কারবার চলছে, গ্রিন শেল্টার গেস্ট হাউসের আড়ালে। এর আগে একটি নাবালিকা পাচারের তদন্তে প্রথম উঠে আসে এই গেস্ট হাউসের নাম। সেই সূত্র ধরেই তদন্তকারীরা জানতে পারেন, ওই গেস্ট হাউসে, রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে নাবালিকাদের নিয়ে আসা হত।
তদন্তকারীদের দাবি, মূলত চাকরি এবং বিয়ের টোপ দিয়ে রাজ্য এবং রাজ্যের বাইরে থেকেও এই মেয়েদের নিয়ে আসত। সেই সব দালালরা আবার কলকাতার দালালদের কাছে বিক্রি করে দিত এই নাবালিকাদের।
আরও খবর: যানজটের বিরুদ্ধে অভিনব প্রতিবাদ, ঘোড়ায় চড়ে অফিসে পৌঁছলেন যুবক!
ভিএইচপি, বজরঙ দলকে ধর্মীয় জঙ্গি সংগঠন তকমা দিল সিআইএ
অভিযুক্ত তন্ময়, বাবুসোনা, রাজু, তুহিন ও সন্দীপ। নিজস্ব চিত্র।
তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, এই বাড়ির মালিক এক জন মহিলা। তিনি কয়েক বছর আগে এই বাড়িটি গেস্ট হাউসের জন্য ভাড়া দিয়েছিলেন। কৃষ্ণা দেবনাথ নামে বারাসতের এক মহিলা মূল দালালের কাজ করত। তার মাধ্যমেই নাবালিকাদের এই গেস্ট হাউসে নিয়ে আসা হত। এখানে নাবালিকাদের আটকে রেখে বাধ্য করা হত দেহ ব্যবসায়। রাজি না হলে মারধরও করা হত বলে অভিযোগ।
এই বাড়িটি সিল করে দেওয়া হয়। নিজস্ব চিত্র।
এই চক্রের সঙ্গে যুক্ত ছিল গেস্ট হাউসের ম্যানেজার সন্দীপ মিশ্র। পুরুলিয়ার বাসিন্দা এই ম্যানেজার দালালের কাজও করত। সেই সঙ্গে চক্রে সামিল ছিল, পূর্ব মেদিনীপুরের বাবুসোনা মাঝি, রাজু দাস এবং তুহিন বন্দ্যোপাধ্যায়। এরা প্রত্যেকেই গেস্টহাউসের কর্মী। তদন্তকারীরা কৃষ্ণা ছাড়াও তন্ময় সাহা নামে আরও এক জন পাচারকারীকে পাকড়াও করেছেন। সিআইডি সূত্রে জানা গিয়েছে, ব্যবসায়ী থেকে বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থার কর্তারা এই মধুচক্রে যাতায়াত করতেন। শুক্রবারের হানায়, এই ছ’জনকে গ্রেফতারের পাশাপাশি ছ’জন নাবালিকাকেও উদ্ধার করেছেন গোয়েন্দারা। তাঁদের সরকারি হোমে রাখা হচ্ছে। ডিআইজি সিআইডি নিশাদ পারভেজ জানিয়েছেন, “উদ্ধার হওয়া নাবালিকাদের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে। ধৃতদের জেরা করে চক্রের বাকি পাণ্ডাদের হদিশ পাওয়ার চেষ্টা চালানো হচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy