Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
protest

পথ বদলে ‘পলায়ন’, বলল জমায়েত

৪টে নাগাদ প্রধানমন্ত্রী কলকাতার দিকে চলে যেতেই বিক্ষোভকারীরা ভিআইপি রোড ও যশোর রোড অবরোধ করতে নেমে পড়েন।

প্রতিবাদ: শনিবার কৈখালিতে বিক্ষোভ-অবস্থান। ছবি: স্নেহাশিস ভট্টাচার্য

প্রতিবাদ: শনিবার কৈখালিতে বিক্ষোভ-অবস্থান। ছবি: স্নেহাশিস ভট্টাচার্য

কাজল গুপ্ত
শেষ আপডেট: ১২ জানুয়ারি ২০২০ ০৩:২৭
Share: Save:

যাত্রাপথের রদবদল হওয়ায় প্রধানমন্ত্রীর সামনে সরাসরি বিক্ষোভ যে দেখানো যাবে না, সে খবর জেনে গিয়েছিলেন তাঁরা। তা সত্ত্বেও নিজেদের কর্মসূচিতেই অনড় থাকলেন বিক্ষোভকারীরা। শনিবার বিমানবন্দর সংলগ্ন চিনার পার্ক, কৈখালি ও এক নম্বর গেটে প্রায় দু’ঘণ্টা ধরে বিক্ষোভ ও পথ অবরোধে শামিল হলেন কয়েক হাজার মানুষ। পুলিশ অবরোধ তুলতে গেলে তাদের সঙ্গে ধস্তাধস্তিও হয় অবরোধকারীদের। ক্ষুব্ধ জনতা এক সময়ে রাজ্যপালের কনভয় আটকানোর চেষ্টাও করে। তাঁকে দেখানো হয় কালো পতাকা। এ দিন এই বিক্ষোভের জেরে বহুক্ষণ অবরুদ্ধ হয়ে থাকে যশোর রোড ও ভিআইপি রোড। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে সন্ধ্যা হয়ে যায়।

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এ দিন বিমানবন্দর থেকে হেলিকপ্টারে কলকাতায় আসেন। তবু হাল ছাড়েননি বিক্ষোভকারীরা। অসংখ্য মানুষ যোগ দিয়েছিলেন বিক্ষোভ অবস্থানে। ‘গো ব্যাক’, ‘নো এনআরসি’ স্লোগানে মুখরিত হচ্ছিল রাজপথ। কেউ মাথায় কালো ফেট্টি পরে, কেউ কালো পতাকা, কালো রঙের গ্যাস বেলুন নিয়ে হাজির হয়েছিলেন। আট থেকে আশি— ছিলেন সবাই। ওই বিক্ষোভ থেকেই বিজেপি ও তৃণমূলকে একসঙ্গে কাঠগড়ায় তুললেন বাম-কংগ্রেস নেতারা।

বিকেল সাড়ে ৩টে পর্যন্ত যান চলাচল স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা করেছিল পুলিশ। ৪টে নাগাদ প্রধানমন্ত্রী কলকাতার দিকে চলে যেতেই বিক্ষোভকারীরা ভিআইপি রোড ও যশোর রোড অবরোধ করতে নেমে পড়েন। স্থানীয় বাসিন্দারা প্রশ্ন তোলেন, বিমানবন্দরের বাইরে বিক্ষোভ দেখিয়ে কী লাভ হল? বিক্ষোভকারীদের দাবি, তাঁদের ভয়ে প্রধানমন্ত্রীর যাত্রাপথ বদল করা হল। এটা কার্যত মোদীর ‘পলায়ন’। বিক্ষোভে ছিলেন খড়দহের প্রবীণ বাসিন্দা তপন বসু। তাঁর কথায়, ‘‘মানুষ যে নতুন নাগরিকত্ব আইন মানতে নারাজ, সেই বার্তাটা স্পষ্ট ভাবে পৌঁছে দেওয়াটা দরকার ছিল।’’

আরও পড়ুন: প্রতিবাদে ‘বন্ধু’ অসম আর কলকাতা

গড়িয়ার বাসিন্দা, কলেজপড়ুয়া সীমা মুখোপাধ্যায়ের মতে, এই যাত্রাপথের বদল তাঁদের নৈতিক জয়। দমদমের রিকশাচালক শ্যামল মণ্ডল বললেন, ‘‘নতুন আইনে কী হবে কে জানে? অনেকেরই তো আগের কাগজ নেই। সংসার নিয়ে তাঁরা কোথায় যাবেন?’’ তাঁর কথায়, ‘‘এটা বুঝেছি যে, বিপদ আমার একার নয়, সকলের।’’

অবরোধকারীরা এ দিন বিমানবন্দরের এক নম্বর গেটের কাছে যশোর রোড ও ভিআইপি রোডের সংযোগস্থলে অবরোধ করতে গেলে পুলিশ বাধা দেয়। শুরু হয় ধস্তাধস্তি। কৈখালি মোড়েও অবরোধ শুরু হয়। সে সময়ে রাজ্যপালের কনভয় কলকাতার দিকে ফিরছিল। এনআরসি-বিরোধী যুক্তমঞ্চের কর্মকর্তা প্রসেনজিৎ বসু জানান, তাঁরা রাজ্যপালের কনভয় আটকে কালো পতাকা দেখান। পুলিশ অবরোধকারীদের সরিয়ে দেওয়ার পরে তাঁর কনভয় বেরিয়ে যায়। অবরোধ হয় চিনার পার্কেও।

বিকেল সওয়া চারটের পরে ধীরে ধীরে অবরোধ উঠতে শুরু করে। আন্দোলনকারীদের অভিযোগ, শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভেও পুলিশ বাধা দিয়েছে, মহিলাদের ধাক্কাধাক্কি করেছে। পুলিশ অবশ্য অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Kolkata Protest Kolkata Airport Narendra Modi
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE