ছবি এপি।
মাসের পর মাস কার্ফু। কলেজ বন্ধ। ব্যবসা বন্ধ। কলেজপড়ুয়া মহম্মদ সালিম তাই কাশ্মীর থেকে চলে এসেছেন কলকাতায়। সঙ্গে শাল, সোয়েটার, ফিরহন। অচেনা শহর তাঁকে স্বাগত জানিয়েছে সাদরে।
শ্রীনগরের ইসলামিয়া কলেজ অব সায়েন্স অ্যান্ড কমার্সের বাণিজ্য শাখার ছাত্র সালিম কিন্তু ব্যবসা-বাণিজ্যের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন না। পড়াশোনা নিয়ে থাকতেন। শ্রীনগরের লালচকে তাঁর বাবার সোয়েটার-শালের ব্যবসা। কিন্তু অগস্টের পর থেকে কার্ফুতে কাশ্মীরে ব্যবসা-বাণিজ্য শিকেয় উঠেছে। সালিমের কলেজও বন্ধ। অগত্যা বাবার দোকানের জিনিসপত্র নিয়ে কলকাতায় এসেছেন সালিম। এই শহরে প্রায় কাউকেই চেনেন না তিনি। তাই বিক্রিবাটাও তেমন হচ্ছিল না। সালিমের কথা জানতে পেরে তাঁকে বাড়িতে ডাকেন কবি ও কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষিকা রাকা দাশগুপ্ত। সালিমও হাজির হয়েছিলেন। কাশ্মীরি শাল, সোয়েটারের পসরা নিয়ে সালিম সেখানে যান। ওই শিক্ষিকা সেটা লেখেন সোশ্যাল মিডিয়ায়। তার পরেই অসংখ্য মানুষ তাঁর মাধ্যমে সালিমের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন।
সালিমের বাড়িতে আছেন বাবা, মা ও দুই ছোট বোন। শ্রীনগরের ব্যবসা বন্ধ। তাই ছেলে যা রোজগার করবেন, তা দিয়েই চলবে গোটা সংসার।
রবিবার সালিম জানান, সোশ্যাল মিডিয়ায় ওই শিক্ষিকার পোস্টের পরে অনেকেই তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করছেন। কিছু বিক্রিবাটার আশা আছে। প্রথমে ভেবেছিলেন, ফিরে যাবেন। কিন্তু এত মানুষ তাঁর কথা জানতে এবং তাঁর জিনিস কিনতে চাওয়ায় সালিম মুগ্ধ। তিনি বলেন, ‘‘কাশ্মীরের যা পরিস্থিতি, তাতে আমাকে বাধ্য হয়ে কলকাতায় আসতে হয়েছে। কলেজে কবে ফিরব, জানি না। তবে কলকাতার মানুষের ভালবাসা আমাকে অবাক করেছে।’’ রাকাদেবী জানান, এক পরিচিতের কাছ থেকে তিনি সালিমের খবর পান। পেয়ে মনে হয়েছিল, কোনও ভাবে তাঁর পাশে দাঁড়ানো দরকার। নিজের পোস্টে এত সাড়া পাওয়ায় খুব ভাল লাগছে ওই শিক্ষিকারও। তিনি বলেন, ‘‘সালিম আমার ছাত্রসম। ওর পড়াশোনা বন্ধ। বাড়ির রোজগার বন্ধ। এই অবস্থায় আমাদের শহরে এসেছে। সাহায্য করা তো আমাদের কর্তব্য।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy