নিমজ্জিত: ভাসছে সেই ট্যাক্সি। উদ্ধারের চেষ্টায় চালক (চিহ্নিত)। সোমবার। নিজস্ব চিত্র
আক্ষরিক অর্থেই এ যেন ট্যাক্সির গঙ্গাস্নান!
আস্ত একটি ট্যাক্সি গঙ্গায় ভেসে যাচ্ছে। শুধু দেখা যাচ্ছে মাথার ‘ট্যাক্সি’ লেখা অংশটুকু। মাঝগঙ্গায় খালি গায়ে ট্যাক্সির ‘বনেট’ ধরে হাউহাউ করে কেঁদে চলেছেন এক ব্যক্তি। তা দেখে গঙ্গার পাড়ে জমতে থাকে স্থানীয়দের ভিড়।
সোমবার সকালে এমনই দৃশ্য দেখা গিয়েছে নিমতলা শ্মশান সংলগ্ন এলাকায়। বাস্তবেই গঙ্গায় তলিয়ে গিয়েছিল একটি ট্যাক্সি। সেটি বাঁচাতেই বনেট ধরে কেঁদে ফেলেছিলেন চালক।
পুলিশ সূত্রের খবর, সাত সকালে গঙ্গার ধারে শৌচকর্ম সারতে গিয়েছিলেন ট্যাক্সিচালক সন্তোষকুমার যাদব। আদতে বিহারের বাসিন্দা সন্তোষ কলকাতার ফুলবাগানে থাকেন। এ দিন স্ট্র্যান্ড ব্যাঙ্ক রোড ধরে ফিরছিলেন তিনি। নিমতলা শ্মশানের কাছে এসে প্রাতঃকৃত্য সারার জন্য ট্যাক্সি দাঁড় করানোর প্রয়োজন পড়েছিল তাঁর। শ্মশান সংলগ্ন ব্যস্ত রাস্তায় ট্যাক্সি দাঁড় করালে ট্র্যাফিক পুলিশ ধরতে পারে। তাই তিনি ট্যাক্সি নিয়েই গঙ্গার পাড়ে নামেন। ট্যাক্সিটি পশ্চিম দিকে মুখ করে দাঁড় করিয়েই তিনি যান গঙ্গার ধারে। কিন্তু তখন যে জোয়ারের সময়, জানতেন না সন্তোষ। হঠাৎ কয়েক মিনিট পরে তিনি দেখেন, হু হু করে পাড়ের দিকে জল উঠছে। একটু একটু করে ডুবতে শুরু করেছে তাঁর ট্যাক্সি!
আরও পড়ুন: বিরোধী তালুকে জেলা পরিষদকে কাজের নিদান
তিনি দৌ়ড়ন ট্যাক্সি ধরতে। কিন্তু জোয়ারের টান ভয়ঙ্কর। ফলে কোনও ভাবেই ট্যাক্সি তুলতে পারেননি। শেষে মরিয়া হয়ে চিৎকার শুরু করেন সন্তোষ। জমে যায় ভিড়। ছুটে আসেন শ্মশান লাগোয়া উত্তর বন্দর থানার কিয়স্কে থাকা পুলিশকর্মীরা। কিন্তু এ তো আর মানুষ নয় যে গঙ্গায় ঝাঁপ দিয়ে টেনে তুলবেন। ফলে খবর যায় থানায়। থানা থেকে খবর দেওয়া হয় জোড়াবাগান ট্র্যাফিক গার্ডে। সেখান থেকে ‘রেকার’ এনে শুরু হয় ট্যাক্সি উদ্ধারের কাজ। কোনওমতে রেকার দিয়ে আটকে টেনে তোলা হয় ট্যাক্সি। এক ঘণ্টার মাথায় জলে ডোবা ট্যাক্সি পারে আসতেই সন্তোষকুমারের হাসি দেখে হেসে ফেলেন পুলিশকর্মীরাও।
তবে এই প্রথম নয়। পুলিশ জানায়, মাস দুই আগে সর্বমঙ্গলা ঘাটের কাছেও একই ভাবে গঙ্গায় ভেসে গিয়েছিল একটি ছোট মালবাহী গাড়ি। সে বার পাড়ে থাকা লোকজন আর উত্তর বন্দর থানার পুলিশকর্মীরা একই ভাবে উদ্ধার করেন গাড়িটি। তবে সে সময়ে চালক মত্ত অবস্থায় গাড়ি দাঁড় করিয়ে ঘুমিয়ে পড়েছিলেন। আর সোমবার চালক পুলিশের ভয়ে গঙ্গার পাড়ে ট্যাক্সি নামিয়ে নিজে জলে নেমেছিলেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy