স্টিফেন কোর্টের পরে দমকলের নির্দেশ ছিল বহুতলের ছাদের দরজা খোলা রাখতে হবে। যাতে আগুন লাগলে ছাদে গিয়ে বাঁচতে পারেন মানুষ। কিন্তু পুলিশের অভিযোগ, হো চি মিন সরণির গোল্ডেন পার্ক হোটেলে ছাদই রাখেননি কর্তৃপক্ষ। পুরো অংশ ঘিরে রয়েছে এসি প্ল্যান্ট। এর ফলেই প্রাণ দিতে হয়েছে গুজরাতের ব্যবসায়ী অনুপ অগ্রবালকে (৫৩)।
লালবাজারের খবর, আগুন লাগার পরে হোটেলের এসি প্ল্যান্টের কাছে উদ্ধার করা হয় অনুপকে। তিনি সেখানে গিয়েছিলেন কেন তা অনুসন্ধান করতে গিয়ে তদন্তকারীদের অনুমান, আতঙ্কে ছাদে পালাতে গিয়েছিলেন অনুপ। কিন্তু রাস্তা বন্ধ দেখে পথ হারিয়ে ওই ঘরে ঢুকে পড়েন। লালবাজারের অনেকে মনে করিয়ে দিচ্ছেন, স্টিফেন কোর্টের অগ্নিকাণ্ডের পরে ছাদের বন্ধ দরজার সামনে থেকে একাধিক দেহ উদ্ধার হয়েছিল। আগুন লাগার পরে তাঁরা ছাদে গিয়ে বাঁচতে চেয়েছিলেন। কিন্তু দরজা বন্ধ থাকায় সেই সুযোগ পাননি।
পুলিশ জানায়, বুধবার রাতে গোল্ডেন পার্ক হোটেলের রান্নাঘরের হিটার ফেটে আগুন লাগে। ধোঁয়ায় দম আটকে মৃত্যু হয় অনুপ অগ্রবাল ও চমর কিষেণ নামে দুই আবাসিকের। ঘটনায় কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ ওঠে। বৃহস্পতিবার গ্রেফতার হন হোটেল মালিক ভূপিন্দর সিংহ গুজরাল ও গৌতম মজুমদার নামে এক ম্যানেজার। শুক্রবার রান্নাঘরের দায়িত্বে থাকা পলাশ চিত্রকর নামে এক কর্মীকেও ধরা হয়।
তদন্তকারীদের দাবি, হিটার ফাটার পিছনেও গাফিলতিই সামনে এসেছে। রান্নাঘরের সিসিটিভি ফুটেজ দেখে পুলিশ জেনেছে, বুধবার রাত সা়ড়ে আটটায় ওই হিটারে আলু ভাজা হয়েছিল। পরে সেটি নেভানো হয়নি। রাত আড়াইটে পর্যন্ত জ্বলছিল সেটি। ফলেই অতিরিক্ত গরম হয়ে ফেটে যায় হিটারটি। সেই আগুন লাগে পাশের কাঠের প্যানেলে। পুলিশ জানায়, তার পরেও ফায়ার অ্যালার্ম বাজেনি, স্প্রিংকলার থেকে জলও বেরোয়নি। উল্টে এসি ডাক্ট দিয়ে ধোঁয়া ছড়িয়ে পড়ে হোটেলে। লালবাজারের এক কর্তার বক্তব্য, ‘‘পলাশ নামে ওই কর্মী হিটার বন্ধ না করে চলে গিয়েছিলেন।’’
তদন্তকারীরা জানান, হোটেলের ধোঁয়া বেরনোর যথাযথ পথ বা ডাক্ট ছিল না। ফলে ধোঁয়া বাইরে না বেরিয়ে এসি ডাক্টের মাধ্যমে ভিতরে ঢুকে পড়েছিল। হোটেলের দমকল লাইসেন্সের মেয়াদও ফুরিয়েছিল। দমকল বিধি অনুযায়ী, হোটেলের কোনায় কোনায় ও প্রতি তলায় জলের পাইপ থাকতে হবে। তা-ও ছিল না বলে অভিযোগ পুলিশের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy