আন্দোলনরত ছাত্রদের শারীরিক অবস্থা নিয়ে ‘উদ্বেগ’ প্রকাশ করে বিবৃতি দিলেন শঙ্খ ঘোষ।
কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের আন্দোলন নিয়ে এখনও কোনও রফাসূত্র মিলল না। আন্দোলনকে সমর্থন জানিয়ে রবিবার কনভেনশন করলেন বিশিষ্ট জনেরা। আন্দোলনরত ছাত্রদের শারীরিক অবস্থা নিয়ে ‘উদ্বেগ’ প্রকাশ করে বিবৃতি দিলেন শঙ্খ ঘোষ। অন্য দিকে, সরকারও জানিয়ে দিল ছাত্রদের নতুন হস্টেলে যাওয়ার দাবি মেনে নেওয়া হবে না।
স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিকর্তা দেবাশিস ভট্টাচার্য এ দিন জানিয়েছেন, হস্টেল যাতে বাসযোগ্য হয়, তার জন্য প্রয়োজনীয় সমস্ত সংস্কারের কাজ করা হবে। ছাত্রদের অনশনকে তিনি ‘প্রতীকী’ আখ্যা দিয়ে অনুরোধ করেছেন, ছাত্ররা যেন অনশন তুলে নেন। অনশনকে প্রতীকী বলায় নতুন করে ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে ছাত্রদের মনে। সরকারি সূত্রের খবর, অনশনরত ছাত্রদের নতুন হস্টেলে যাওয়ার দাবিটি কোনও ভাবেই মানার জায়গায় নেই স্বাস্থ্য প্রশাসন। নতুন হস্টেল শুধু প্রথম বর্ষের ছাত্রদের জন্যই বরাদ্দ করা হবে। অন্য ছাত্রদের তা দেওয়ার কোনও প্রশ্নই নেই।
মেডিক্যালের কনভেনশনে এ দিন পাঠ করা হয় শঙ্খবাবুর বিবৃতি। তিনি লিখেছেন, ‘কোনো সংগত দাবি মেটানোর জন্য অনশন বা ঘেরাওকে ব্যক্তিগত ভাবে আমি খুব পছন্দ করি না। কিন্তু কোনো কোনো দাবি নিয়ে আন্দোলন যখন হয়, তখন তার সপক্ষে কথা বলতে চাই।মেডিক্যাল কলেজের অনশনরত এই ছাত্রদের দাবি মেটানোর জন্য কর্তৃপক্ষ এখনো কোনো আয়োজন করছেন না কেন, তা আমি বুঝতে পারি না। অন্য সকলের সঙ্গে মিলে আমিও এই অনুরোধ জানাই, যত দ্রুত সম্ভব সমস্যাটির মীমাংসার জন্য কর্তৃপক্ষ কোনো ব্যবস্থা নিন। কোনো কোনো ছেলে এরই মধ্যে শারীরিক যে অবস্থায় পৌঁছেছে, সেটা বিশেষ ভাবে উদ্বেগজনক। আমরা সকলেই দুশ্চিন্তায় আছি।’
মেডিক্যাল কলেজে চলছে গণকনভেনশন। নিজস্ব চিত্র
ছাত্রদের পাশে দাঁড়াতে গিয়েছিলেন বিভাস চক্রবর্তী, রুদ্রপ্রসাদ সেনগুপ্ত, পরিচালক কমলেশ্বর মুখোপাধ্যায়, অনীক দত্ত, অভিনেতা কৌশিক সেন, সঙ্গীত পরিচালক দেবজ্যোতি মিশ্র-সহ বিশিষ্টেরা। কনভেনশনে না থাকলেও অনশনরত ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে দেখা করতে আসেন কবীর সুমন। শারীরিক অবস্থার কথা চিন্তা করে ছাত্র-ছাত্রীদের অনশন প্রত্যাহারের অনুরোধ করেন তিনি।
ছাত্র-ছাত্রীদের প্রতি সংহতি জানাতে গিয়েছিলেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র, সাংসদ মহম্মদ সেলিম। মুখ্যমন্ত্রী তথা স্বাস্থ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দ্রুত হস্তক্ষেপ চেয়ে চিঠি দিয়েছেন বাম পরিষদীয় নেতা সুজন চক্রবর্তী। বিধানসভার অধিবেশনে আজ, সোমবার বিরোধীরা মেডিক্যালের বিষয়টি তোলার পরিকল্পনা নিয়েছে। তার পরে মেডিক্যালে যেতে পারেন বিরোধী নেতারা। মেডিক্যালে গিয়ে ছাত্রদের সঙ্গে প্রতীকী অনশনে বসার কথা ফরওয়ার্ড ব্লকের অনির্বাণ চৌধুরী-সহ আরও বেশ কিছু মানুষের। সূর্যবাবু বলেন, ‘‘হস্টেলের সমস্যা অনেক সময় হয়। কিন্তু ফাইনাল ইয়ারে পৌঁছেও হস্টেল পাওয়া যাবে না, এ কেমন কথা? আর এই সমস্যা মেটাতে এত দি লাগছেই বা কেন?’’
অনশনরত ছাত্রদের শারীরিক পরীক্ষা করা হচ্ছে। রবিবার। বিশ্বনাথ বণিকের তোলা ছবি
তৃণমূল সাংসদ তথা আইএমএ-র রাজ্য শাখার সাধারণ সম্পাদক শান্তনু সেনের বক্তব্য, ‘‘বাইরে থেকে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ না হওয়াই বাঞ্ছনীয়। সেটাই মুখ্যমন্ত্রীর নীতি। কলেজের অভ্যন্তরীণ সমস্যা মেটাতে কলেজ কর্তৃপক্ষ নিশ্চয়ই পদক্ষেপ করবেন।’’ অনশন তুলে নিতেও ছাত্রদের আর্জি জানিয়েছেন তিনি।
আন্দোলনের সমর্থনে এ দিন কলেজ স্কোয়্যার থেকে মেডিক্যাল পর্যন্ত মিছিল করে এসএফআই এবং ডিওয়াইএফআই। কিছু সংগঠন আজ রাজভবন অভিযান এবং স্বাস্থ্য সচিবের কাছে দাবি জানানোর পরিকল্পনা করেছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy