প্রতীকী ছবি।
তিন বছর ধরে তাকে হন্যে হয়ে খুঁজছিল তামিলনাড়ুর পুলিশ। কিন্তু সেই দুষ্কৃতী এস সেন্ডিল চন্দ্রন দিব্যি গা-ঢাকা দিয়ে ছিল এ রাজ্যে। বন্দর এলাকা থেকে অস্ত্র-সহ সেন্ডিলকে পাকড়াও করার পরে এমনই জেনেছে পুলিশ। সেই সঙ্গে বন্দর এলাকার অস্ত্র কারবারিদের সঙ্গে তামিলনাড়ুর অপরাধ জগতের যোগাযোগের সূত্রও হাতে এসেছে বলে পুলিশের দাবি।
কলকাতা পুলিশ সূত্রের খবর, চেন্নাই পুলিশ রাজ্যের তদন্তকারীদের জানিয়েছে, সেন্ডিল তামিলনাড়ুর ‘সুপারি কিলার’। তার বাড়ি ওই রাজ্যের রামনাথপুরম জেলার মানালুরে। সেই রাজ্যের রাজনৈতিক সংঘর্ষেও তার যোগ রয়েছে। জমি কারবারেও মাফিয়া সে। চেন্নাইয়ে ২০১৪ সালে একই দিনে গিঞ্জি এবং উতিরামেরু এলাকায় দু’টি খুন করে সে। চেন্নাইয়ের কোয়েম্বাদু এলাকায় ফের এক ব্যক্তিকে গুলি করে মারে সেন্ডিল। তার পরেই গা ঢাকা দেয়।
সেন্ডিলকে জেরা করে জানা গিয়েছে, বছরখানেক ধরে চেন্নাই থেকে পালিয়ে সে প্রথমে হাওড়া এবং পরে কলকাতার বিভিন্ন হোটেলে আশ্রয় নেয়। এ রাজ্যে বসবাসকারী দক্ষিণী লোকজনের সঙ্গে মেলামেশা করত সে। ফলে চট করে লোকের নজরে আসত না। এখানে থাকতে থাকতেই বন্দর এলাকার অস্ত্র মাফিয়াদের সঙ্গে যোগাযোগ গড়ে ওঠে। পুলিশ জানিয়েছে, তামিলনাড়ুর একটি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত সে। সামনেই সেখানে ভোট। পুলিশের কাছে ধৃতের দাবি, তার সঙ্গে ওই রাজনৈতিক দলের নিয়মিত যোগাযোগ রয়েছে। সামনে ভোট থাকায় অস্ত্রের প্রয়োজন। তাই এখান থেকে অস্ত্র পাচার করত সে। সেই উদ্দেশ্যেই মঙ্গলবার রাতে বন্দর এলাকায় অস্ত্র কিনতে ঢোকে সেন্ডিল। সে সময়ে একটি সিঙ্গল শটার-সহ পশ্চিম বন্দর থানার হাতে ধরা পড়ে সে। তদন্তকারীদের দাবি, এর আগেও বন্দর এলাকা থেকে দক্ষিণ ভারতে অস্ত্র পাচার করেছে এই সুপারি কিলার। অন্য দিকে, তামিলনাড়ু পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। তারা সেন্ডিলকে জেরা করতে শহরে আসবে বলে পুলিশ সূত্রের খবর।
বন্দর এলাকায় মাস কয়েক আগেই একাধিক অস্ত্র ভাণ্ডারের হদিস পেয়েছিল পুলিশ। সেই সূত্রেই ভিন্ রাজ্যের সঙ্গে যোগাযোগের কথা জানা গিয়েছিল। পুলিশের দাবি, সেন্ডিলের গ্রেফতার সেই যোগসাজশের পিছনে আরও জোরালো প্রমাণ জোগাচ্ছে। বন্দর এলাকায় অস্ত্র কত সহজলভ্য, তা-ও প্রমাণ করছে সেন্ডিলের মতো ভিন্ রাজ্যের দাগি অপরাধীদের আনাগোনা। এই দক্ষিণী সুপারি কিলার আপাতত পশ্চিম বন্দর থানার হেফাজতে। তাকে জেরা করে যে বিভিন্ন ডেরার খোঁজ মিলেছে, সেখানে ইতিমধ্যেই তল্লাশি শুরু হয়েছে। ভিন্ রাজ্যের আর কোন কোন দুষ্কৃতী এ ভাবে গা-ঢাকা দিয়ে রয়েছে, সে ব্যাপারেও খোঁজ চলছে। তদন্তকারী অফিসারদের দাবি, ধৃত দুষ্কৃতী জেরায় পুলিশের সঙ্গে অসহযোগিতা করছে। তামিল ছাড়া অন্য কোনও ভাষায় কথা বলতে চাইছে না সে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy