ট্যাক্সি নেই। হাওড়ায় প্রি-পেড কাউন্টারের সামনে ভিড়। — নিজস্ব চিত্র।
ফের ট্যাক্সি ধর্মঘট। ফের ভোগান্তি। সোমবার এআইটিইউসির ডাকা ট্যাক্সি ধর্মঘটে ফের যাত্রী হয়রানির চেনা ছবি ফিরে এল হাওড়া ও শিয়ালদহ স্টেশন চত্বরে। প্রি-পেড ট্যাক্সি বুথে দীর্ঘ অপেক্ষার পরেও ট্যাক্সির দেখা মেলেনি দুই স্টেশনেই। দেখা মেলেনি সরকারি বাসেরও। ফলে দিনভর নাজেহাল হন ট্রেন যাত্রীরা। তবে এরই মধ্যে দেখা মিলেছে ওলা, উবের ও কিছু এসি ট্যাক্সির।
মুর্শিদাবাদ থেকে সপরিবার কলকাতায় ডাক্তার দেখাতে এসেছিলেন সুপ্তি দাস। শিয়ালদহ স্টেশনে দাঁড়িয়ে তাঁর মন্তব্য, ‘‘এ শহরে কে কখন ধর্মঘট ডাকে, বোঝা দায়! মানুষের কথা কবে যে রাজনৈতিক দলগুলি বুঝবে জানি না?’’ অবশেষে ট্রাফিক পুলিশের সাহায্যে একটি এসি ট্যাক্সিতে চড়ে রওনা দেন তিনি।
একই অবস্থা আসানসোল থেকে আলিপুরে ডাক্তার দেখাতে আসা শুভ্রা ভট্টাচার্যেরও। বহুক্ষণ দাঁড়ানোর পরে একটি ট্যাক্সির বন্দোবস্ত হলেও ডাক্তারের সঙ্গে দেখা হওয়ার সময় ততক্ষণে পেরিয়ে গিয়েছে। ডায়মন্ড হারবার থেকে শিয়ালদহ এসে ট্যাক্সি ধরে বিমানবন্দরে যাওয়ার কথা ছিল অংশু হালদারের। বিমানের সময় পেরিয়ে যাওয়ার আশঙ্কায় স্ত্রী-পুত্রকে এক জায়গায় দাঁড় করিয়ে পাগলের মতো ছোটাছুটি করছিলেন তিনি। শেষ পর্যন্ত একটা প্রাইভেট গাড়ি বেশি ভাড়ায় যেতে রাজি হওয়ায় তিনি হাঁফ ছেড়ে বাঁচেন। তবে যাত্রীদের একাংশ জানান, শিয়ালদহ রেল পুলিশ এ দিন অনেক ক্ষেত্রেই স্টেশনে যাত্রী নামাতে আসা ওলা, উবের বা এসি ট্যাক্সি ধরিয়ে দিয়েছেন অপেক্ষমান যাত্রীদের।
এ দিন সকাল থেকেই যাত্রী হয়রানির একই ছবি হাওড়া স্টেশন চত্বরেও। পুলিশ জানিয়েছে, সকাল ৮টা পর্যন্ত স্টেশন চত্বরে বেশ কিছু ট্যাক্সি দেখা গেলেও বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তারা উধাও হয়ে যায়। সরকারি বাসও ছিল নামমাত্র।
জামশেদপুর থেকে স্ত্রীকে ডাক্তার দেখাতে এসে ট্যাক্সি না পেয়ে সমস্যায় পড়ে গিয়েছিলেন সুজয় সাক্সেনা। তিনি বলেন, ‘‘আচমকা ধর্মঘট ডেকে মানুষকে কষ্ট দিয়ে কী লাভ হয় বলুন তো? এ সব দিনে সরকারি বাসের ব্যবস্থা থাকে না কেন?’’ সুজয়বাবুকে অবশেষে বেশি ভাড়া দিয়ে প্রাইভেট গাড়ি ভাড়া করে যেতে হয়।
তৃণমূলের প্রোগ্রেসিভ ট্যাক্সিমেন্স ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক প্রবীর দাস মহাপাত্র বলেন, ‘‘এটা ঠিকই সকাল ৮টার পর থেকে হাওড়ায় ট্যাক্সির সংখ্যা কমে গিয়েছিল। ওই সময় প্রি-পেড ট্যাক্সি স্ট্যান্ড থেকে কিছু সরকারি বাস চালানো হয়। তবে দুপুরের পর ট্যাক্সি আসা যাওয়ার সংখ্যা অনেকটাই বেড়ে গিয়েছিল।’’ প্রবীরবাবুর দাবি, প্রতি দিন যেখানে সাত-আট হাজার ট্যাক্সি চলে সেখানে রাত ৮টা পর্যন্ত প্রায় তিন হাজার ট্যাক্সি প্রি-পেড বুথ থেকে ছেড়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy