Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
Kolkata Municipal Corporation

ভাড়ার গাড়ি, অ্যাম্বুল্যান্সেও পুরসভায় কাজে এলেন কর্মীরা

সোমবার দেখা যায়, কর্মীরা অনেকেই চার জন করে ভাড়া গাড়ি নিয়ে কাজে যোগ দিতে এসেছেন।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৯ জুন ২০২০ ০২:১৪
Share: Save:

কেউ অফিসে পৌঁছলেন চড়া মূল্যে গাড়ি ভাড়া নিয়ে। কেউ বা আবার অসুস্থ শরীরে অ্যাম্বুল্যান্সে এসে সোমবার হাজিরা দিলেন কলকাতা পুরসভার সদর দফতরে।

ট্রেন কিংবা মেট্রো কবে চালু হবে কেউ জানেন না। ইতিমধ্যেই গত শনিবার পুর কর্তৃপক্ষ সার্কুলার জারি করেছিলেন, সোমবার থেকে ১০০ শতাংশ হাজিরা বাধ্যতামূলক। তার জেরে ছোঁয়াচের আশঙ্কা দূরে ঠেলেই কাজে যোগ দিলেন পুরকর্মীরা। এ ভাবে কাজে যোগ দিতে এসে দূরত্ব-বিধি ঠিক মতো মানতে না-পারা নিয়ে এ দিন ক্ষোভ প্রকাশও করেছেন পুরকর্মীদের একাংশ।

সোমবার দেখা যায়, কর্মীরা অনেকেই চার জন করে ভাড়া গাড়ি নিয়ে কাজে যোগ দিতে এসেছেন। এমনকি, অফিসে কী ভাবে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে বসবেন বা কাজ করবেন, তারও কোনও নির্দিষ্ট নিয়ম না থাকা নিয়ে অনেককেই ক্ষোভ প্রকাশ করতে দেখা যায়। পুর কর্তৃপক্ষ জানান, এ দিন উপস্থিতির হার ছিল প্রায় ৮২ শতাংশ।

দক্ষিণ ২৪ পরগনার উস্তি থেকে অসুস্থ চন্দনকুমার ভট্টাচার্য অ্যাম্বুল্যান্সে চেপে অফিসে আসেন। তিনি বলেন, “আমি স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মী। গত ৯ মে অফিসেই সিঁড়ি থেকে পড়ে মাথায় চোট পেয়েছিলাম। হাসপাতালেও ভর্তি ছিলাম। চাকরি বাঁচাতে অফিসে আসার জন্য সাড়ে তিন হাজার টাকা খরচ করে অ্যাম্বুল্যান্স ভাড়া করি।” সাড়ে চার হাজার টাকায় গাড়ি ভাড়া করে পাঁশকুড়া থেকে আসা স্বাস্থ্য বিভাগেরই কর্মী শিখা গুড়ির কথায়, “এ ছাড়া কোনও বিকল্প ছিল না।” নৈহাটি থেকে গাড়ি ভাড়া করে এসে চঞ্চলকুমার রায় নামে পুরসভার সচিবালয়ের এক কর্মী অসুস্থ হয়ে পড়েন।

পুরকর্মীদের অনেকেরই অভিযোগ, স্বাস্থ্য বিভাগে, জন্ম-মৃত্যু শংসাপত্র বিভাগে এ দিন সকাল থেকেই ভিড় শুরু হয়। স্বাস্থ্যবিধি মেনে কী ভাবে কাজ হবে, তার কোনও নির্দেশিকা না থাকায় কিছু ক্ষণ কাজ বন্ধও থাকে। এই নিয়ে কথাকাটিও হয়। পরে অবশ্য লোকজনকে ড্রপ বক্সে নথিপত্র জমা দিতে বলা হয়।

কলকাতা পুরসভার বাম সমর্থিত কর্মী সংগঠন ক্লার্কস ইউনিয়নের তরফে সাধারণ সম্পাদক অমিতাভ ভট্টাচার্য অভিযোগ করেন, “পুরকর্মীদের ভয় দেখিয়ে কাজে আনা হচ্ছে। লকডাউনের কারণে রাস্তায় গাড়ির সংখ্যা কম। ট্রেন, মেট্রো নেই। কর্মচারীদের কথা ভেবেই পুর কর্তৃপক্ষের কাছে সার্কুলার পুনর্বিবেচনার জন্য আবেদন করছি।”

কলকাতা পুরসভার প্রশাসকমণ্ডলীর চেয়ারম্যান ফিরহাদ হাকিম বলেন, “শহর বা শহরতলির কর্মীদের বিভিন্ন জায়গা থেকে আনতে বাসের ব্যবস্থা করতে কমিশনারকে নির্দেশ দিয়েছি। পুরসভার যে সব কর্মী বাইরে কাজ করেন, তাঁরা অফিসে এসে রিপোর্ট দিয়ে চলে যাবেন। আর যাঁদের অফিসে বসে কাজ তাঁরা
অফিসে থাকবেন। স্বাস্থ্যবিধি মেনে অফিসে বসার নিয়মকানুনেরও পরিবর্তন করা হবে।” পুর কর্তৃপক্ষ এ দিন জানান, বারুইপুরের পদ্মপুকুর মোড়, বারাসতের ডাকবাংলো মোড়, ব্যারাকপুর স্টেশন, গার্ডেনরিচ, ডায়মন্ড হারবার, সল্টলেকের পিএনবি এবং বেহালার জোকা থেকে এর পরে পুরকর্মীদের জন্য বাস থাকবে। তবে এই ব্যবস্থা কবে থেকে কার্যকর হবে তা স্পষ্ট করেননি পুর কর্তৃপক্ষ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Kolkata Municipal Corporation Ambulance
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE