অভিযুক্ত লরিচালক। নিজস্ব চিত্র
রান্না-বান্না, খাওয়া-দাওয়া, ঘুম আর আড্ডা। সোমবার বৃষ্টির সকালে এই মৌতাতেই মজে ছিলেন এক লরিচালক। তবে নিজের লরি নয়, আড্ডার জায়গা হিসেবে বেছে নিয়েছিলেন অন্য আরেকটি লরিকে। বন্ধুবান্ধবের সঙ্গে যখন তিনি আড্ডায় মশগুল, ঠিক তখনই দেখা গেল বেনজির যানজট।
সোমবার ঠিক কী হয়েছিল বেলঘরিয়া এক্সপ্রেসওয়েতে?
দুর্গানগরের বাসিন্দা রাণা গঙ্গোপাধ্যায় জানান, তাঁর বাড়ি থেকে আড়াই নম্বর এয়ারপোর্ট গেট পর্যন্ত ৬ কিলোমিটার রাস্তা শেষ পর্যন্ত তিনি হেঁটে যেত বাধ্য হন। আরেক নিত্যযাত্রী শুভশ্রী ঘোষও জানান, রোজকার ১৫ মিনিটের রাস্তা যেতে এ দিন তাঁর লেগেছে দুঘন্টা। একে বৃষ্টি, তার ওপর এই যানজটে চরম ভোগান্তিতে পড়েন বহু নিত্যযাত্রীই। বেলঘরিয়া এক্সপ্রেসওয়ে-র এয়ারপোর্টমুখী রাস্তাতেই জ্যাম ছিল বেশি। সেই জ্যাম মালঞ্চ থেকে শুরু হয়ে দক্ষিণেশ্বর ছাড়িয়ে যায়। সকাল সাতটা থেকে এগারোটা পর্যন্ত চলে এই যান-যন্ত্রণা।
তবে কী কারণে এই জ্যাম, তা জানা যাচ্ছিল না। সরেজমিনে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে আসরে নামে দমদম থানার পুলিশ। দেখা যায়, মালঞ্চের কাছে দাঁড়িয়ে থাকা একটি লরির কারণেই বিপত্তি। কিন্তু অনেক হাঁকডাকের পরও লরিচালকের কোনও খোঁজ মেলেনি। লরিটি ছিল বালিতে বোঝাই, তাই সেটিকে পুলিশের পক্ষে সরানোও সম্ভব হচ্ছিল না। এদিকে ক্রমশই বাড়তে থাকে যানজট।
আরও পড়ুন:মেডিক্যালে উঠল অনশন, ১৪ দিন পর দাবি মানলেন কর্তৃপক্ষ
পরিস্থিতি বেগতিক দেখে শেষপর্যন্ত লরির গায়ে লেখা মালিকের নম্বরে ফোন করেন পুলিশ কর্তারা। পরিস্থিতির গুরুত্ব বুঝে মালিক ফোন করেন লরির চালককে। এরপরই ঘটনাস্থলে হাজির হন পুরো ঘটনার মূল পাণ্ডা। পুলিশি জেরার মুখে তিনি জানান, রাত দুটোয় এক্সপ্রেসওয়েতে গাড়ি পার্ক করার পর তিনি নিজের লরি ছেড়ে চলে যান অন্য লরিতে। সেখানেই তিনি ব্যস্ত ছিলেন রান্না-বান্না, খাওয়া-দাওয়া ও ঘুমে।
পার্ক করা অন্য গাড়িগুলি নিজেদের গন্তব্যে রওনা দিলেও তার গাড়ি তাই ঠায় দাঁড়িয়ে ছিল রাস্তার মাঝে। ফলে এয়ারপোর্টমুখী রাস্তা বন্ধ হয়ে যায়। যানজট শুরু সেই কারণেই। সব জানার পর অভিযুক্ত লরির চালককে আটক করেছে পুলিশ। লরিটি সরিয়ে নেওয়ার পর বেলঘরিয়া এক্সপ্রেসেও পরিস্থিতি ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হয়ে আসে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy