তাণ্ডব: কসবার ক্লাবঘরে চলছে ভাঙচুর। সোমবার। নিজস্ব চিত্র
তৃণমূলের সিন্ডিকেট-সংঘর্ষ এ বার খাস কলকাতায়। রবিবার রাত থেকে সোমবার সকাল পর্যন্ত দফায় দফায় দুই গোষ্ঠীর মধ্যে মারপিট, একটি ক্লাব গুঁড়িয়ে দেওয়া, এমনকী গুলি চালানোর অভিযোগও উঠল। ঘটনাস্থল, কসবার প্রান্তিকপল্লি। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এ দিন সকাল থেকে এলাকায় পুলিশ ও র্যাফ মোতায়েন করা হয়েছে।
অভিযোগ, বিবদমান দু’টি গোষ্ঠীই স্থানীয় তৃণমূল কাউন্সিলরের ঘনিষ্ঠ। বিবাদের কারণ, ইমারতি দ্রব্য সরবরাহ নিয়ে মতবিরোধ। যদিও সংশ্লিষ্ট কাউন্সিলর সুশান্ত ঘোষ বিষয়টি ‘বাচ্চা ছেলেদের মদ খেয়ে মারামারি’ বলে সহজ করতে চেয়েছেন। তবে সোমবার ওই এলাকায় ঘুরে সিন্ডিকেট সংঘাতের তথ্যই সামনে এসেছে।
পুলিশ সূত্রের খবর, ঘটনার সূত্রপাত রবিবার রাত দু’টো নাগাদ। প্রান্তিকপল্লির খাল পাড়ে এক মাস আগে একটি ক্লাব তৈরি করেছেন বিনোদ যাদব ওরফে বিনু ও তাঁর দলবল। এলাকায় তৃণমূলকর্মী বলেই পরিচিত তিনি। ইমারতি দ্রব্য সরবরাহের ব্যবসা করেন বিনু। ওই রাতে ক্লাবে তিনি মদের আসর বসিয়েছিলেন। পুলিশের একটি সূত্রের খবর, বিনুর বিরুদ্ধ গোষ্ঠী স্থানীয় তৃণমূলকর্মী প্রভাস অধিকারী তাঁর দল নিয়ে হাজির হন। অভিযোগ, এলাকায় মহিলাদের উত্যক্ত করছেন বিনু ও তাঁর সঙ্গীরা। এ নিয়ে প্রভাস ও বিনুর দলবল বচসায় জড়িয়ে যায়। অভিযোগ, বচসার সময়ে প্রভাসকে ইট দিয়ে মেরে মাথা ফাটিয়ে দেওয়া হয়। রাতে প্রভাসকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পুলিশের দাবি, বিনু পলাতক। স্থানীয়দের বক্তব্য, প্রভাস আপাতত এলাকায় বিনুর থেকে দলে ভারী। সেই কারণেই ফের সোমবার সকালে তাঁর দলবল বিনুর ক্লাবে হামলা চালিয়ে ভেঙে দেয়। এলাকায় দাপট দেখাতে কয়েক রাউন্ড গুলিও ছোড়া হয়েছে বলে তাঁদের অভিযোগ।
স্থানীয়দের বক্তব্য, মহিলাদের বিরক্ত করার অভিযোগটি অছিলা মাত্র। তাঁদের দাবি, এলাকায় ইমারতি দ্রব্য সরবরাহের ব্যবসা নিয়ে দুই গোষ্ঠীর পুরনো বিবাদের জেরেই দু’পক্ষের সংর্ঘষ। ওই এলাকায় বহু আবাসন-সহ নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে। প্রভাস ও বিনু দু’জনেই ওই এলাকায় ইমারতি দ্রব্য সরবরাহ করেন। সম্প্রতি ওই এলাকায় সিন্ডিকেট ব্যবসার এলাকার দখল নিতেই দু’পক্ষের মধ্যে মাঝে মধ্যেই গোলমাল শুরু হয়েছে। ঘটনায় আশিস এবং শঙ্কর নামে বিনুর দলের দু’জন গ্রেফতার হয়েছে। স্থানীয় কাউন্সিলর সুশান্ত ঘোষ, প্রভাস এবং বিনু দুজনকেই তাঁর পরিচিত বলে স্বীকার করলেও সংর্ঘষের কারণ হিসেবে বলেছেন, ‘‘কয়েক জন বাচ্চা ছেলে মদ খেয়ে মারামারি করেছে। তা ছাড়া কিছুই নয়।’’ সুশান্তবাবুর দাবি, ঘটনায় প্রশাসন আইনানুগ ব্যবস্থা নিয়েছে। তিনি কোনও হস্তক্ষেপ করেননি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy