Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪

নিখোঁজ রোগীর দেহ হাসপাতালেরই ঝোপে

নিখোঁজ হওয়া রোগীর দেহ মিলল হাসপাতালেরই ঝোপ থেকে। ঘটনাটি ঘটেছে মঙ্গলবার সকালে বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে। পুলিশ জানিয়েছে, মৃত রোগীর নাম আশিস পিপলাই (৪৫)। তাঁর বাড়ি বেলেঘাটার ত্রিকোণ পার্কের কাছে।

আশিস পিপলাই

আশিস পিপলাই

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ২১ নভেম্বর ২০১৮ ০০:০০
Share: Save:

নিখোঁজ হওয়া রোগীর দেহ মিলল হাসপাতালেরই ঝোপ থেকে। ঘটনাটি ঘটেছে মঙ্গলবার সকালে বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে। পুলিশ জানিয়েছে, মৃত রোগীর নাম আশিস পিপলাই (৪৫)। তাঁর বাড়ি বেলেঘাটার ত্রিকোণ পার্কের কাছে।

হাসপাতাল সূত্রের খবর, গত বৃহস্পতিবার থেকে তিনি ওই হাসপাতালের জিবি-থ্রি ওয়ার্ডের দোতলায় ভর্তি ছিলেন। সোমবার দুপুর থেকে তিনি নিখোঁজ হন। মঙ্গলবার সকালে ওই ওয়ার্ডেরই কাছের ঝোপে দেহটি পড়ে থাকতে দেখেন হাসপাতালের কর্মীরা। হাসপাতালে ভর্তি হওয়া রোগী কী ভাবে নিরাপত্তারক্ষীদের নজর এড়িয়ে বেরিয়ে গেলেন? এর ফলে রোগীর পরিবার প্রশ্ন তুলেছে, হাসপাতালের নিরাপত্তা নিয়ে।

পরিবার সূত্রের খবর, গত বৃহস্পতিবার বমি ও পেট ব্যথা নিয়ে ওই হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন আশিসবাবু। এক আত্মীয়া সরস্বতী দাস সোমবার দুপুরে খাবার দিতে হাসপাতালে যান। সরস্বতীদেবী বলেন, ‘‘গিয়ে দেখি, উনি বেডে নেই। আমি নার্সদের জিজ্ঞেস করায় তাঁরা বলেন, একটু আগেই ছিলেন, কিছু ক্ষণ ধরে তাঁকে দেখতে পাওয়া যাচ্ছে না। এর পরে হাসপাতালে তন্নতন্ন করে খুঁজেও না পেয়ে রাতে বেলেঘাটা থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করি। সকালে হাসপাতাল থেকে খবর পেয়ে গিয়ে দেখি ওঁকে।’’

নির্জন যে জায়গাতে দেহটি পড়েছিল, তার কাছেই জিবি-থ্রি ওয়ার্ডের চারতলা বাড়ি। হাসপাতাল সূত্রের খবর, সকাল ন’টা নাগাদ ঝোপ পরিষ্কার করতে আসেন কয়েক জন সাফাইকর্মী। তাঁরাই দেহটি পড়ে থাকতে দেখেন।

তদন্তকারীরা জানান, আশিসবাবুর শরীরের বিভিন্ন জায়গায় ছড়ে যাওয়ার দাগ রয়েছে। পড়ে গেলে যেমন আঘাত লাগে, সে রকম আঘাতের চিহ্ন রয়েছে মৃতের মাথার পিছনে। ফলে ওই ভবনের ছাদ বা জানলা থেকে রোগী ঝাঁপ মেরেছেন কি না সে দিকটাও ভাবাচ্ছে তদন্তকারীদের। এ দিন ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, ওই ভবনের সব তলেরই জানলা বন্ধ এবং সেখানে লোহার গ্রিল লাগানো রয়েছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানান, ছাদে সব সময়ে চাবি দেওয়া থাকে। ফলে রোগীর ছাদে ওঠার প্রশ্নই নেই। তবে তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, ময়না-তদন্তের রিপোর্ট পেলে মৃত্যুর কারণ স্পষ্ট হবে।

হাসপাতালের সুপার তথা ভাইস প্রিন্সিপ্যাল তুতুল চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ঘটনাটা শোনার পরেই আমাদের নিরাপত্তারক্ষী হাসপাতাল চত্বরে ওঁকে খোঁজেন। কোথাও পাওয়া যায়নি। ওই ওয়ার্ডের ছাদে সব সময়ে চাবি দেওয়া থেকে। তাই কোনও রোগীর পক্ষে ছাদে ওঠা সম্ভব নয়। হাসপাতালের ওই ওয়ার্ডে সিসি ক্যামেরা লাগানো আছে। পুলিশকে তার ফুটেজ দেওয়া হয়েছে। তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।’’

আশিসবাবু বৈদ্যুতিন সরঞ্জাম কেনাবেচার ব্যবসা করতেন। তাঁর দুই ছেলে অভিষেক ও অনুরাগ। আশিসবাবুর স্ত্রী রাখী পিপলাই বলেন, ‘‘আমার স্বামী সুস্থ হয়ে উঠেছিলেন। সোমবারই বাড়ি ফেরার কথা ছিল। ছুটি হওয়ার দিনেই সবার চোখের আড়ালে কী ভাবে বেরিয়ে গেলেন? হাসপাতালের নিরাপত্তার গাফিলতির কারণেই এমন ঘটল। সঠিক তদন্ত হোক।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Absconding patient Beleghata ID Hospital Murder
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE