স্বাধীনতা দিবসের কুচকাওয়াজের মহড়া।—নিজস্ব চিত্র।
সাম্বিয়া-কাণ্ড থেকে শিক্ষা নিয়ে এ বার স্বাধীনতা দিবসের কুচকাওয়াজের মহড়ায় নিরাপত্তা আরও আঁটোসাঁটো করল কলকাতা পুলিশ।
গত ১৩ জানুয়ারি ভোরে প্রজাতন্ত্র দিবসের কুচকাওয়াজের মহড়া চলাকালীন পুলিশের তিনটি গার্ডরেল ভেঙে ঢুকে পড়ে প্রাক্তন বিধায়ক মহম্মদ সোহরাবের ছেলে সাম্বিয়ার গাড়ি। পুলিশি বাধায় এগোতে না পেরে রোড রোডের জে কে আইল্যান্ড থেকে ইউ টার্ন নিয়ে পালানোর পথে ওই বেপরোয়া গাড়ি পিষে দেয় বায়ুসেনার কর্পোরাল অভিমন্যু গৌড়কে। এর পরেই রেড রোডে কুচকাওয়াজের মহড়ায় নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিল সেনাবাহিনীর একাংশ। তাই এ বার স্বাধীনতা দিবসের কুচকাওয়াজের মহড়ায় অংশগ্রহণকারীদের নিরাপত্তা জোরদার করতে রেড রোড সংলগ্ন রাস্তাগুলিতে ত্রিস্তরীয় ব্যারিকেড করা হবে বলে লালবাজার জানিয়েছে।
পুলিশ সূত্রে খবর, আজ শনিবার সকাল থেকে রেড রোডে শুরু হচ্ছে স্বাধীনতা দিবসের কুচকাওয়াজের মহড়া। চলবে ১৩ অগস্ট পর্যন্ত। এতে অংশ নেবেন কলকাতা পুলিশ ও রাজ্য সশস্ত্র পুলিশের বিভিন্ন বাহিনীর কর্মী এবং দমকল-সহ সরকারের বিভিন্ন বিভাগের কর্মচারীরা।
পুলিশ জানিয়েছে, সাম্বিয়া-কাণ্ডের পরেই আশির দশক থেকে চলে আসা কুচকাওয়াজের মহড়ার নিরাপত্তা ব্যবস্থা ভেঙে তা ঢেলে সাজা হয়। প্রজাতন্ত্র দিবসের আগেই নতুন করে পুলিশি নিরাপত্তা বলয় তৈরি করে লালবাজার। এক পুলিশকর্তা বলেন, ‘‘রেড রোডের ওই ঘটনার পরেই কুচকাওয়াজের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নতুন করে তৈরি করেছিলাম। স্বাধীনতা দিবসের কুচকাওয়াজের মহড়ায় তা বলবৎ থাকবে।’’
স্বাধীনতা দিবসের কুচকাওয়াজের মহড়ায় পুলিশকর্মীরা।—নিজস্ব চিত্র।
লালবাজার সূত্রে খবর, প্রথমে গার্ডরেল, দ্বিতীয় ধাপে কাঠ ও বাঁশ দিয়ে তৈরি ‘সিজার ব্যারিকেড’ এবং শেষ ধাপে পুলিশের গাড়ি আড়াআড়ি ভাবে রাখা হবে, যাতে অবাঞ্ছিত কোনও যানবাহন না ঢুকতে পারে। মহড়া শুরুর দু’ঘণ্টা আগেই রেড রোড সংলগ্ন রাস্তাগুলির সংযোগস্থলে ওই ব্যারিকেড তৈরি করে দেওয়া হবে। লালবাজার জানিয়েছে, কুচকাওয়াজের মহড়ার নিরাপত্তাকে ভাগ করা হয়েছে দু’টি সেক্টরে। বিভাগীয় ডেপুটি কমিশনার (ডিসি) ছাড়া ব্যাটালিয়ানের এক জন করে ডেপুটি কমিশনার রোজ থাকবেন মহড়ার নিরাপত্তার দেখভালের জন্য। প্রতি সেক্টরের দায়িত্বে থাকবেন এক জন সহকারী কমিশনারও (এসি)। এ ছাড়া, সাত জন ইনস্পেক্টরের দায়িত্বে মহড়ার গোটা এলাকাটিকে ৩০টি পয়েন্টে ভাগ করা হয়েছে। প্রতিটির দায়িত্বে থাকবেন এক জন সাব-ইনস্পেক্টর বা সার্জেন্ট পদ মর্যাদার অফিসার। তাঁদের অধীনে থাকবেন প্রায় আড়াইশো পুলিশকর্মী। যাঁদের বেশির ভাগের হাতে থাকবে স্বয়ংক্রিয় রাইফেল, মেশিন কার্বাইন ও সেল্ফ লোডেড রাইফেল। আপৎকালীন ব্যবস্থার জন্য মোতায়েন করা হবে কম্যান্ডো প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কমব্যাট ব্যাটালিয়নের পুলিশকর্মীদেরও। থাকবেন কমব্যাট ব্যাটালিয়নের ডিসি-ও। ডেপুটি কমিশনার ছাড়াও তিন জন যুগ্ম কমিশনার নিরাপত্তা ব্যবস্থার তত্ত্বাবধান করবেন বলে লালবাজার সূত্রে জানানো হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy