Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

আগ্নেয়াস্ত্রের মুখে ঝাঁপিয়ে দুষ্কৃতী ধরলেন এসআই

সোমবার ভোরে দুষ্কৃতীদের গুলিতে জখম হন আসানসোল দক্ষিণ থানার সাব-ইনস্পেক্টর সন্দীপ পাল। একটি গুলি কনস্টেবল অরিজিৎ সামন্তের গা ঘেঁষে বেরিয়ে যায়। এক দুষ্কৃতীকে ধরতে গিয়ে বেকায়দায় পড়ে মাথা ফাটে অরিজিৎবাবুর।

আদালতে তোলা হচ্ছে ধৃতদের। মঙ্গলবার। নিজস্ব চিত্র

আদালতে তোলা হচ্ছে ধৃতদের। মঙ্গলবার। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
আসানসোল ও হাওড়া শেষ আপডেট: ০৪ ডিসেম্বর ২০১৯ ০২:৪৭
Share: Save:

পুলিশকর্মীদের প্রশ্নের মুখে পড়ে রিভলভার বার করেছিল এক দুষ্কৃতী। মুহূর্তে ঝাঁপিয়ে তাকে পাকড়াও করেন হাওড়ার জগাছা থানার অ্যাসিস্ট্যান্ট সাব-ইনস্পেক্টর সন্তোষকুমার যাদব। ধরা পড়ে তার এক সঙ্গীও। আসানসোলে পুলিশকর্মীকে গুলি করায় দুই অভিযুক্তকে এ ভাবেই ধরা হয়েছে বলে দাবি করেছে পুলিশ। তবে ধৃতদের এক সঙ্গী ঘটনাস্থল থেকে পালিয়েছে।

সোমবার ভোরে দুষ্কৃতীদের গুলিতে জখম হন আসানসোল দক্ষিণ থানার সাব-ইনস্পেক্টর সন্দীপ পাল। একটি গুলি কনস্টেবল অরিজিৎ সামন্তের গা ঘেঁষে বেরিয়ে যায়। এক দুষ্কৃতীকে ধরতে গিয়ে বেকায়দায় পড়ে মাথা ফাটে অরিজিৎবাবুর। সে ঘটনায় সোমবার রাত সাড়ে ৮টা নাগাদ দেবেন্দ্র সিংহ (ওরফে আই লাভ, ওরফে সোনু) এবং তার সঙ্গী সৌরভ চৌধুরীকে (ওরফে ফুড়ান) গ্রেফতার করা হয়েছে। ফিয়াজুল হুডা (ওরফে ভিকি) নামে অন্য এক অভিযুক্ত চম্পট দিয়েছে। মঙ্গলবার ধৃতদের আসানসোল আদালতে তোলা হলে পুলিশ টিআই প্যারেডের আবেদন জানায়। আজ, বুধবার আসানসোল সংশোধানাগারে টিআই প্যারেড হওয়ার কথা। পুলিশ জানায়, তার পরেই ওই দু’জনকে হেফাজতে চাওয়ার আর্জি জানানো হবে।

দেবেন্দ্র ঝাড়খণ্ডের জামশেদপুরের নন্দা বস্তির ও সৌরভ জামশেদপুরের রামদেও বাগানের গোলমুড়ির বাসিন্দা। সোমবার ভোরে আসানসোল স্টেশন রোড লাগোয়া এলাকায় তিন জনকে একটি অটো নিয়ে সন্দেহজনক ভাবে ঘোরাফেরা করতে দেখে আটকেছিলেন সাব-ইনস্পেক্টর সন্দীপবাবু। অটোয় থাকা তিন যাত্রী নানা প্রশ্নের ‘সদুত্তর’ দিতে না পারায় তাদের জিপে তোলার চেষ্টা করে পুলিশ। অভিযোগ, সেই সময়েই এক দুষ্কৃতী সাব-ইনস্পেক্টর সন্দীপবাবুর পিঠে গুলি করে। পরে তিন জনেই অটো নিয়ে পালায়। ওই ঘটনার পরেই আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেট রাজ্যের সব থানাকে তিন অভিযুক্তের ছবি পাঠায়। দুর্গাপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন সন্দীপবাবুর অবস্থা এ দিন স্থিতিশীল ছিল।

পুলিশের দাবি, আসানসোলে ‘হামলা করা’ ওই তিন জন বাসে সাঁতরাগাছি পৌঁছয়। সোমবার রাতে জগাছা থানার অদূরে একটি গলিতে ঘুরছিল তারা। সৌরভের মুখ খোলা থাকলেও দেবেন্দ্রের মুখ কাপড়ে ঢাকা ছিল। তাদের দেখে সন্দেহ হয় সাদা পোশাকে টহলরত সন্তোষবাবু ও দুই কনস্টেবলের। সন্তোষবাবুর মোবাইলেও আসানসোল থেকে পাঠানো সন্দেহভাজনদের ছবি ছিল। তা দেখে তিনি সৌরভকে শনাক্ত করেন। সন্তোষবাবু ও দুই কনস্টেবল ওই তিন জনকে ঘিরে ফেলে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেন। আচমকা দেবেন্দ্র কোমরে গোঁজা রিভলভার বার করে। মুহূর্তের মধ্যে ঝাঁপিয়ে পড়ে দেবেন্দ্রকে ধরে ফেলেন সন্তোষবাবু। ফিয়াজুল চম্পট দিলেও সৌরভকে ধরে ফেলে পুলিশ। ততক্ষণে চিৎকার শুনে এলাকাবাসী এবং থানা থেকে পুলিশ বাহিনীও চলে আসে।

হাওড়া কমিশনারেটের তরফে দাবি করা হয়েছে, তারা এমন একটি ভিডিয়ো ‘ক্লিপ’ (সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার) পেয়েছে, যাতে টাকা ও নানা ধরনের অস্ত্র-সহ দেবেন্দ্রকে দেখা গিয়েছে। পুলিশের দাবি, ধৃতেরা জাল টাকা ও অবৈধ অস্ত্রের কারবারে জড়িত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

SI Miscreants Police
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE