পাশে: ক্যান্টিনে চলছে দুপুরের খাওয়া। নিজস্ব চিত্র
যেখানে স্কুলে মিড-ডে মিল নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগে জেরবার রাজ্য সরকার, সেখানে অন্য এক দৃষ্টান্ত স্থাপন করল বেহালার একটি কলেজ। ওই কলেজের শিক্ষিকারা নিজের বেতনের একাংশ থেকে স্নাতক স্তরের কয়েক জন ছাত্রীদের জন্য মিড-ডে মিল চালু করেছেন। শুধু তাই নয়, দুঃস্থ ও দূর থেকে কলেজে আসা ছাত্রীদের জন্য এই ব্যবস্থা তিন বছর ধরে করে আসছেন তাঁরা।
কলেজের অধ্যক্ষা সোমা ভট্টাচার্য জানান, স্নাতকে তিনটি বর্ষে মোট ৫০ জনকে মিড-ডে মিল দেওয়া হয়। যে সব ছাত্রীর পরিবারের বার্ষিক আয় এক লক্ষ টাকার কম এবং যাঁরা অনেকটা দূর থেকে কলেজে আসেন তাঁদের বাছাই করে এই সুবিধা দেওয়া হয়। ছুটির দিন বাদে প্রতিদিন এই ব্যবস্থা থাকে বলে জানান সোমাদেবী। যখন যে ছাত্রীর ক্লাস থাকে না, তখন তিনি ক্যান্টিন থেকে সই করে খাবার নেন। প্রতিদিন থালায় ভাত-ডাল তো থাকেই, সঙ্গে এক দিন অন্তর সয়াবিন ও ডিমের ঝোল দেওয়া হয়। মিড-ডে মিলের জন্য রাখা হয়েছে এক জন রাঁধুনিও। প্রতিদিনের আনাজ কিনে আনেন কলেজের কর্মীরাই। মাসে এই খাতে খরচ হয় ১৮-২০ হাজার টাকা, যার পুরোটাই বহন করেন শিক্ষিকাদের একাংশ। বেহালা চৌরাস্তার বিবেকানন্দ কলেজ ফর উইমেন-এর শিক্ষিকাদের উদ্যোগে এই মিড-ডে মিল ব্যবস্থা প্রশংসনীয় বলেই মনে করছেন অন্যান্য কলেজের অধ্যক্ষরা।
কলেজ সূত্রে খবর, ফলতা, বজবজ, পূজালি, আমতলা-সহ বিভিন্ন এলাকা থেকে ছাত্রীরা কলেজে পড়তে আসেন। সকাল ন’টা থেকে কিছু ক্লাস শুরু হয়। ওই সময়ে ক্লাসে আসতে দূরের ছাত্রীদের বাড়ি থেকে বেরোতে হয় অনেক সকালে। ফলে খাবারের সমস্যা থেকেই যায়। ওই ছাত্রীদের পাশে দাঁড়াতেই এই প্রচেষ্টা। তিনি বলেন, ‘‘ছাত্রীদের সমস্যার কথা শোনার পরেই এই সিদ্ধান্ত হয়। আমরা সকলে চেষ্টা করি, ছাত্রীরা যেন পড়াশোনায় মনোযোগী হয়।’’
শুধু ওই কলেজই নয়, পড়ুয়াদের পাশে দাঁড়াতে পদক্ষেপ করেছে লেডি ব্রেবোর্ন কলেজও। বিবেকানন্দ কলেজের পদক্ষেপের প্রশংসা করে অধ্যক্ষা শিউলি সরকার বলেন, ‘‘আমাদের কলেজে একটি প্রিন্সিপাল ওয়েলফেয়ার ফান্ড রয়েছে যেখানে প্রতি মাসে শিক্ষিকাদের ন্যূনতম একশো টাকা দিতেই হবে। দুঃস্থ ছাত্রীর চিকিৎসা বা তার পঠনপাঠনের দায়িত্ব নেওয়া হয় ওই টাকা থেকে।’’
এ ভাবে পড়ুয়াদের পাশে কলেজ কর্তৃপক্ষ থাকলে ভবিষ্যৎ অনেক সুগম হয় বলে মনে করছে শিক্ষামহল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy