Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪
East-West Metro Project

ইস্ট-ওয়েস্টের গঙ্গা স্পর্শ কাল

দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান হল। আজ রাত পেরোলেই গঙ্গা ছোঁবে মেট্রো! কাল, শুক্রবারই ইস্ট-ওয়েস্টের সুড়ঙ্গ পৌঁছে যাবে গঙ্গার নীচে। এই ঐতিহাসিক মুহূর্তকে স্মরণীয় করে রাখতে বুধবার থেকেই শুরু হয়েছে নানা আয়োজন।

জল-উঁচু: প্রস্তুতি চূড়ান্ত। এই পথেই গঙ্গার নীচে ঢুকবে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর সুড়ঙ্গ। ছবি: দীপঙ্কর মজুমদার

জল-উঁচু: প্রস্তুতি চূড়ান্ত। এই পথেই গঙ্গার নীচে ঢুকবে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর সুড়ঙ্গ। ছবি: দীপঙ্কর মজুমদার

দেবাশিস দাশ
শেষ আপডেট: ১৩ এপ্রিল ২০১৭ ০১:২৩
Share: Save:

দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান হল। আজ রাত পেরোলেই গঙ্গা ছোঁবে মেট্রো!

কাল, শুক্রবারই ইস্ট-ওয়েস্টের সুড়ঙ্গ পৌঁছে যাবে গঙ্গার নীচে। এই ঐতিহাসিক মুহূর্তকে স্মরণীয় করে রাখতে বুধবার থেকেই শুরু হয়েছে নানা আয়োজন।

রামকৃষ্ণপুর ঘাটে গঙ্গা পুজো থেকে শুরু করে সুড়ঙ্গের ভিতর মাটি কেটে গঙ্গার নীচে প্রবেশ করার দৃশ্যের সরাসরি টিভিতে সম্প্রচার করা— সবই আয়োজন করছে কলকাতা মেট্টো রেল কর্পোরেশন লিমিটেড বা কেএমআরসিএলের অধীনস্থ ঠিকাদার সংস্থা অ্যাফকনস্।

এই আয়োজনের রেশ পৌঁছে গিয়েছে প্রায় ৭০ ফুট নীচে সুড়ঙ্গের ভিতর কর্মরত ইঞ্জিনিয়ার ও কর্মীদের মধ্যে। হাওড়া ময়দানের যে জায়গা দিয়ে সুড়ঙ্গের নীচে নামা যায়, সেখানে বসছে এলসিডি টিভি।

সুড়ঙ্গে নামার পরে সঙ্গী টানেল বিশেষজ্ঞ ইঞ্জিনিয়ার সাকেত বিহারী বললেন, ‘‘এত দিন মাটির নীচে অনেক জায়গায় টানেলের কাজ করেছি। কিন্তু এ বার নদীর নীচে বিশেষ করে গঙ্গার নীচে টানেল তৈরি করার কাজ শুরু হচ্ছে। সকলেই উত্তেজিত।’’

ওই ইঞ্জিনিয়ার আরও জানিয়েছেন, নদীর নীচে যে কংক্রিটের স্ল্যাব দেওয়া হবে, তা বিশেষ ভাবে তৈরি করা হয়েছে। মাটির নীচে বসানো স্ল্যাবের থেকে তা আলাদা। নদীর নীচে সুড়ঙ্গ কাটার সময়ে নিরাপত্তার জন্য সমস্ত রকম ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

কোনও ভাবে যদি সুড়ঙ্গে জল ঢোকে, সে জন্য প্রস্তুত রাখা হচ্ছে কয়েকটি শক্তিশালী পাম্প। চলবে ক্লোজ্‌ড সার্কিট ক্যামেরার মাধ্যমে সারাক্ষণ নজরদারিও।

আরও পড়ুন: রিজ-কাণ্ডে প্রশ্ন চার্জশিট নিয়ে

কলকাতা মেট্রো রেল কর্পোরেশন লিমিটেড-এর সূত্রে জানানো হয়েছে, গঙ্গার প্রায় ৯০ ফুট নীচ দিয়ে তৈরি হবে দীর্ঘ ৫২০ মিটার সুড়ঙ্গ। এই কাজের জন্য টানেল বোরিং মেশিন বা টিবিএম বারবার পরিষ্কার করা হয়েছে।

কেএমআরসিএলের চিফ ইঞ্জিনিয়ার বিশ্বনাথ দেওয়ানজি বলেন, ‘‘গঙ্গার নীচে শক্ত পলিমাটি কাটতে হবে টিবিএম দিয়ে। মাটি কাটার সময়ে মেশিনের সামনে যে চাপ তৈরি হবে, তা বায়ুমণ্ডলের চাপের তিন গুণ। তাই সব কিছু পরীক্ষা করে নিয়েই আমরা কাজ শুরু করছি। কারণ সুড়ঙ্গের কাজে কখন কী হবে, বলা যায় না।’’

৫২০ মিটার দীর্ঘ ওই সুড়ঙ্গের নীচে বিশাল টিবিএম মেশিনের উপরে দাঁড়িয়ে এ দিন সঙ্গী ইঞ্জিনিয়ারেরা জানালেন, কেলভিন কোর্ট, বঙ্কিম সেতু, হাওড়া স্টেশন, ডিভিশনাল রেলওয়ে ম্যানেজারের অফিস পেরিয়ে আমরা পৌঁছে গিয়েছি হাওড়া স্টেশনের উল্টো দিকে গঙ্গার পাড়ে পোস্ট অফিসের নীচে।

এখান থেকে গঙ্গার নীচ দিয়ে সুড়ঙ্গ গিয়ে পৌঁছবে ও পারে আর্মেনিয়ান ঘাটের কাছে। কাজ করতে সময় লাগবে প্রায় আড়াই মাস। কিন্তু এই আড়াই মাস গঙ্গার তলায় থাকার চাপ নেবেন কী ভাবে টিবিএমে কাজ করা বিশেষ ভাবে প্রশিক্ষিত ইঞ্জিনিয়ার ও কর্মীরা?

টিবিএমের উপরে দাঁড়িয়েই নীতেশকুমার, শচীন কামরোজরা জানালেন, মাটির তলার সুড়ঙ্গের কাজ করতে করতে তাঁদের অভ্যাস হয়ে গিয়েছে ঠিকই। তবে নদীর নীচে কাজ এই প্রথম। তাই একটু উদ্বেগ থাকছেই। তবে গঙ্গা মাকে প্রণাম করেই তাঁরা এই আড়াই মাস কাজ চালাবেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

East-West Metro Project Ganga
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE