Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
State Consumer Court

ঘর ভাড়া নিতে হেনস্থা, ২৫ হাজার টাকা দিতে নির্দেশ

২০১৬ সালে মুকুটমণিপুর বেড়াতে যাওয়ার জন্য অনলাইনে সরকারি যুব আবাসের ঘর বুক করেন বিমলবাবু।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

মেহবুব কাদের চৌধুরী
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০২:২৫
Share: Save:

মুকুটমণিপুর বেড়াতে যাওয়ার প্রায় এক মাস আগেই অনলাইনে সেখানকার সরকারি যুব আবাসে ঘর বুকিং করে রেখেছিলেন সিঁথির দম্পতি। কিন্তু অভিযোগ, স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে বেড়াতে গিয়ে এক ব্যক্তি জানতে পারেন, কোনও টাকাই নাকি জমা পড়েনি!

অভিযোগ, রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের অ্যাকাউন্টের কাগজ দেখানো হলেও তা মানতে চাননি ওই আবাসের কর্মীরা। কলকাতায় ফিরে এর পরে ক্রেতা সুরক্ষা আদালতের দ্বারস্থ হন পেশায় সরকারি কর্মী বিমল পাল। সেই মামলাতেই গত ৬ ফেব্রুয়ারি যুব কল্যাণ দফতরের সমালোচনা করে অভিযোগকারীকে ২৫ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে নির্দেশ দিয়েছে রাজ্য ক্রেতা সুরক্ষা আদালত।

২০১৬ সালে মুকুটমণিপুর বেড়াতে যাওয়ার জন্য অনলাইনে সরকারি যুব আবাসের ঘর বুক করেন বিমলবাবু। অভিযোগ, সেই বছর ২২ জুলাই সেখানে পৌঁছলে তাঁকে জানানো হয়, যুব আবাসের অ্যাকাউন্টে কোনও টাকা জমা পড়েনি। বিমলবাবু প্রমাণস্বরূপ তাঁর অ্যাকাউন্টের কাগজ দেখানো সত্ত্বেও সে কথা বিশ্বাস করেননি মুকুটমণিপুর যুব আবাস কর্তৃপক্ষ। কলকাতায় ফিরে যুব কল্যাণ অধিকর্তাকে চিঠি লিখে টাকা ফেরতের আবেদন জানান বিমলবাবু। তাঁর অভিযোগ, ‘‘বেড়াতে যাওয়ার এক মাসেরও আগে ১৮০০ টাকা জমা দিয়েছিলাম। অথচ যুব আবাসে গেলে টাকা জমা দেওয়ার রসিদ দেখানো সত্ত্বেও কেউ আমল দেননি। টাকা দেওয়া সত্ত্বেও যুব আবাসের কর্মীরা যে ব্যবহার করেন, তাতে খুবই অপমানিত হই। ওই ঘটনার পর থেকে স্ত্রী আর আমার সঙ্গে বেড়াতে যান না।’’

যুব আবাস কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিয়েও কাজ না হওয়ায় ঘটনার চার মাস পরে কলকাতা জেলা ক্রেতা সুরক্ষা আদালতের দ্বারস্থ হন বিমলবাবু। রাজ্য যুব কল্যাণ দফতরের অধিকর্তা এবং বেলেঘাটার যে ব্যাঙ্কের মাধ্যমে তিনি টাকা দিয়েছিলেন, তার শাখা ম্যানেজারের বিরুদ্ধে ক্ষতিপূরণের মামলা করেন বিমলবাবু। ২০১৮ সালের জানুয়ারিতে যুব কল্যাণ দফতরের অধিকর্তাকে ক্ষতিপূরণ বাবদ এক হাজার টাকা দিতে নির্দেশ দেয় ওই আদালত। কিন্তু সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে পাল্টা মামলা করেন অধিকর্তা।

গত ৬ ফেব্রুয়ারি সেই মামলার শুনানিতে বিচারক শ্যামল গুপ্ত বলেন, ‘‘রাজ্য যুব কল্যাণ দফতরের কিছু অপেশাদার কর্মীর জন্য ওই দম্পতির বেড়াতে যাওয়াটা দুঃস্বপ্ন রয়ে গেল।’’ তিনি আরও প্রশ্ন তোলেন, ‘‘অভিযোগকারী আদালতে মামলা করার পরে যুব কল্যাণ দফতর তাঁকে টাকা ফেরত দেয়। পাঁচ মাস আগে দফতরের কাছে এ নিয়ে অভিযোগ জানানো হলে তখনই কেন টাকা ফেরত দেওয়া হয়নি?’’ এর পরেই জেলা ক্রেতা সুরক্ষা আদালতের রায়কে ‘বড় ভুল’ আখ্যা দিয়ে অভিযোগকারীকে ২৫ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে নির্দেশ দেন বিচারক।

তবে এই রায় প্রসঙ্গে রাজ্য যুব কল্যাণ অধিকর্তা উত্তমকুমার পাত্র বলেন, ‘‘রায়ের কপি হাতে পাইনি। আদালতের নির্দেশ মেনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

State Consumer Court Youth Welfare Office
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE