Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪

বাংলাদেশি যুবককে টাকা দিয়ে সাহায্য ট্র্যাফিক সার্জেন্টের

ওই যুবক সার্জেন্টকে জানান, হঠাৎ বন্ধুর শারীরিক অবস্থা খারাপ হওয়ায় বৃহস্পতিবার রাতে তাঁকে বাইপাসের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করাতে হয় ডায়ালিসিসের জন্য। রবিবার সেখান থেকে বন্ধুকে ছাড়িয়ে এনে বাংলাদেশ ফেরার কথা তাঁদের।

কলকাতার ট্র্যাফিক পুলিশ। ফাইল চিত্র।

কলকাতার ট্র্যাফিক পুলিশ। ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ২৯ অক্টোবর ২০১৮ ০৩:১৫
Share: Save:

বাংলাদেশ থেকে আসা রোগীকে টাকা দিয়ে সাহায্য করলেন কলকাতা পুলিশের এক ট্র্যাফিক সার্জেন্ট।রবিবার সকালে বাইপাসের একটি বেসরকারি হাসপাতালের কাছে বছর তেইশের এক যুবককে অনেক ক্ষণ ফোন নিয়ে চিৎকার করতে শুনেছিলেন এলাকায় কর্তব্যরত দক্ষিণ-পূর্ব ট্র্যাফিক গার্ডের সার্জেন্ট গৌতম গুহ। প্রথমে কিছু বুঝতে পারেননি তিনি। পরে সেই যুবকই কিয়স্কের কাছে এসে জানান, তাঁর নাম সাদ্দাম আরেসেন। বাংলাদেশের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র তিনি। কৌসর হোসেন নামে এক বন্ধুকে নিয়ে এ শহরে এসেছিলেন চিকিৎসার জন্য। বন্ধুর কিডনিতে সমস্যা ধরা পড়েছে। কিডনি ট্র্যান্সপ্লান্টের প্রয়োজন। কিন্তু এখন অত টাকা না নিয়ে আসায় চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে বৃহস্পতিবারই বাংলাদেশে ফিরে যাওয়ার কথা ছিল তাঁদের। কিন্তু বন্ধু হঠাৎ আরও অসুস্থ হয়ে পড়ায় বিপদে পড়েছেন তিনি।

ওই যুবক সার্জেন্টকে জানান, হঠাৎ বন্ধুর শারীরিক অবস্থা খারাপ হওয়ায় বৃহস্পতিবার রাতে তাঁকে বাইপাসের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করাতে হয় ডায়ালিসিসের জন্য। রবিবার সেখান থেকে বন্ধুকে ছাড়িয়ে এনে বাংলাদেশ ফেরার কথা তাঁদের। কিন্তু তিনি জানতেন না যে রবিবার এ শহরে কোনও মানি এক্সচেঞ্জের জায়গা খোলা থাকে না। এ দিকে হাসপাতালে বিল বেড়ে চলেছে, হাতেও ডলারের অঙ্ক খুব বেশি নেই। আর তাতেই বিপদে পড়ে হাসপাতালের বাইরে বেরিয়ে ফোন করে বিভিন্ন জনের সঙ্গে কথা বলছিলেন ডলার বদলে টাকা পাওয়ার জন্য।

কোনও উপায় না বেরোনোয় শেষে পুলিশের কিয়স্ক দেখে এগিয়ে যান সাদ্দাম। দেখা মেলে গৌতম গুহের সঙ্গে। সব শুনে গৌতমবাবু নিজের পরিচিত মানি এক্সচেঞ্জের এজেন্সিতে ফোন করেন। কিন্তু ছুটির দিন হওয়ায় কোনও ব্যবস্থা হয়নি। গৌতমবাবু বলেন, ‘‘ছেলেটিকে জিজ্ঞাসা করে জানতে পারি, তাঁর আট হাজার মতো টাকা দরকার।’’ যুবকের থেকে সার্জেন্ট জানতে পারেন, এ দিনই তাঁদের বাংলাদেশ ফিরে যেতে হবে। সন্ধ্যা ৬টার আগেই পেট্রাপোল না পৌঁছলে আর সীমান্ত পেরোতে পারবেন না।

শেষে নিজেই ওই যুবককে ৮ হাজার টাকা দিয়ে দেন গৌতমবাবু। তিনি বলেন, ‘‘ওঁরা কিছু ডলারের বিনিময়ে ওই টাকাটা চেয়েছিলেন। ওঁদের তখনই টাকাটা না দিলে সমস্যায় পড়তেন বলে দিয়েছি।’’ গৌতমবাবুর এই সাহায্যের কথা জানিয়ে এ দিন নিজের ফেসবুকেও ধন্যবাদ জানিয়েছেন সাদ্দাম।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Kolkata Police Traffic Sergeant Money
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE