Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

বানের তোড়ে খুলে পড়ল ফেরিঘাটের সেতু

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গঙ্গার পাড়ে দাঁড়িয়ে বান দেখে অনেকেই ‘আসছে’, ‘আসছে’ চিৎকার করছিলেন। কিন্তু সেই চিৎকার বান আসার কয়েক মুহূর্তের মধ্যে আর্তনাদে বদলে যায়।

আধডোবা: জলের ধাক্কায় একপাশ খুলে ভাসছে আহিরীটোলা ফেরিঘাটের সেতু। রবিবার। নিজস্ব চিত্র

আধডোবা: জলের ধাক্কায় একপাশ খুলে ভাসছে আহিরীটোলা ফেরিঘাটের সেতু। রবিবার। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০২ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০১:৩১
Share: Save:

গত ফেব্রুয়ারিতে বানের তোড়ে নিমতলা শ্মশানঘাটে সৎকার করতে আসা ন’জন ভেসে গিয়েছিলেন। সেই ঘটনায় আজও এক জন নিখোঁজ। রবিবার বানের তোড়ে খুলে পড়ল আহিরীটোলা জেটির সঙ্গে পাড়ের সংযোগকারী আস্ত সেতু। ছুটির দিন হওয়ায় বড় বিপদ এড়ানো গিয়েছে বলেই মনে করছে পুলিশ। তবে এ দিনের দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন ফেরিঘাটের এক কর্মী।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গঙ্গার পাড়ে দাঁড়িয়ে বান দেখে অনেকেই ‘আসছে’, ‘আসছে’ চিৎকার করছিলেন। কিন্তু সেই চিৎকার বান আসার কয়েক মুহূর্তের মধ্যে আর্তনাদে বদলে যায়। জলের ধাক্কায় আচমকাই খুলে পড়ে আহিরীটোলা জেটির সঙ্গে পাড়ের সংযোগকারী সেতুটি। সেই সময়ে ওই সেতুতে অনেকে দাঁড়িয়ে ছিলেন। প্রাণে বাঁচতে কয়েক জন সেতুর রেলিং ধরে ঝুলে পরিত্রাণ পান। তবে রাজকুমার সাহা নামে আহিরীটোলা ফেরিঘাটের এক কর্মী হাত ফস্কে গিয়ে পড়েন জলে। তাঁর পা জলের নীচে সেতুর রেলিংয়ের সঙ্গে আটকে যায়। ঘাটে কর্তব্যরত পুলিশকর্মীরা রাজকুমারকে উদ্ধার করে মানিকতলা ইএসআই হাসপাতালে ভর্তি করান। চিকিৎসকেরা জানান, রাজকুমারের বাঁ গোড়ালি ভেঙে পায়ের ভিতরের দিকে ঢুকে গিয়েছে। রাজকুমার হাসপাতালে শুয়ে বলেন, ‘‘এমন ঘটনা আগে দেখিনি। সেতুটি যে ও ভাবে খুলে যেতে পারে মাথাতেই আসেনি। গোড়ালিটা আর হয়তো থাকবে না।’’

রিভার ট্র্যাফিক পুলিশ সূত্রে খবর, রবিবার ১১টা ১২ মিনিট নাগাদ জোয়ার আসার কথা ছিল। সেই মতো গঙ্গার ঘাটগুলিতে সতর্কতা জারি করা হয়। মাইকেও সতর্কবার্তা দেওয়া হয়। ওই সময়ে ফেরি চলাচলও বন্ধ ছিল। বন্দর কর্তৃপক্ষের থেকে লিজ়ে আহিরীটোলা ঘাটের ফেরি চলাচল করানো সংস্থার অধিকর্তা দেবশ্রী দাশগুপ্ত জানান, ডিসেম্বরেই সরকারের দেওয়া ওই সেতুটি জেটি এবং পাড়ের সংযোগস্থলে বসানো হয়েছিল। পাড়ের কাছে লোহার কাঠামোর সঙ্গে সেতুটি কয়েকটি নাট-বল্টু দিয়ে জোড়া ছিল। দেবশ্রীর দাবি, ‘‘সেতুতে কোনও সমস্যা নেই। বিশেষজ্ঞেরা দেখে ছাড়পত্র দিয়েছিলেন। নাট-বল্টুগুলোয় হয়তো সমস্যা হয়েছে। জল হঠাৎ বেড়ে যাওয়ায় সেতুটিকে নীচ থেকে উপরের দিকে ভাসিয়ে তুলেছে। তাতেই হয়তো নাটবল্টুগুলি খুলে গিয়েছে।’’

পুলিশের দাবি, প্রতিদিন গঙ্গার ফেরিঘাটগুলি দিয়ে অন্তত ৫০ হাজার মানুষ পারাপার করেন। এ দিনও ভোর সাড়ে পাঁচটায় ফেরি চলাচল শুরু হয়েছিল। দুর্ঘটনার পরেই অবশ্য এ দিন বিকেল থেকে সেতুটিকে নিজের জায়গায় ফিরিয়ে আনার কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। দেবশ্রীর কথায়, ‘‘রাতের জোয়ারের আগেই কাজ শেষ করতে হবে। নয়তো জলে পড়ে থাকা সেতুর অংশটিও ভেসে যেতে পারে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Sudden Tide Injury
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE