Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

ডেঙ্গি রোধে পড়শির বাড়ি সাফ করবে পড়ুয়ারা

প্রতি বছরই ডেঙ্গি রুখতে জমা জল পরিষ্কার-সহ নানা পদক্ষেপ করে স্থানীয় পুরসভা ও স্কুলগুলি। গত বছর বিভিন্ন এলাকায় জমা জল পরিষ্কার করেছিল স্কুলপড়ুয়ারা। কিন্তু স্কুলশিক্ষা দফতর মনে করছে, তা যথেষ্ট নয়। তাই প্রতিটি পড়ুয়াকে ব্যক্তিগত ভাবে উদ্যোগী করে তুলতে এই পদক্ষেপ করা হচ্ছে।

আঁতুড়ঘর: এমন আবর্জনার স্তূপেই জন্মায় ডেঙ্গির জীবাণুবাহী মশা। কসবায়। নিজস্ব চিত্র

আঁতুড়ঘর: এমন আবর্জনার স্তূপেই জন্মায় ডেঙ্গির জীবাণুবাহী মশা। কসবায়। নিজস্ব চিত্র

সুপ্রিয় তরফদার
শেষ আপডেট: ১৮ অগস্ট ২০১৮ ০২:১১
Share: Save:

গত বছর ডেঙ্গি সচেতনতার কাজে নেমেছিল বিভিন্ন স্কুল। এ বার প্রতিটি পড়ুয়াকে আলাদা করে এই কাজে যুক্ত করতে নির্দেশ দিল স্কুলশিক্ষা দফতর। বৃহস্পতিবার সরকার-পোষিত ও সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত বিভিন্ন স্কুলের প্রধান শিক্ষকদের নির্দেশ পাঠিয়ে বলা হয়েছে, নিজেদের এলাকায় বাড়ি বাড়ি ঘুরে জমা জল পরিষ্কার করার কাজে যুক্ত করতে হবে পড়ুয়াদের। স্কুল যে সেই নির্দেশ পড়ুয়াদের দিয়েছে, তার প্রমাণ পাঠাতে হবে জেলা স্কুল পরিদর্শকদের (ডিআই) কাছে। এমনকি, পড়ুয়ারা সেই কাজ করছে কি না, তার প্রমাণ হিসেবে কিছু ছবি ডিআই-দের পাঠানোরও নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে বলে খবর।

প্রতি বছরই ডেঙ্গি রুখতে জমা জল পরিষ্কার-সহ নানা পদক্ষেপ করে স্থানীয় পুরসভা ও স্কুলগুলি। গত বছর বিভিন্ন এলাকায় জমা জল পরিষ্কার করেছিল স্কুলপড়ুয়ারা। কিন্তু স্কুলশিক্ষা দফতর মনে করছে, তা যথেষ্ট নয়। তাই প্রতিটি পড়ুয়াকে ব্যক্তিগত ভাবে উদ্যোগী করে তুলতে এই পদক্ষেপ করা হচ্ছে।

এক ডিআই জানান, ওই নির্দেশে বলা হয়েছে, প্রত্যেক পড়ুয়া নিজের প্রতিবেশীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে জমা জল পরিষ্কারের জন্য আবেদন করবে। কোনও পাত্র বা পরিত্যক্ত বালতিতে, চায়ের ভাঁড়ে, নারকেলের খোলায় জল জমতে দেখলে সেগুলি নিজেরাই ফেলে দেবে। ডেঙ্গি রুখতে জমা জল ফেলা কতটা জরুরি, তা বোঝানো হবে খুদে পড়ুয়াদের মাধ্যমে।

তবে আদৌ সেই কাজ হচ্ছে কি না, তার উপরেও চলবে নজরদারি। কলকাতা জেলা স্কুলশিক্ষা দফতরের এক কর্তা বলেন, ‘‘সবে জল পরিষ্কারের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এর পরে পড়ুয়ারা নিজেদের এলাকায় সেই কাজ করছে কি না, তার কিছু ছবি সংগ্রহ করে রাখতে বলা হবে। প্রমাণ হিসেবে বাছাই করা ছবি পাঠাতে হবে ডিআই-দের কাছে।’’ তাঁর বক্তব্য, ‘‘খুদেরা এই কাজ করলে গোটা সমাজকেই ইতিবাচক বার্তা দেওয়া যাবে।’’

টাকি বয়েজ স্কুলের প্রধান শিক্ষক পরেশকুমার নন্দ বলেন, ‘‘পড়ুয়াদের নিয়ে এমনিতেই ডেঙ্গি-বিরোধী প্রচার করেছি। দফতরের নির্দেশ অনুযায়ী প্রতিটি পড়ুয়া যাতে আলাদা করে নিজেদের এলাকায় এই কাজ করে, সে বিষয়েও পদক্ষেপ করা হচ্ছে।’’ গার্ডেনরিচ নুটবিহারী দাস গার্লস হাইস্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা সঙ্ঘমিত্রা ঘোষ বলেন, ‘‘ইতিমধ্যেই ওই কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। দফতরের নির্দেশ পেয়েই প্রমাণ হিসেবে ছবি-সহ সমস্ত কিছু পাঠিয়ে দিয়েছি।’’ যাদবপুর বিদ্যাপীঠের প্রধান শিক্ষক পরিমল ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘নির্দেশ পেয়েছি। কয়েক দিনের মধ্যেই এই কাজ শুরু হবে। আমরা স্কুল চত্বর পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করার কাজ আগেই করেছি।’’

তবে শিক্ষক-নেতা স্বপন মণ্ডল মনে করেন, দফতর দেরি করে ফেলেছে। কারণ স্বাস্থ্য ভবন জানিয়েছিল, ডেঙ্গি প্রতিরোধের আদর্শ সময় জানুয়ারি থেকে এপ্রিল। তাই অগস্টে বিকাশ ভবন থেকে এই নির্দেশ আসায় প্রশ্ন উঠেছে। স্বপনবাবু বলেন, ‘‘আমরা ক্লাসে পড়ুয়াদের অনেক দিন আগে থেকেই সচেতন করতে শুরু করেছি। দফতর নির্দেশ দিতে অনেক দেরি করে ফেলেছে।’’ যদিও দফতরের ব্যাখ্যা, ডেঙ্গি প্রতিরোধের জন্য কী কী করণীয়, সেটা বরাবরই বলা থাকে। দফতর তাতে নজরও রাখে। এ বছর বাড়তি কাজ হিসেবে প্রতিবেশীদের সচেতন করাকে যুক্ত করা হল। তাই এই নির্দেশিকা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Dengue Mosquito Garbage Student
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE