ফাইল চিত্র।
মাঝেরহাট ব্রিজের ভবিষ্যৎ কী? বাকি অংশ ভেঙে ফেলে নতুন করে ব্রিজ তৈরি করা হবে। নাকি শুধু ভেঙে যাওয়া অংশ জুড়ে দিয়েই সমস্যার সমাধান হবে? এ বিষয়ে স্পষ্ট ধারণা পেতে ‘অ্যানালিটিক্যাল টেস্ট’ শুরু করল ফরেন্সিক দল। এই টেস্টের রিপোর্ট দ্রুত পেতে চাইছে মুখ্যসচিব মলয় দে-র নেতৃত্বে উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটি। কারণ, ওই রিপোর্টের উপরেই মাঝেরহাট সেতু নিয়ে সিদ্ধান্ত নেবে রাজ্য সরকার।
ততদিন ওই এলাকা দিয়ে লেভেল ক্রসিংয়ের মাধ্যমে কোনও ভাবে যান চলাচল করানো যায় কি না, সে বিষয়েও ভাবনাচিন্তা শুরু হয়েছে। এ বিষয়ে রেলকে চিঠি দিয়ে বিষয়টি জানানো হবে বলে নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছে। জরুরি ভিত্তিতে রেল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বৈঠকও করতে চায় রাজ্য সরকার।
বেহালা, ঠাকুরপুকুর, তারাতলা, বজবজ-সহ দক্ষিণ ২৪ পরগনার বিস্তীর্ণ এলাকার সঙ্গে কলকাতার সংযোগকারী এই সেতু ভেঙে পড়ায় নাজেহাল সকলে। বন্দর এলাকায় পণ্য পরিবহণেও সমস্যা হচ্ছে। ইতিমধ্যেই মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে ২০ চাকার লরি নিষিদ্ধ করা হয়েছে। মাঝেরহাটের ওপার থেকে ধর্মতলা, হাওড়া, শিয়ালদহ যেতে হিমশিম খেতে হচ্ছে মানুষকে। চাপ বাড়ছে দুর্গাপুর সেতু, ব্রেস ব্রিজ, মহাবীরতলা ব্রিজ এবং করুণাময়ী ব্রিজের উপরে। এগুলো প্রত্যেকটিই ভগ্নপ্রায় এবং বিপজ্জনক সেতুর তালিকায় রয়েছে। তাই বিকল্প পথ হিসাবে লেভেল ক্রসিংয়ের মাধ্যমে যান চলাচল করা যায় কিনা, সেই ভাবনাচিন্তা করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: জোকা-বি বা দী বাগ মেট্রোর কাজ বন্ধ করতে বলল রাজ্য, ক্ষুব্ধ রেল
‘অ্যানালিটিক্যাল টেস্ট’ করার জন্য দুর্ঘটনার পর ভেঙে যাওয়া অংশ থেকে নমুনা সংগ্রহ করেছে ফরেন্সিক দল। তার পাশাপাশি মাঝেরহাট ব্রিজের দু’পাশের অক্ষত অংশ থেকেও নমুনা নেওয়া হয়। নবান্ন সূত্রে খবর, ফরেন্সিক দলকে দ্রুত এই রিপোর্ট জমা দিতে বলা হয়েছে। এর পাশাপাশি পূর্ত দফতরের ‘স্ট্রাকচারাল ই়ঞ্জিনিয়ারিং’-এর বিশেষজ্ঞদের মতামতও নিচ্ছে কমিটি। ওই কমিটিতে মুখ্যসচিব ছাড়াও রয়েছেন সেচ, নগরোন্নয়ন, জনস্বাস্থ্য কারিগরি ও পূর্ত দফতরের সচিব, রাজ্যের নিরাপত্তা উপদেষ্টা, কলকাতার পুলিশ কমিশনার এবং রাজ্য পুলিশের ডিজি।
ফরেন্সিক সূত্রে খবর, বয়সের ভারে অতিরিক্ত ওজন নিতে পারছিল না মাঝেরহাট ব্রিজ। ৫৪ বছর আগে যখন এই ব্রিজ তৈরি হয়েছিল, তখন এত যান চলাচল করত না। দক্ষিণ শহরতলিতে ধীরে ধীরে জনবসতি গড়ে ওঠার ফলে গাড়ির চাপ ক্রমশই বেড়েছে। এক সময় মাঝেরহাট ব্রিজের ওপর দিয়ে ট্রামও যেত। সেই ট্রাম লাইন তুলে না দিয়ে তার উপরেই বিটুমিনের প্রলেপ দেওয়া হয়েছে। বছরের পর বছর এই পিচের প্রলেপের ফলে ব্রিজের ভার অনেকটা বৃদ্ধি পেয়েছিল।
আরও পড়ুন: হস্টেলের সুপার চাই, কিন্তু ‘সিঙ্গল’ হতে হবে!
সময় মতো রক্ষণাবেক্ষণ না হওয়ার অভিযোগ যেমন উঠেছে, তেমনই মেট্রো রেলের কাজের কোনও প্রভাব পড়েছিল কিনা, তা-ও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। মাঝেরহাট ব্রিজের নীচ দিয়ে ট্রেন চলাচল করে। স্বাভাবিক কারণে তার জন্যেও কম্পন হয়। ফরেন্সিক দলের এক সদস্য বলেন, “তিন দিন ধরে আমরা বিভিন্ন জায়গা থেকে নমুনা সংগ্রহ করেছি। ব্রিজের ভবিষ্যৎ কী, সে বিষয়ে সিদ্ধান্তে আসার জন্যে অ্যানালিটিকাল টেস্ট দরকার। সেই পরীক্ষা শেষ করে কলকাতা পুলিশের স্পেশাল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সি-র কাছে রিপোর্ট পাঠিয়ে দেওয়া হবে।”
(কলকাতার ঘটনা এবং দুর্ঘটনা, কলকাতার ক্রাইম, কলকাতার প্রেম - শহরের সব ধরনের সেরা খবর পেতে চোখ রাখুন আমাদের কলকাতা বিভাগে।)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy