Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

ধোপদুরস্ত পোশাকে দিনে চুরি, মেকানিকের কাজ রাতে

বিকেলে এলাকায় ফিরে ওই দোকান খুলে সারাই করত মোবাইল আর ল্যাপটপ।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২০ মার্চ ২০১৯ ০১:৩৫
Share: Save:

দিনে চুরি। রাতে মোবাইল ও ল্যাপটপ মেরামতি।

সার্ভে পার্কের একটি চুরির ঘটনায় ধৃত দুষ্কৃতীর এটাই ছিল রোজনামচা। গত সপ্তাহে লালবাজারের গোয়েন্দারা গ্রেফতার করেন চঞ্চল দে নামে ওই দুষ্কৃতীকে। তার বাড়ি বাঁশদ্রোণীতে। তদন্তকারীদের দাবি, জেরায় চঞ্চল জানিয়েছে, বাঁশদ্রোণীতে তার একটি মোবাইল এবং ল্যাপটপ সারাইয়ের দোকান রয়েছে। দিনের বেলায় সে পরিচ্ছন্ন পোশাকে যাদবপুর-সার্ভে পার্ক-সন্তোষপুর এলাকায় ঘুরে বেড়াত। ফাঁকা বাড়ি দেখলেই হানা দিত। দরজা বা জানলা ভেঙে ঢুকে মোবাইল, ল্যাপটপ থেকে শুরু করে সোনার গয়না নিয়ে চম্পট দিত নিমেষে। আর বিকেলে এলাকায় ফিরে ওই দোকান খুলে সারাই করত মোবাইল আর ল্যাপটপ।

সেই সব চোরাই মাল সাজিয়ে রেখে দিত বিক্রির জন্য। সোমবার বাঁশদ্রোণীর ওই দোকান থেকেই গোয়েন্দারা উদ্ধার করেন ১৩টি ল্যাপটপ, ৩টি ক্যামেরা এবং ক্যামেরার লেন্স।

গোয়েন্দারা জানান, সার্ভে পার্কের নস্করপাড়ার একটি বাড়ি থেকে কয়েক লক্ষ টাকার গয়না চুরির ঘটনায় চঞ্চলকে ধরা হয়েছিল ১২ মার্চ। তখন তার কাছে মিলেছিল চুরি যাওয়া সোনার গয়না। কিন্তু সেখানেই শেষ নয়। তদন্তকারীরা জানান, টানা জেরায় ভেঙে পড়ে চঞ্চল জানায়, বাঁশদ্রোণীর রেনিয়ায় তার একটি দোকান রয়েছে। সে দিনে চুরি করে রাতে দোকান খুলে মোবাইল সারাইয়ের কাজ করত। যাতে কারও কোনও রকম সন্দেহ না হয়।

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

সূত্রের খবর, যাদবপুর ও সার্ভে পার্ক এলাকা থেকে গত দু’মাসে ওই সব জিনিসপত্র চুরি করেছিল চঞ্চল। সেগুলি রেখেছিল দোকানে। এরই মধ্যে সে নস্করপাড়ার বাড়ি থেকে গয়না চুরি করে। সেগুলি বন্ধক রেখে মোটা টাকা পায়। যার ফলে আগে চুরি করা ক্যামেরা বা ল্যাপটপ বিক্রি করেনি সে। রেখে দিয়েছিল ভবিষ্যতের সঞ্চয় হিসেবে।

কী ভাবে ওই দুষ্কৃতীর খোঁজ পেলেন তদন্তকারীরা?

লালবাজার সূত্রের খবর, দক্ষিণ শহরতলির ওই সব এলাকায় সম্প্রতি পরপর কয়েকটি চুরির ঘটনা ঘটেছিল। সেগুলির তদন্তে নেমে গোয়েন্দারা বিভিন্ন এলাকার

উপরে নজরদারি শুরু করেন। তাতেই সোর্স মারফত তাঁরা জানতে পারেন, বাঁশদ্রোণীর রেনিয়ার বাসিন্দা চঞ্চলের আচার-ব্যবহার এবং দৈনিক জীবনযাপনে খানিকটা বদল ঘটেছে। পুরনো বাড়ি থাকা সত্ত্বেও সে বেশি টাকায় বাড়ি ভাড়া নিয়ে থাকছে। ওই খবর কানে যেতেই চঞ্চলের উপরে নজর রাখতে শুরু করেন অফিসারেরা। এক গোয়েন্দা-কর্তা বলেন,‘‘তাতেই হয় কেল্লাফতে। গ্রেফতার হয় চঞ্চল। প্রথমে সোনার গয়না এবং পরে তার দোকান থেকে উদ্ধার হয় ল্যাপটপ ও ক্যামেরা।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE