Advertisement
১৬ এপ্রিল ২০২৪

বহু বুথে দেখা নেই বিরোধী এজেন্টের

নির্বিঘ্নেই সম্পন্ন হল কলকাতা পুরসভার ১১৭ নম্বর ওয়ার্ডের উপনিবার্চন। দিনের শেষে ভোট পড়েছে প্রায় ৬৩.৬ শতাংশ। গণনা আগামী বুধবার।

ভোট শেষ হয়ে যাওয়ার পরেও ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে ঢুকতে দেওয়ার দাবিতে পুলিশের সঙ্গে বচসা। রবিবার, সাহাপুরে। ছবি: বিশ্বনাথ বণিক

ভোট শেষ হয়ে যাওয়ার পরেও ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে ঢুকতে দেওয়ার দাবিতে পুলিশের সঙ্গে বচসা। রবিবার, সাহাপুরে। ছবি: বিশ্বনাথ বণিক

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১৭ ডিসেম্বর ২০১৮ ০০:১৯
Share: Save:

নির্বিঘ্নেই সম্পন্ন হল কলকাতা পুরসভার ১১৭ নম্বর ওয়ার্ডের উপনিবার্চন। দিনের শেষে ভোট পড়েছে প্রায় ৬৩.৬ শতাংশ। গণনা আগামী বুধবার। ২০১৬ সালের ডিসেম্বরে তৃণমূল কাউন্সিলর শৈলেন দাশগুপ্ত মারা যাওয়ায় কলকাতা পুরসভার এই ওয়ার্ডটি খালি হয়। প্রায় দু’বছর পরে রবিবার ভোট হল সেখানে। বিরোধী দলের প্রার্থীরা ভয় দেখানো এবং জাল ভোট দেওয়ার অভিযোগ করলেও তা নিয়ে রাজ্য নির্বাচন কমিশনের কাছে কোনও লিখিত অভিযোগ জমা পড়েনি।

এ দিন ভোটগ্রহণ শুরু হয় সকাল ৭টায়। কিন্তু কাকভোর থেকেই ১১৭ নম্বর ওয়ার্ডের জ্যোতিষ রায় রোড, বুড়োশিবতলা, এস এন রায় রোড-সহ সবর্ত্রই হাজির হয়ে গিয়েছিলেন শাসক দলের কর্মী-সমর্থকেরা। নজরে পড়েছে তাঁদের মোটরবাইকের লম্বা লাইনও। অনেকে আবার স্থানীয় তৃণমূল কংগ্রেস নেতা তথা পুরসভার মেয়র পারিষদ তারক সিংহের বাড়ির সামনে বসে ছিলেন দীর্ঘক্ষণ। তারকবাবুর বড় ছেলে অমিত সিংহ এ বার শাসক দলের প্রার্থী। তাই ভোটে যাতে কোনও অশান্তি না হয়, সে জন্য অমিত নিজেও ঘুরেছেন প্রতিটি কেন্দ্রে। উল্টো দিকে অনেক বুথে বিজেপি, বাম এবং কংগ্রেস তাদের এজেন্টই দিতে পারেনি। কোনও কোনও বুথে তাঁদের ভয় দেখানো ও এজেন্ট তুলে দেওয়া নিয়ে বিরোধী দলের প্রার্থীরা একাধিক অভিযোগ জানিয়েছেন। যদিও এ বিষয়ে তারকবাবুর বক্তব্য, ‘‘অভিযোগ সর্বৈব মিথ্যা। এই ওয়ার্ডে শাসক দল অনায়াসেই জেতে।’’

বিজেপির প্রার্থী সোমনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়, সিপিএমের অমিতাভ মালাকার বা কংগ্রেসের প্রভিষেক সিংহ অভিযোগ করেছেন, একাধিক বুথে তাঁদের এজেন্টকে বসতে দেওয়া হয়নি। ভয় দেখানো হয়েছে। যদিও সেই অভিযোগে আমল দেননি ভোট প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত একাধিক অফিসারই। জ্যোতিষ রায় রোডে শিশু শিক্ষা নিকেতনের এক প্রিসাইডিং অফিসারের কথায়, ‘‘বুথের এজেন্ট হতে গেলে সেই বুথের ভোটার হতে হয়। তেমন কর্মী না থাকায় বিরোধী দলের একাধিক প্রার্থী নিজেদের এজেন্ট দিতে পারেননি।’’ ১১৭ নম্বর ওয়ার্ডে ভোটার প্রায় সাড়ে ১৮ হাজার। সাতটি ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে বুথের সংখ্যা ছিল মোট ২১। সবচেয়ে বেশি লাইন পড়ে জ্যোতিষ রায় রোডে সাহাপুর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের বুথে। সেই লাইন চলে আসে রাস্তার উপরেও। খাতায়-কলমে বিকেল ৩টের সময়ে ভোট শেষ হয়ে গেলেও কোনও কোনও বুথে তার পরেও লাইন দেখা গিয়েছে।

তবে মাত্র একটি ওয়ার্ডের ভোট হলেও এ দিন প্রচুর পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছিল ওই এলাকায়। তারা নজর রেখেছে বাইক-বাহিনীর উপরে। এমনকি, বুথ থেকে ২০০ মিটারের মধ্যে থাকা শাসক দলের একটি শিবিরও তুলে দেয় পুলিশ। একাধিক বাইক আরোহীকে তাড়াও করেছে তারা। এ বিষয়ে অমিত বলেছেন, ‘‘নির্বাচন কমিশনের নিয়ম মেনে আমরা ক্যাম্প তুলে দিয়েছি। পুলিশের কাজেও সহযোগিতা করেছি।’’

নির্বাচনের জন্য সকাল থেকেই কমিশনের দফতরে ছিলেন কমিশনার থেকে শুরু করে পদস্থ আধিকারিকেরা। কিন্তু কারও কাছেই কোনও অভিযোগ আসেনি। সূত্রের খবর, উপনির্বাচনের রিটার্নিং অফিসার ছিলেন আলিপুরের মহকুমাশাসক সামিউল আলম। তাঁর কাছেও কোনও অভিযোগ জমা পড়েনি। সূত্রের খবর, সিপিএমের তরফে বাইক-মিছিল সংক্রান্ত একটি অভিযোগ হোয়াটসঅ্যাপ মারফত জানানো হয়েছিল। তবে কোনও লিখিত অভিযোগ করা হয়নি। আর হোয়াটসঅ্যাপে অভিযোগ পেয়েই বিষয়টি নিয়ে পুলিশের এক কর্তাকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করার কথা বলেন মহকুমাশাসক। তবে পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, এমন কোনও ঘটনা ঘটেনি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Election By Electiion Agent TMC
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE