হাতে রেক নেই। কিন্তু ক্রমাগত বাড়ছে যাত্রীর চাপ। পরিস্থিতি সামাল দিতে এ বার তাই ঘুরপথে আয় বাড়ানোর কথা ভাবছেন মেট্রো কর্তৃপক্ষ। তারই প্রাথমিক ধাপ হিসেবে সেই ঘুরপথেই রেকের সংখ্যা বাড়াতে চলেছেন তাঁরা। রেল সূত্রের খবর, দমদম থেকে কবি সুভাষগামী মেট্রোর সংখ্যা কমতে পারে। সেই উপরি রেক দিয়ে বাড়বে দমদম ও মহানায়ক উত্তমকুমারের (টালিগঞ্জ) মধ্যে মেট্রোর সংখ্যা। যদিও এই পরিকল্পনার কার্যকারিতা নিয়ে সন্দিহান মেট্রোর আধিকারিকদের একাংশই। যাত্রীদেরও অনেকে অভিযোগ তুলছেন, নিজেদের ঘাটতি ঢাকতে পরিষেবায় কোপ বসাচ্ছে মেট্রো।
কলকাতার পরিবহণ ব্যবস্থাকে চাঙ্গা করা এবং নগরোন্নয়নের সুবিধা শহরতলির এলাকায় পৌঁছে দিতেই ধাপে ধাপে মেট্রো রুটকে সম্প্রসারিত করা হয়েছিল। ২০১০ সালে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রেলমন্ত্রী থাকাকালীন সম্প্রসারিত হয়েছিল মেট্রোর যাত্রাপথ। এখন দমদম থেকে ২৭৪টি মেট্রো কবি সুভাষ পর্যন্ত যায়। মেট্রো কর্তাদের একাংশ বলছেন, দিনের বেশির ভাগ সময় দমদম থেকে টালিগঞ্জ—এই পথে যাত্রীর চাপ বেশি থাকে। কিন্তু টালিগঞ্জ থেকে কবি সুভাষের মধ্যে যাত্রী তেমন মেলে না। তাই দমদম থেকে কবি সুভাষ পর্যন্ত চলা মেট্রোর সংখ্যা ২৬টি কমানো হতে পারে। ওই ২৬টি ট্রেন চলবে দমদম ও টালিগঞ্জের মধ্যে। এই পরিকল্পনাকে মাথায় রেখে টালিগঞ্জ স্টেশনে তৃতীয় প্ল্যাটফর্মও তৈরি করা হয়েছে। পুজোর আগেই এই নতুন ব্যবস্থা চালু করা যায় কি না, তা নিয়েও ভাবনা-চিন্তা চলছে।
নিত্যযাত্রীদের অনেকেরই অবশ্য বক্তব্য, মেট্রোর যাত্রাপথে কম হলেও টালিগঞ্জ থেকে কবি সুভাষ (নিউ গড়িয়া) পর্যন্ত যাত্রী সংখ্যা একেবারেই থাকে না, তা নয়। তা ছাড়া, টালিগঞ্জ থেকে নিউ গড়িয়া স্টেশনের দূরত্ব এমন কিছু কম নয়। বাস, ট্যাক্সি বা অটোয় গেলে খরচ ও ঝক্কি বেশি। ফলে ট্রেনের সংখ্যা কমালে ওই যাত্রীরা অসুবিধায় পড়বেন। পরিষেবা দিতে কেন মেট্রো নতুন রেক আনছে না, সে প্রশ্নও তুলেছেন যাত্রীদের অনেকে।
রেলের খবর, এই নতুন পরিকল্পনা নিয়ে ক্ষোভ রয়েছে মেট্রোর অন্দরেও। সে কারণে এখনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে পারছেন না মেট্রো কর্তারা। মেট্রোর মুখপাত্র ইন্দ্রাণী বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আমরা সব দিক নিয়েই আলোচনা করছি। কবে থেকে এই পরিকল্পনা কার্যকর হবে, ক’টি ট্রেন চলবে, কত মিনিট অন্তর চালানো হবে— তা এখনও ঠিক হয়নি।’’
মেট্রো কর্তাদের যুক্তি, দিনের সব সময়েই কবি সুভাষ পর্যন্ত মেট্রো বন্ধ করা হচ্ছে না। দিনের একটি নির্দিষ্ট সময়ের কথা ভাবা হয়েছে। সমীক্ষা করে দেখা গিয়েছে, ওই সময়ে টালিগঞ্জ থেকে কবি সুভাষ পর্যন্ত যাত্রী সংখ্যা একেবারেই কম থাকে। বরং সেই সময়ে টালিগ়ঞ্জ পর্যন্ত মেট্রোর সংখ্যা বাড়ালে অনেক বেশি সংখ্যক যাত্রী উপকৃত হবেন। মেট্রোর আয়ও বাড়বে।
মেট্রো রেলের এক কর্তার ব্যাখ্যা, কবি সুভাষ স্টেশনের ‘ওয়াই’ সাইডিংয়ে একটি রেক ঘোরাতে সময় লাগে সাড়ে ৬ মিনিট। কিন্তু টালিগঞ্জ থেকে মেট্রো ঘোরালে রেক পিছু সময় বাঁচবে আড়াই মিনিট। তার উপরে যাত্রাপথের দৈর্ঘ্য কমায় সময়ের ব্যবধান ঘুচবে। এখন অফিস টাইমে দু’টি ট্রেনের মধ্যে সময়ের ব্যবধান ৫ মিনিট। নতুন সিদ্ধান্তে এটা ৪ মিনিটও করা যেতে পারে বলে মনে করছেন মেট্রো কর্তারা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy